ফাল্গুনের মতো ঢাকার চলচ্চিত্রে সম্ভাবনার সুবাতাস বইছে। গেল বছর ‘লিডার’, ‘জ্বীন’ দিয়ে দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে দর্শক আসা শুরু হয়েছিল। দর্শকদের হলে ফেরার সেই আমেজটা জনস্রোতে রূপ নেয় ‘প্রিয়তমা’ ও ‘সুড়ঙ্গ’ দুই ছবি দিয়ে। এমনকি বিশ্ববাজার থেকেও প্রিয়তমা ও সুড়ঙ্গ সাফল্য এনেছে।
এরপর থেকে একাধিক লগ্নিকারক দিগুণ উৎসাহে ছবি বানাচ্ছেন। নতুন বছরেও ছবি মুক্তি পাওয়া শুরু হচ্ছে। এ বছর চলচ্চিত্র মুক্তির খাতা খুলছে সাইমন সাদিক অভিনীত ‘শেষ বাজি’ ছবির মাধ্যমে। তবে একইদিনে আমদানিতে মুক্তির কথা আছে মোশাররফ করিমের কলকাতার ছবি ‘হুব্বা’।
দেশিয় ছবি হিসেবে ১৯ জানুয়ারি (শুক্রবার) সিনেমা হলগুলোতে মেহেদী হাসান পরিচালিত ‘শেষ বাজি’ মুক্তি পাচ্ছে। সাইমন জানান, তার ক্যারিয়ার ১৪ বছরের। এতোগুলো বছরে তার ২৬টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু এই প্রথম ‘শেষ বাজি’র মাধ্যমে ফর্মুলার বাইরের ছবি করলেন বলে জানালেন।
সাইমনের ভাষ্য, এ ছবিতে রোম্যান্টিক দৃশ্য, প্রেম ভালোবাসার গান বা সংলাপ নেই। যারা অভিনয় করেছেন চরিত্র অভিনেতা হিসেবে করেছেন।
ছবি মুক্তির দিন ঘনিয়েও এলেও চোখে পড়ার মতো প্রচারণা নেই! সংশ্লিষ্টদের কথা, দেশের মানুষের নজর ছিল জাতীয় নির্বাচনের দিকে। নির্বাচন শেষ এবার সিনেমার প্রচারণা শুরু হবে। তবে নিজের সিনেমার প্রচারণার ব্যাপারে সাইমন বরাবরই সচেতন থাকলেও প্রযোজকদের কাছ থেকে সেই সহযোগিতা পান না।
কিশোরগঞ্জ থেকে চ্যানেল আই অনলাইনের সাথে এমনটা বলছিলেন ‘পোড়ামন’, ‘ব্ল্যাক মানি’ ছবিগুলোর নায়ক সাইমন সাদিক।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, সিনেমা শুরুর আগে অনেক প্ল্যান থাকে। কিন্তু মুক্তির সময় সব এলোমেলো হয়ে যায়। আমি আমার সিনেমাগুলো মুক্তির সময় নিজ থেকে প্রচারণা করি। এমনকি অন্যদের সিনেমা মুক্তি পেলেও আমি নিজে প্রচারণা করি। কিন্তু নিজ থেকে আর কতো কিছু করা যায়? দেখা যায়, আমি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করি, সিনেমা হলে গিয়ে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করি। কিন্তু এই কাজটি তো আমার একার নয়। এটা টিমওয়ার্ক।
সাইমন সাদিক মনে করেন, শিল্পের সঙ্গে সঙ্গে ফিল্ম একটি বাণিজ্য। আর মার্কেটিং ছাড়া বাণিজ্য সফল হয় না। এক্ষেত্রে প্রযোজক পরিচালকদের পেশাদারিত্ব কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোন হল পাচ্ছে কোথায় কী হচ্ছে প্রতিনিয়ত আমার খবর নিতে হয়। একজন অ্যাক্টর হিসেবে এটা কি আমার কাজ? ফিল্মে প্রযোজক একটি বড় পোস্ট ক্যারি করেন। সিনেমা মুক্তির আগে পেশাদারিত্বের জায়গায় থেকে প্রযোজককে অনেককিছু দেখতে হয়।
‘আমাদের সিনেমায় টাকা ঢালার মানুষ অনেক আছেন, কিন্তু প্রযোজক কজন আছেন?’ এমন মন্তব্য করে পোড়ামনের এই নায়ক বলেন, “অনেকের কোটি কোটি টাকা আছে কিন্তু টাকা থাকলেই যে প্রযোজক হওয়া যাবে এমনটা কিন্তু ঠিক নয়। টাকার সঙ্গে শিল্পমনা এবং ফিল্ম মার্কেটিংগুলোও ঠিকভাবে জানতে হবে। যখন সিনেমা হাতে নেই তখন সবভাবে আশ্বস্ত করা হয়। বলা হয় সুইজারল্যান্ড, শুটিংয়ে গিয়ে দেখি বুড়িগঙ্গার তীর! এমন বিভিন্নভাবে ক্রাইসিসের মুখোমুখি হতে হয়।”
২০২৪-এ সাইমনের ইচ্ছে, তিনি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে চান। সাইমন যেমনটা বললেন, এখন ওটিটি’র জোয়ার। আধুনিক দর্শক ওটিটি কনটেন্ট পছন্দ করছেন। আমার কাছে সিনেমা সবচেয়ে বড় হলেও অনুভব করছি ওটিটি-তে কিছু কাজ করা দরকার। কারণ, সময়ের সঙ্গে থাকা উচিত।