চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী ছাত্র রাজনীতির ঐতিহ্য ধ্বংস করছে: হাইকোর্ট

কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার করে রাজনৈতিক দলের ইমেজ ও ছাত্র রাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস-ঐতিহ্য ধ্বংস করছে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রী ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় পাচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ও প্রভোস্ট সরানোর আদেশের সময় বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ দেন।

ছাত্র রাজনীতি যে প্রয়োজন তা আমরা ইতিহাস থেকে দেখেছি উল্লেখ করে এসময় হাইকোর্ট বলেন, ‘অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার করে দলের ইমেজ ও ছাত্র রাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস-ঐতিহ্য ধ্বংস করছে।’

র‍্যাগিংকে ফৌজদারি অপরাধ (ক্রিমিনাল অফেন্স) উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন করায় সুস্থ শিক্ষার পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।’

আজ হাইকোর্ট তার আদেশে ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে অভিযুক্ত পাচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে তাদের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার নির্দেশ দেন।

সেই সাথে ওই পাচ শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়। অভিযুক্ত যে পাচ শিক্ষার্থীর বিষয়ে এই নির্দেশনা দেয়া হয় তারা হলো- অন্তরা, তাবাসসুম, মীম, উর্মি ও মুয়াবিয়া। এছাড়া ঘটনাটি যে হলে ঘটে সেই হলের প্রভোস্টক প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন আদালত। অন্যদিকে ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরীকে তিন দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পছন্দের হলে সিট দিতে নির্দেশ দেয়া হয়।

সেই সাথে ফুলপরী ও ঘটনার তদন্তে যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এছাড়া ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনার ভিডিওটি আরেক শিক্ষার্থী হালিমার মোবাইল থেকে উদ্ধার করে সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আর এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৮ মে দিন ধার্য করে এই সময়ের মধ্যে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও রেজিস্ট্রারকে প্রতিবাদ প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ছিলেন গাজী মো. মোহসিন ও আসাদ উদ্দিন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। ওই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ইবির সাবেক শিক্ষার্থী গাজী মো. মহসীন। সে রিট শুনানির ধারাবাহিকতায় আদালতেরে নির্দেশে গঠিত জুডিসিয়াল কমিটি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে পাচ শিক্ষার্থী, হল প্রভোস্ট ও হাউজ টিউটোরদের দায়িত্ব অবহেলার বিষয় উঠে আসে। এসব বিষয় দেখে আজ আদেশ দেন হাইকোর্ট।