রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায় গ্যাসের সমস্যা দেখা দিয়েছে। চুলা জ্বালিয়ে টিপ টিপ করে কোনোরকম রান্না করে দিনযাপন করছেন বেশির এলাকার মানুষ। শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্যাসের সমস্যা তীব্র আকারে ধারণ করেছে, যার যাতাকলে পড়ে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।
ঢাকার মিরপুর, মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ কাঁঠালবাগান, কাঁটাবনসহ বেশিরভাগ জায়াগায় সকাল ৮টায় গ্যাস চলে গিয়ে রাত ৯টার পর আসে। সারাদিনে যে পরিমাণ চুলায় গ্যাস থাকে সেটি দিয়ে ডিম ভাজাও দুরূহ হয়ে উঠে। পরিবারের খাবার মেটাতে অনেকেই বাধ্য হয়ে চড়া মূল্যের সিলিন্ডার ব্যবহার করছেন।
রাজধানীর হাজারীবাগে এক বাসিন্দা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, শীতের এই দুই মাসে গ্যাসের চুলায় রান্না একেবারে করতে পারছি না, কিন্তু মাসে ঠিকই বিল দিতে হচ্ছে। ঠিক সময়ে বাচ্চাদের রান্না করে খাওয়াতে পারছেন না বলেও জানান তিনি।
কাঁটাবনে থাকেন মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, সকাল ৮টার পর থেকে গ্যাস একেবারেই চলে যায়। নিভু চুলায় পানি গরম করাটাই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে, সেখানে রান্না করা স্বপ্নের চেয়েও বেশি কিছু।
আগারগাঁওয়ে রায়হান প্রধানীয়া নামে এক বাসিন্দা বলেন, আগে সকালে গ্যাসের সংকট ছিল। এখন ছব্বিশ ঘণ্টাই গ্যাসের সংকট।
মোহাম্মদপুরে চাকুরি করা এক দম্পতি জানালেন, গ্যাস থাকে না বলে প্রায় খাবার তারা বাইরে থেকে এনে খান। শরীর অসুস্থতার পাশাপাশি তাদের টাকাও খরচ হচ্ছে প্রচুর।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, দেশে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। দিনে ৩০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া গেলে শিল্প– আবাসিকের চাহিদার অনেকখানি পূরণ করা সম্ভব হয়। একইসঙ্গে দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলোতেও উৎপাদন কমেছে। আমদানি বাড়ানো গেলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে।
অন্যদিকে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) মনে করে, জনগণকে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস না দিয়ে বিল বাড়ানোর প্রস্তাব অযৌক্তিক।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীবাসীর এমন নাকাল অবস্থা নিয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, গ্যাসের স্বল্পতা রয়েছে। বর্তমানে কিছু সংকটও রয়েছে। তবে এটা সাময়িক। আশা করছি, কয়েকদিনের মধ্যেই সংকট দূর হবে। গ্যাসের সরবরাহ বাড়বে।