চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘মুক্তিযুদ্ধের সময় তার এক একটি গান মেশিনগানের ভূমিকা পালন করেছে’

গাজী মাজহারুল আনোয়ারের স্মৃতিচারণায় মনির খান

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন কিংবদন্তী গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার। সেই সাথে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন সংগীত ভুবনের তারকারাও। তাদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মনির খান। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের এভাবে চলে যাওয়া কোনোভাবেই মানতে পারছেন না এ গায়ক।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার যুদ্ধ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, এক একটি সৃষ্টি বাংলাদেশের কঠিন সময়ে শক্তি জুগিয়েছে। সেই মুক্তিযুদ্ধের সময় তার এক একটি গান, মেশিনগানের ভূমিকা পালন করে যুদ্ধে অবদান রেখেছে। তার দেহের মৃত্যু হয়েছে, কর্মের মৃত্যু হবে না। এই বাংলাদেশ, এই মাটি ও মানুষ তাঁকে আজীবন মনে রাখবে।’

স্মৃতিচারণ করে মনির খান আরও বলেন, ‘মৃত্যুর আগে তার ছোট্ট একটি ইচ্ছা ছিল। তিনি কপিরাইট অফিসে গিয়েছিলেন। তার প্রায় ২০ হাজারের বেশি গান আছে। তার যত গান ও লেখা আছে, সব কপিরাইটের মাধ্যমে অধিকারটুকু ফিরে পেতে চেয়েছিলেন। একটি গান যখন জনপ্রিয় হয়, বিভিন্ন ভাবে তা অনেকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এটা নিয়ে তার ভেতরে দুঃখ ছিল। অসুস্থ অবস্থাতেও তিনি কপিরাইট অফিসে গিয়েছিলেন।’

শিল্পী জানান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার তাকে ব্যক্তিগতভাবে বলেছিলেন,‘আমি যদি নাও থাকি, তুমি একটু দৌড়ঝাঁপ করে কপিরাইটের ব্যবস্থা করো। যেন আমার গানগুলো শুনে পরবর্তী প্রজন্ম বলতে পারে, ‘এটা দাদার সৃষ্টি’ বা ‘নানার সৃষ্টি’।’

শহীদ মিনার থেকে দুপুর সাড়ে ১২টায় বিএফডিসিতে নেওয়া হবে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে। সেখানে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। চ্যানেল আই ভবনে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা। এরপর গুলশানের আজাদ মসজিদে তৃতীয় নামাজে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার গত ৬০ বছরে ২০ হাজারের বেশি গান লিখেছিলেন। সংগীতে অসাধারণ অবদানের জন্য ২০০২ সালে তিনি একুশে পদক এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতা পদক লাভ করেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ৫ বার।