চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

শিখদের স্বাধীনভূমি ইস্যুতে কানাডা-ভারত সম্পর্কের অবনতি

KSRM

ভারতে শিখদের জন্য আলাদা আবাসভূমির আহ্বান নিয়ে কূটনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে। কিছু শিখ ভারতে একটি পৃথক স্বদেশ গঠনের জন্যও চাচ্ছে। কানাডায় নির্বাসিত শিখ নেতা হরদীপ সিং  নিহত হওয়ার পর নতুন করে আলোচনায় আসে শিখরাষ্ট্র নিয়ে।

মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শিখ নেতা হত্যার সাথে ভারত সরকার জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে কানাডা। এ ঘটনার জেরে অটোয়ায় ভারতের গোয়েন্দা বাহিনী র এর প্রধানকে বহিষ্কারও করেছে কানাডা।

Bkash July

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কানাডার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ভারত সরকার জানায়, ‘কানাডার কোনো সহিংস ঘটনায় ভারত সরকারের সম্পৃক্ততার অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।’

শিখ কারা এবং কোথায় বাস করে
শিখ ধর্ম বিশ্বের প্রধান ধর্মগুলোর মধ্যে একটি। ১৬ শ’ শতাব্দীতে পাঞ্জাব অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এটি। বিশ্বব্যাপী প্রায় ২৫ মিলিয়ন শিখ রয়েছে বলে জানা যায়।

Reneta June

শিখদের বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে বাস করে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার দুই শতাংশ। ভারতের বাইরে শিখদের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার আবাসস্থল কানাডা। দেশটিতে প্রায় সাত লাখ ৮০ হাজার শিখ অবস্থান করছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে এবং অস্ট্রেলিয়ায় শিখদের আবাসস্থল হিসেবে মনে করা হয়।

পৃথক রাষ্ট্র গঠন চাওয়ার কারণ
খালিস্তান আন্দোলন ভারতে শিখদের জন্য একটি স্বাধীন আবাসভূমির আহ্বান জানায়। ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে ১৯৮০-এর দশকে আন্দোলনটি তীব্র ছিল। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী আন্দোলনের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালানোর পর এটি ব্যর্থ হয়।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শ্রুতি কপিলার মতে, আধুনিক পাঞ্জাবের রাজনীতি আন্দোলন থেকে দূরে সরে গেছে এবং স্বাধীনতার আহ্বান বা সংগ্রামের জন্য যথেষ্ট সমর্থন এখন নেই। তবে শিখ প্রবাসী সমর্থকরা একটি পৃথক রাষ্ট্রের পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্বাধীনতার আহ্বান আরও তীব্র হয়েছে।

হরদীপ সিং নিজ্জার কে ছিলেন
হরদীপ সিং নিজ্জার একজন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন। তাকে ১৮ জুন কানাডার একটি শিখ মন্দিরের বাইরে ৪৫ বছর বয়সে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।

ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের জলন্ধরের ভার সিং পুরা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন হরদীপ সিং নিজ্জর। ওই গ্রামেই জন্ম তার। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে কানাডায় বসবাস করতেন তিনি। পাঞ্জাব থেকে ১৯৯৭ সালে তিনি কানাডায় পাড়ি জমান। সেখানে মিস্ত্রির কাজ করতেন।

ভারতের অভিযোগ, হরদীপ সিং খালিস্তান আন্দোলনের একজন নেতা। খালিস্তান আন্দোলনকারীরা ভারতের চোখে বিচ্ছিন্নতাবাদী। খালিস্তানিদের সংগঠন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত এবং কানাডা বরাবরই খালিস্তানিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে আসছে বলেও অভিযোগ দিল্লির।

খালিস্তান টাইগার ফোর্স (কেটিএফ) নামে একটি সংগঠন রয়েছে। ভারত একে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ মনে করে। ভারতের অভিযোগ, হরদীপ সিং কেটিএফের মূল পরিকল্পনাকারী। এছাড়া ভারতে নিষিদ্ধ শিখ ফর জাস্টিস (এসএফজে) নামে আরেকটি সংগঠনের সাথেও হরদীপ সিং যুক্ত ছিলেন বলে নয়াদিল্লির অভিযোগ।

২০২০ সালে ভারত সরকার হরদীপ সিংকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করে। দেশটির ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায়ও তার নাম ছিল। কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশে শিখ নেতা ছিলেন হরদীপ সিংয়ের পরিচিতি ছিল। ভারতের পাঞ্জাবে শিখদের স্বাধীন রাষ্ট্র খালিস্তানের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাতেন তিনি।

হরদীপ সিংয়ের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা ছিল। ২০০৭ সালে পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ছয়জন নিহত হন, আহত হন ৪০ জন। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় করা মামলার আসামি ছিলেন হরদীপ সিং। অভিযোগ রয়েছে, ২০০৯ সালে পাতিয়ালায় রাষ্ট্রীয় শিখ সঙ্গতের প্রেসিডেন্ট রুলদা সিংয়ের হত্যায়ও হরদীপ সিং জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

I Screen Ami k Tumi
Labaid
Bellow Post-Green View