চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

উগ্র জঙ্গিবাদ দমনে সফল শেখ হাসিনা

২০১৪ সালের নির্বাচনে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ সরকার । কিন্তু ওই সময়টা মসৃণ ছিল না। জঙ্গিবাদ ও নানা অঘটনে উত্তাপ ছিল সারাদেশ। জ্বালাও পোড়াও রাজনীতি শুরু করেছিল তৎকালীন বিরোধী দল বিএনপি-জামাতের দোসররা।

এভাবেই কেটেছিল অনেকদিন। সরকার একদিকে দেশ সামলানো ও জঙ্গিবাদের বিস্তার রোধ করা নিয়েই ব্যস্ত ছিল। এর কিছুদিন পরেই বাংলাদেশের ঘটে গেল বিভীষিকাময় এক ঘটনা। যা ছিল একেবারেই সিনেমাটিক। নির্মম এবং নৃশংস। এমন এক ঘটনা বাংলাদেশে ঘটবে কল্পনা করতে পারেননি কেউ। যে ঘটনায় বাঙালি জাতি পুরোটাই ছিল হতবাক এবং স্তম্ভিত। ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই বাঙালি জাতির ইতিহাসে তেমনই এক ঘটনা ঘটেছিল রাজধানীর বনানীতে। একেবারে সিনেমার মতোই জিম্মিদশা নাটক। আর এই ঘটনার নেপথ্য নায়ক ছিল সরকার বিরোধী রাজনৈতিক অপশক্তি। রাজধানীর বনানীতে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলায় কেঁপেছিল গোটা দেশ ও বিশ্ব।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ঢুকেই জঙ্গিরা জিম্মি করে ফেলে অবস্থানরত সবাইকে। জিম্মির এ ঘটনা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। ঘটনার ভয়াবহতা তখনো আঁচ করতে পারেনি কেউ। তবে প্রথম অভিযানেই যখন পুলিশের দুই কর্মকর্তা মারা যায় আর ২৫ পুলিশ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়, তখন বুঝতে বাকি ছিল না যে রাতটা কত ভয়াল হবে!

সত্য গল্পটা ছিল এমনই, রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরের ওয়েস্টিন হোটেলের পাশে দায়িত্ব পালন করছিলেন গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন। ওয়াকিটকিতে মেসেজ এলো, ‘হলি আর্টিজানে একদল সন্ত্রাসী ঢুকেছে’। সংবাদ শুনেই একজন কনস্টেবলের বাইকে চেপে ঘটনাস্থলে ছুটে গেলেন এসআই ফারুক।

হলি আর্টিজানের সীমানায় ঢুকে কিছু বুঝে ওঠার আগেই পায়ে গুলি লাগল তার। আহত হন তার সঙ্গে থাকা আরেক কনস্টেবল। ঘটনাস্থলে এসে এই দশা দেখে গুলশান থানায় সাহায্য চাইলেন গুলশান থানার আরেক পুলিশ কর্মকর্তা।

সেদিনের এই ভয়াবহ গল্পের শুরু এখান থেকেই। পরদিন ভোরে রক্তের গঙ্গাস্রোতে শেষ হয় সেই গল্প। দেখতে দেখতে হলি আর্টিজান হামলার ছয় বছর পূর্ণ হলো আজ। ছয় বছর হয়ে গেলেও বর্বর সেই হত্যাকাণ্ড এখনো মনে দাগ কাটে।

ভয়াবহ এ হামলায় নৃশংস হত্যাযজ্ঞ এবং প্রায় ১২ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস জিম্মি সংকটের ঘটনা স্তম্ভিত করেছিল পুরো জাতি, পুরো বিশ্বকে।
সেদিনের জঙ্গি হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ মোট ২২ জন নিহত হন। কয়েকবার প্রস্তুতি নিয়েও রাতে অভিযান চালায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাত দেড়টায় ইন্টারনেটে হামলাকারী পাঁচ তরুণের ছবি প্রকাশ করে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। ২ জুলাই সকাল আনুমানিক ৭টা ৪০ মিনিট। জিম্মিদের উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করার জন্য অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন। ১২ থেকে ১৩ মিনিটের মধ্যেই সব সন্ত্রাসীকে নির্মূল করে ওই এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে তারা।

পরে নিহত ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে নয়জন ইতালির নাগরিক, সাতজন জাপানের, একজন ভারতের ও তিনজন বাংলাদেশি। সকালে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো সদস্যদের পরিচালিত ‘অপারেশন থান্ডারবোল্টে’ অবসান হয় জিম্মিদশার। পুলিশের অভিযানে মৃত্যু হয় হামলাকারী পাঁচ জঙ্গির।

এরপর জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নামে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। চলে একের পর এক জঙ্গি আস্তানার সন্ধান। গ্রেফতার করা হয় প্রায় অর্ধশতাধিক জঙ্গি।

এদেশে জঙ্গীবাদের ইতিহাসে হলি আর্টিজানের হামলা ছিল নজিরবিহীন ও ভয়ঙ্কর। জঙ্গীরা তাদের সাংগঠনিক শক্তিমত্তা জানান দেয়ার জন্যই এ হামলা চালায়। এর আগে এত বড়মাপের জঙ্গী হামলা কখনও হয়নি। এ হামলার আগে অর্থাৎ পুরো ২০১৫ সাল এবং ২০১৬ সালের প্রথম কয়েক মাসে বিভিন্ন ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছিল যে বাংলাদেশে যে কোন সময় বড়মাপের একটি জঙ্গী হামলা হতে পারে। ২০১৫ সালে একের পর এক লেখক, ব্লগার ও প্রকাশক হত্যার সময় নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছিলেন যে জঙ্গীবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। তারই ইঙ্গিতস্বরূপ ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গুলশানে ইতালির নাগরিক চেজারে তাবেলাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট গ্রুপ সে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে। তখন থেকে অনেকেই আঁচ করছিলেন যে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশী নাগরিকরা হুমকির মুখে। কিন্তু তাদের সেই ভয়াল থাবা থেকে দেশকে মুক্ত এবং বিদেশি নাগরিকদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শেখ হাসিনা সরকার।

ইতিহাসের ভয়াবহ এ হামলায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ খুলে দিয়েছে। জঙ্গীবাদবিরোধী অভিযানের নক্সা নতুন করে সাজায় বাংলাদেশের পুলিশ। জঙ্গীবাদবিরোধী গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং অভিযান পরিচালনার জন্য কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট গঠন করা হয়। এর পাশাপাশি পুলিশ সদর দফতরে একটি আলাদা গোয়েন্দা শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়। যাদের কাজ জঙ্গী তৎপরতা সম্পর্কে নজরদারি করা।

হলি আর্টিজানে এই হামলার পর প্রায় দুই হাজার জঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়। এ বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তারাও বলছেন, হলি আর্টিজানের পরে বাংলাদেশে যতগুলো জঙ্গীবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে সেগুলো সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে করা হয়েছে। জঙ্গীরা যাতে সংগঠিত হতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ রয়েছে।

অপারেশন থান্ডার বোল্ট : গুলশানে জঙ্গি দমনে ও জিম্মি ঘটনা অবসানের জন্য পরিচালনা করা হয় থান্ডার বোল্ট অপারেশন। অভিযানে অংশ নেয় সামরিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চার সহস্রাধিক সদস্য।

এ হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই সে বছর ঈদুল ফিতরের দিন সকালে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাতের মাঠের কাছে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের ওপর বোমা হামলা এবং গোলাগুলিতে দুই কনস্টেবলসহ চারজন নিহত হন। হামলার দিনই বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় আবীর রহমান নামে নব্য জেএমবির এক সদস্য। আহত অবস্থায় গ্রেফতার হয় শফিউল নামে আরেক জঙ্গি।
এরপর দেশব্যাপী শুরু হয় জঙ্গিবিরোধী অভিযান। জঙ্গি হামলার মাস্টারমাইন্ড, অস্ত্রদাতা, অর্থদাতা, প্রশিক্ষণ-প্রশিক্ষক ও জঙ্গিদের আশ্রয়দাতাদের শনাক্ত করা হয়। তদন্তে উঠে আসে নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়ানো উগ্রপন্থী সংগঠন নব্য জেএমবি।

কল্যাণপুরে অপারেশন স্টোর্ম-২৬ : ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই কল্যাণপুরের একটি জঙ্গি আস্তানার সংবাদ পায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। সেখানে চলে ‘অপারেশন স্টোর্ম’। এতে নিহত হয় ৯ জঙ্গি।

নারায়ণগঞ্জে অপারেশন হিট স্ট্রং-২৭ : একই বছরের ২৭ আগস্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। ওই অভিযানে নিহত হয় নব্য জেএমবি নেতা ও গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম আহম্মেদ চৌধুরী। এ সময় তামিমের সঙ্গে মারা যায় তার আরো দুই সহযোগী।

রূপনগরের আস্তানায় হামলা : ২ সেপ্টেম্বর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট অভিযান চালায় মিরপুরের রূপনগরে। সেখানে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয় জাহিদুল ইসলাম নামে অবসরপ্রাপ্ত এক মেজর। গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় অংশগ্রহণকারীদের তিনি গাইবান্ধার চরাঞ্চলে প্রশিক্ষণ দেন। নারায়ণগঞ্জে তামিম চৌধুরী নিহত হওয়ার পর নব্য জেএমবিতে তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার কথা ছিল মুরাদ ওরফে মেজর মুরাদ ওরফে জাহিদুলের।

আজিমপুরে আস্তানায় হামলা : ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরের একটি বাড়িতে অভিযান চালায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। সেখানে নব্য জেএমবির অন্যতম শীর্ষ নেতা ও আশ্রয়দাতা তানভীর কাদেরী নিহত হয়। সেখান থেকে আটক করা হয় তিন নারী জঙ্গি ও তানভীরের ১৪ বছর বয়সী ছেলেকে।

গাজীপুরে অপারেশন ‘স্পেইট-এইট’: একই বছর ৮ অক্টোবর জঙ্গি দমনে পুলিশ ও র্যাব গাজীপুর, আশুলিয়া ও টাঙ্গাইলের চার আস্তানায় অভিযান চালায়। গাজীপুরে পৃথক দুই অভিযানে ৯ জঙ্গি, টাঙ্গাইলে দুই জঙ্গি এবং আশুলিয়ায় নিহত হয় জঙ্গিদের আশ্রয়দাতা।

আশকোনা অপারেশন ‘রিপল ২৪’: বছরের শেষ দিকে ২৪ ডিসেম্বর আশকোনার জঙ্গি আস্তানায় প্রায় ১২ ঘণ্টার পুলিশি অভিযানে জঙ্গিনেতা তানভীর কাদেরীর ছেলেসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আহত অবস্থায় এক শিশুকে উদ্ধারের পাশাপাশি আত্মসমর্পণ করে নিহত আরেক জঙ্গিনেতা জাহিদুল ইসলামের স্ত্রীসহ চারজন। সমাপ্তি শেষে অভিযানটির নাম দেয়া হয় ‘অপারেশন রিপল-২৪’। ওই বাড়িতে ‘আত্মঘাতী বিস্ফোরণে’ নিহত দুজনের একজন হলেন জঙ্গিনেতা তানভীর কাদেরীর ছেলে আফিফ কাদেরী আদর (১৪)। নিহত অন্যজন জঙ্গিনেতা সুমনের স্ত্রী শাকিরা।

অপারেশন ‘অ্যাসল্ট ১৬’: ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ প্রথম জঙ্গি আস্তানায় এ ধরনের প্রথম অভিযান পরিচালনা করল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ১৫ মার্চ সন্ধান পাওয়া এ আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নিহত হয় ৪ জঙ্গি। আস্তানায় আটকে পড়া ১৮ জনকে নিরাপদে বের করে আনে অভিযানে অংশ নেয়া সোয়াতের সদস্যরা।

অপারেশন টোয়লাইট : সিলেট মহানগরের দক্ষিণ সুরমা থানার শিববাড়ি এলাকায় জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলে ‘২৫ মার্চ অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামের অভিযান চালায় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো টিমের সদস্যরা। প্রথমে এ অভিযান সোয়ট শুরু করলে তার নাম দেয়া হয় স্প্রিং রেইন। এ অভিযানে নিহত হয় নব্য জেএমবির অন্যতম নেতা মাইনুল ওরফে মুসা। ভয়াবহ এ অভিযানে পুলিশ কর্মকর্তা, র্যাবের তৎকালীন গোয়েন্দা প্রধান আবুল কালাম আজাদ ৫ জন নিহত হন। এছাড়া মুসাসহ তিন নারী জঙ্গি নিহত হয়।

অপারেশন ম্যাক্সিমাস : মৌলভীবাজারের বড়হাটে জঙ্গি আস্তানায় সোয়াতের অভিযান পরিচালনা করে। এ অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’। অভিযানে তিন জঙ্গির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে ২ জন পুরুষ ও ১ জন নারী রয়েছে। ’

অপারেশন সানডেভিল : রাজশাহীর গোদাগাড়ির নির্জন গ্রাম হাবাসপুরে ২০১৭ সালের ১১মে অভিযান শুরু করে কাউন্টার টেরোরিজম। অভিযানের নাম দেয়া হয় অপারেশন সানডেভিল। এ অভিযানে আব্দুল মতিন নামের ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীকে তেড়ে এসে কুপিয়ে হত্যা করে এক নারী জঙ্গি। তার হুংকারের ভিডিও দেখে অনেকেই হতবাক হয়ে পড়েন। এ ঘটনায় ওই নারীসহ ৪ জঙ্গি নিহত হয়।

অপারেশন আগস্ট বাইট : ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট রাজধানীর পান্থপথে হোটেল ওলিতে অবস্থান নেয় এক সাইফুল ইসলাম নামের এক জঙ্গি। উদ্দেশ্যে ছিল জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকী জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মিছিল-সমাবেশের এরপর বোমা নিক্ষেপ করা। কিন্তু এর আগেই কাউন্টার টেরোরিজম সংবাদ পেয়ে তা ঘিরে ফেলে। পরবর্তীতে তাকে আত্মমর্পণের আহ্বান জানানো হলে সে তার নিজের কাছে থাকা বোমায় আত্মাঘাতী হয়। এই অপারেশনের নাম দেওয়া হয় অপারেশন আগস্ট বাইট।

গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর ঢাকার কল্যাণপুর, রূপনগর, আজিমপুর, আশকোনা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও টাঙ্গাইল, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, সিলেট এবং রাজশাহীতে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট ও এলিট ফোর্স র্যাব। এসব অভিযানে ‘নব্য জেএমবির’ শীর্ষনেতা তামিম চৌধুরীসহ নিহত হয় অন্তত অর্ধশতাধিক জঙ্গি সদস্য।

তবে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে মাঝে মধ্যেই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারি এবং গ্রেফতার অভিযানের কারণে এতে সফল হয়ে উঠতে পারছে না জঙ্গি সংগঠনগুলো। বর্তমানে দেশে জঙ্গিদের আগের সেই অবস্থান নেই। মাঝে মধ্যে অনলাইনকেন্দ্রিক সরব হওয়ার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারীর কারণে তারা গ্রেফতার হয়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ্যতা, দূরদর্শিতা আর সঠিক নেতৃত্বগুণের জন্য আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত একজন রাজনীতিবিদ। দেশ পরিচালনায় তিনি সাহস ও কর্মদক্ষতায় অনন্য। আর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের মাধ্যমে তিনি বর্তমানে বিশ্বশান্তির দূত ও মানবপ্রেমী হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। জঙ্গিবাদ দমনে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই গৃহীত কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ জঙ্গিমুক্ত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)