১৫৭ রানের সহজ জয়ের লক্ষ্যে নেমে শুরুতে দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাসের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তিন নম্বরে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ একাধিকবার পেয়েছেন জীবন, পেয়েছেন ফিফটির দেখা।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জয়ের পথে থাকা টাইগারদের সংগ্রহ ২৬ ওভারে ২ উইকেটে ১০৯ রান। মিরাজ ৫২ ও নাজমুল হোসেন শান্ত ৩২ রানে ক্রিজে আছেন।
পঞ্চম ওভারে লিটন পয়েন্টে বল ঠেলে দেন। নন স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা তানজিদ দৌড় শুরু করলে লিটন তাকে ফিরতে বলেন। সময় মতো ফিরতে না পারায় বাঁহাতি ব্যাটার নাজিবুল্লাহ জাদরানের সরাসরি থ্রোয়ে ৫ রান করে রান আউট হন।
সাবলীল শুরুর পরেও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ লিটন। ১৮ বলে ২ চারে ১৩ রান করে মাঠ ছাড়েন। ফজলহক ফারুকির অফ স্টাম্পের বাইরের বল তার ব্যাটে লেগে স্টাম্পে আঘাত করে।
ফারুকির করা নবম ওভারের চতুর্থ বলে সহজ ক্যাচ ফেলে দেন পয়েন্ট অঞ্চলে থাকা জাদরান। মিরাজ ১৬ রানে প্রথম জীবন পান।
নাভিন উল হকের বলে মিরাজের আপার কাটে সুযোগ এসেছেল মুজিব উর রহমানের বলে। কিন্তু থার্ড ম্যানে ক্যাচ নিতে পারেননি তিনি, আরেকবার বেঁচে যান মিরাজ। সে সময় ২৩ রানে ছিলেন তিনি।
রশিদ খানের করা ১৫তম ওভারের শেষ বলে দুই রান নেন শান্ত। আফগান লেগ স্পিনার ফিল্ডারের ছোড়া বল নিয়েই তার পেছনে থাকা স্টাম্পে লাগানোর চেষ্টা করেন। অল্পের জন্য বেলে বল না লাগায় ৩৫ রানে থাকা অবস্থায় মিরাজ বেঁচে যান।
ফিফটি পাওয়ার পর মুজিব উর রহমানের এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দিয়ে টাইগার অলরাউন্ডারকে আউট দেন আম্পায়ার। ডিআরএসের সাহায্য নিয়ে মিরাজ আবারো জীবন পান।
এর আগে ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টসে জিতে ফিল্ডিং নেয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণ করলেন সাকিব আল হাসান। টাইগার বোলারদের দাপুটে পারফরম্যান্সে ৩৭.২ ওভারে মাত্র ১৫৬ রানের অলআউট হয় আফগানিস্তান। ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সহজ ১৫৭ রানের জয়ের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।
শনিবার সকালে পিচ রিপোর্ট দিয়েছিল পেসাররা পাবেন বাউন্সের সুবিধা। টসে জিতে বাংলাদেশ ফিল্ডিং নেয়ার পর পেস বোলাররা এনে দিতে পারেননি দ্রুত উইকেট। আফগানিস্তানকে চাপে ফেলতে বল হাতে নেন সাকিব আল হাসান। তার স্পিন ঝলকেই টাইগাররা পায় প্রথম সাফল্য।
সাকিব নিজের দ্বিতীয় ওভারে জাদরান সুইপ শট খেলতে গেলে বল তার ব্যাটের উপরের অংশে লাগে। ভাসতে থাকা বল ডিপ স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়ে থাকা তানজিদ হাসান তামিমের হাতে জমা পড়লে আফগানিস্তানের ৪৭ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে।
জাদরান সুইপ শট খেলতে গেলে বল তার ব্যাটের উপরের অংশে লাগে। ভাসতে থাকা বল ডিপ স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়ে থাকা তানজিদ হাসান তামিমের হাতে জমা পড়লে আফগানিস্তানের ৪৭ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে।
একপর্যায়ে স্কোর ছিল ২ উইকেটে ১১২ রান। মাত্র ১৪ রান যোগ করতেই হাসমতউল্লাহ শহিদীর দল ৪ উইকেট হারায়। দলীয় ১১২ রানের মাথায় দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আফগানিস্তান। হাসমতউল্লাহ শহিদীকে ড্রেসিংরুমের পথ দেখান মেহেদী হাসাম মিরাজ। আফগান অধিনায়ক স্লগ করতে গিয়ে বল উপরে তুলে দেন। মিড অনে থাকা তাওহিদ হৃদয় সহজেই ক্যাচ ধরেন। ৩৮ বলে ২ চারে হাসমতউল্লাহ ১৮ রান করে ফেরেন।
খানিক পর বিপজ্জনক হয়ে ওঠা রাহমানউল্লাহ গুরবাজের মূল্যবান উইকেট পান মোস্তাফিজুর রহমান। কাটার মাস্টারের স্লোয়ার বলে উড়িয়ে মারতে যান আফগান ওপেনার। অনেকখানি দৌড়ে গিয়ে ডিপ পয়েন্টে দারুণভাবে বল তালুবন্দি করেন তানজিদ হাসান তামিম। গুরবাজ ৬২ বলে ৪টি চার ও এক ছক্কায় ৪৭ রানে থামেন।
আফগানিস্তান ১২২ রানের মাথায় পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে। নাজিবুল্লাহ জাদরানকে বোল্ড করেন সাকিব। পরে তাসকিন আহমেদের বল ৬ রান করা মোহাম্মাদ নবীর ব্যাটের কানায় লাগে। উপড়ে যায় লেগ স্টাম্প।
প্রতিপক্ষের টেল এল্ডার ব্যাটারদের দাঁড়াতেই দেয়নি বাংলাদেশ। ৬ উইকেটে ১৫০ থেকে ১৫৬ রানেই গুঁটিয়ে যায় আফগানিস্তানের ইনিংস। রশিদ খান ও মুজিব উর রহমানকে বোল্ড করেন মিরাজ। ওমরজাই করেন ২০ বলে ৪টি চারে ২২ রান, তার স্টাম্প উপড়ে দেন শরিফুল ইসলাম। রানের খাতা না খোলা ফজলহক ফারুকির ক্যাচ দেন হৃদয়। উইকেটটি নেন শরিফুল।
টাইগার বোলারদের মধ্যে মিরাজ ২৫ ও সাকিব ৩০ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। শরিফুল পকেটে পুরেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট পান মিরাজ ও তাসকিন।