‘বাংলা সিনেমা বিশ্বজয় করবে’- এমনটা আশা করতেন সিনেমা সংশ্লিষ্টরা। গেল বছর সেই আশার কিছুটা হলেও প্রতিফলন ঘটিয়েছে ‘প্রিয়তমা’। বাংলাদেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মধ্যপ্রাচ্য, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া থেকে অভাবনীয় সাফল্য পায় সুপারস্টার শাকিব খানের সাড়া জাগানো এ সিনেমাটি।
সেই সাফল্যে ভর করে ‘প্রিয়তমা’কে ছাড়িয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে ‘রাজকুমার’ নির্মিত হচ্ছে। আরশাদ আদনানের প্রযোজনায় শাকিবের এই সিনেমার শুটিং চলছে মার্কিন মুলুকের বিভিন্ন স্টেটে। ‘রাজকুমার’ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই বাংলায় এমন বড় আয়োজনের সিনেমা আগে হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রে শুটিংয়ের আগে মার্কিন আর্টিস্টদের চেন্নাইতে নেয়া হয়েছিল। যে বাজট শুধু এর অ্যাকশনে ব্যয় হয়েছে এতে সম্প্রতি গতানুগতিক অন্যান্য বাংলা সিনেমার চেয়ে বেশি বাজেট ব্যয় হয়েছে বলে জানান হিমেল। এবার বলিউডের নামী কোরিওগ্রাফার আদিল শেখকে আমেরিকায় নেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের চোখ ধাঁধানো সব লোকেশনে গান, চেজিং উঠে আসবে সিনেমায়।
সবকিছু মিলিয়ে আসন্ন রোজার ঈদে ‘রাজকুমার’ বাংলা সিনেমাকে বিশ্বের কাছে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে মনে করেন হিমেল আশরাফ।
তিনি বলেন, আমরা হান্ড্রেড পার্সেন্ট প্রফেশনালভাবে শুটিং করছি। কোথাও কোনো ছাড় থাকছে না। আগে দেখেছি আমেরিকায় কেউ শুটিং করলে পরিচিতজনদের অফিস, গাড়ি-বাসা ম্যানেজ করে শুটিং করেন। কিন্তু আমরা পারফেক্টলি আমেরিকান ক্রু, শুটিং জোন রেন্ট নিয়ে শুটিং করছি।
এভাবে আমেরিকায় বিভিন্ন রাজ্যে ১৮দিন শুটিং হবে। পরিচালক হিমেল আশরাফের ভাষায়, ইটস নট অ্যা ম্যাটার অব জোকস! একজন সুপারস্টারকে নিয়ে ওয়ার্ল্ডের ফার্স্ট কান্ট্রিতে ১৮ দিন প্রোপার ওয়ে-তে সিনেমার শুটিং করা চারটে খানি কথা নয়! বাংলাদেশে যে আয়োজনে শুটিং করেছি আমেরিকাতেও লাইট-ক্যামেরা এবং ইকুইপমেন্ট নিয়ে শুটিং করছি। এগুলো সিনেমা রিলিজের পরে ‘বিহাইন্ড দ্য সিন’ হিসেবে প্রকাশ করা হবে।
শুটিংয়ে মাঝেমধ্যে হাড় কাঁপানো শীতের কবলে পড়তে হচ্ছে। আবহাওয়ায় কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে উল্লেখ করে হিমেল বলেন, মাইনাস ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেও শুটিং হয়েছে। স্ক্রিনে এগুলো বোঝা যাবে না। একটি দৃশ্যের পরে আমরা ব্রেক নিচ্ছি, হিটারের তাপে চাঙ্গা হচ্ছি। পাঁচ বছর আগে যখন প্রথম নিউ ইয়র্ক এসেছিলাম পেশাগত কারণে প্রচুর জায়গায় ঘোরা হয়েছে। এই শহরটা খুব ভালোভাবে চিনি। বাকিটা দর্শক সিনেমায় দেখতে পারবে।
যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল শুটিংয়ে এই অসাধ্য সাধন হচ্ছে প্রযোজক আরশাদ আদনানের কারণে। এমনটা উল্লেখ করে হিমেল বলেন, আদনান ভাই যেভাবে সাপোর্ট দিচ্ছেন বাংলাদেশের কোনো প্রযোজক এমন আয়োজনে আমেরিকায় শুটিং করার সাহস পাবে না! শাকিব ভাইও অনেক কষ্ট করছেন। আমরা ক্যামেরার পিছনে পুরো শরীর মোটা শীতের কাপড় ঢাকা থাকলেও ক্যামেরার সামনে শাকিব ভাইকে সাবলীল থাকতে হচ্ছে। এমনও হয়েছে উনি ঠাণ্ডায় জমে যাচ্ছেন, তার চোখ লাল হয়ে স্কিন ফেটে যাওয়ার মতো অবস্থা। আবহাওয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে শুটিং করাটা তাকে বেশি ফেইস করতে হচ্ছে।
“শাকিব ভাই বুঝতে পারছেন ‘রাজকুমার’ ভালো সিনেমা হচ্ছে। এ কারণে তিনি যেখানে যেমন চাচ্ছি সেখানে তিনি নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছেন।”-বলছিলেন হিমেল।