সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে লেবাননের বিপক্ষে ভালোই লড়েছে বাংলাদেশ। গোল করার সুযোগ তৈরি করেছে কয়েকবার। লেবাননের পাল্টা আক্রমণ রুখে দিয়ে রক্ষণেও ছিল দৃঢ়। শেষপর্যন্ত অবশ্য ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি। হেরে বসেছে ২-০ গোলে।
লেবাননের হয়ে গোল দুটি করেছেন হাসান মাতউক ও খলিল বাদের। ৭৮ মিনিটে জালে বল পাঠান হাসান। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করেন খলিল।
ভারতের মাটিতে এবারের সাফে বি-গ্রুপে খেলছে বাংলাদেশ। গ্রুপে লেবানন ছাড়া বাংলাদেশের অন্য দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দুবারের চ্যাম্পিয়ন মালদ্বীপ ও ভুটান। জামালরা ২৫ জুন বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবেন মালদ্বীপের। ২৮ জুন গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে লড়বেন ভুটানের বিপক্ষে।
বৃহস্পতিবার অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী লেবাননকে অনেকটা সময় নাচিয়েছে বাংলাদেশ। আক্রমণে গেছে ম্যাচ শুরুর কিছুপর থেকেই। ১১ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি-কিক থেকে গোলের সুযোগ এলেও কাজে লাগানো যায়নি।
লেবাননও ছেড়ে কথা বলেনি। বল দখল-আক্রমণে আধিপত্য ছিল আসরে আমন্ত্রিত দলটির। ১৫ মিনিটে গোলের সুযোগ তৈরি করে তারা। বক্সের বাইরে থেকে গোল বরাবর শট নেন করিম ডারউইচ। লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
পরে মধ্যমাঠে বল দখলের লড়াইয়ে মাতে দুদল। ৩৩ মিনিটে আবারও সুযোগ আসে লেবাননের। বক্সের ডানপাশ দিয়ে আক্রমণে যান মোহাম্মদ সাদেক। সে যাত্রায় তাকে প্রতিহত করেন সোহেল রানা। দুই মিনিট পর বাঁ-প্রান্ত দিয়ে গোলমুখে শট নেন করিম। দুর্দান্ত সেভে বাংলাদেশকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো।
ম্যাচের ৩৮ মিনিটে একইপ্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢোকার চেষ্টা করেন আলি আল হাজ। তাকে প্রতিহত করেন রানা। ফ্রি-কিক পেলেও সুযোগ তৈরিতে ব্যর্থ হয় লেবানন। ৪২ মিনিটে প্রতি আক্রমণে গোলের সুযোগ তৈরি করেন সুমন রেজা। তবে প্রতিপক্ষ বক্সের কাছে গিয়ে খেই হারিয়ে বসেন লাল-সবুজের তারকা।
একমিনিট পরই গোলের সুযোগ পান ফাহিম। পরাস্ত হন লেবানন রক্ষণে। সে যাত্রায় কর্নারে রক্ষা পায় লেবানন। কর্নার থেকেও গোলের সুযোগ তৈরি করে বাংলাদেশ। লেবানন গোলরক্ষকের দুর্দান্ত সেভে হতাশ হতে হয় বিশ্বনাথকে। গোলশূন্য সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। বল দখলে এগিয়ে থাকে, আক্রমণেও। তবে ৪৮ মিনিটে গোলের সুযোগ বের করে লেবানন। মোহাম্মদ সাদেকের শট প্রতিহত করে লেবানিজদের বঞ্চিত করেন জিকো। ৫৪ মিনিটে গোলের সুযোগ আনে বাংলাদেশ। ডানপ্রান্ত থেকে বক্সে জনির দিকে বল বাড়িয়ে দেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। সেই বল জালে পাঠানোর সুযোগই তৈরি করতে পারেননি জনি।
পাঁচ মিনিট পর নিশ্চিত গোলের সুযোগ থেকে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করেন ফাহিম। মোরসালিনের বাড়িয়ে দেয়া বল থেকে গোলের সুযোগ আসে ফাহিমের সামনে। সামনে বাধা ছিলেন কেবল লেবানন গোলরক্ষক। ব্যর্থ হন ফাহিম। পরে আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে এগোতে থাকে ম্যাচ।
ম্যাচের ৭৮ মিনিটে লিড পায় লেবানন। লাল-সবুজদের রক্ষণ ফাঁকা পাওয়ার সুযোগ নেন করিম ডারউইচ ও হাসান মাতউক। বক্সে বল টেনে নিয়ে হাসানের দিকে বাড়িয়ে দেন করিম। জিকোকে পরাস্ত করে সহজেই গোল আদায় করেন হাসান। ৮৮ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের সুযোগ পান হাসান। ব্যবধান বাড়াতে ব্যর্থ হন যদিও।
যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে কর্নার থেকে গোল শোধের সুযোগ পান রবিউল। তবে লেবানন গোলরক্ষক তাকে প্রতিহত করেন। ৯৪ মিনিটে হাসান মাতউকের শট ঠেকিয়ে প্রতি আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। গোল আদায়ে ব্যর্থ হয়ে উল্টো ফিরতি আক্রমণে গোল হজম করে বসে লাল-সবুজ বাহিনী। ৯৫ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি আদায় করেন খলিল বাদের। ২-০ গোলের পরাজয়ে মাঠ ছাড়তে হয় জামাল ভূঁইয়াদের।