কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আলোচনায় ছবিটি। গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সবখানেই ছুটে গেছেন এই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র আজমেরী হক বাঁধন। খুঁজলেও কোথাও পাওয়া যায়নি নির্মাতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদকে। গণমাধ্যমতো দূর, তাকে খোঁজে পাওয়া যায়নি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোনো শাখায়!
আড়ালে থাকতেই স্বস্তি পান এই নির্মাতা। শুরু থেকেই এমনটাই জানিয়ে আসছিলেন ছবির নির্বাহী প্রযোজক থেকে শুরু করে অভিনেত্রী বাঁধনও! তবে এই ইস্যুতে সাদ আড়াল ভেঙে প্রথমবার সামনে আসেন কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ এর ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার দিন! মর্যাদাপূর্ণ সেই উৎসবে আরো কয়েকটি ইভেন্টেও দেখা গেছে তাকে। অংশ নিয়েছিলেন একটি সংবাদ সম্মেলনেও!
এরপর আবার ডুব! এরইমধ্যে বুসান চলচ্চিত্র উৎসব সহ বিশ্বের বেশকিছু চলচ্চিত্র উৎসবে মনোনীত হয়েছে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। স্বভাবতই সাদ চুপচাপ! এবার দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পরিকল্পনা। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি, সবকিছু সামনে থেকে সামলাচ্ছেন ছবির নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু ও আজমেরী হক বাঁধন।
শুক্রবার (১২ নভেম্বর) থেকে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ দেখবে দেশের দর্শক। বুধবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এই ছবির ‘প্রেস শো’ এর আয়োজন করে সংশ্লিষ্টরা। ছবি শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে স্টেজে আসেন ছবির নির্মাতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ। কড়তালিতে মুখরিত হয় মুহূর্ত। অনভ্যস্ততা আর অস্বস্তি না লুকিয়ে মাইক্রোফোনে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে সাদ বলে উঠেন, ‘আপনাদের কাছে আমি গ্রেটফুল’।
মাত্র দুই মিনিটের মতো স্টেজে ছিলেন। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতাই ছিলো তার চোখে মুখে। বললেন, গত পাঁচ মাসে যে ইনক্রিডিবল সাপোর্ট আমাদের দিয়েছেন, তারজন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমাদের যে কোনো অর্জন, আপডেট এতো যত্ন নিয়ে আপনারা কাভার করেছেন- যার প্রতি পুরো টিম আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
সাদ বলেন, ১২ তারিখ থেকে প্রেক্ষাগৃহে সবাই ছবিটি দেখতে পারবে, কিন্তু আমরা চেয়েছিলাম সবার আগে বাংলাদেশ প্রেসের মানুষরা আগে সিনেমাটি দেখুক। আপনাদের কাছে ছবিটা কেমন লাগবে, এটা জানতে আমরাও কৌতুহলী হয়ে আছি।
কথা প্রসঙ্গে পুরো টিমের প্রতিও এসময় কৃতজ্ঞতা জানান সাদ। বলেন, এই সিনেমা এতোদূর পর্যন্ত আসার পেছনে বড় কারণ আমাদের টিম অ্যাফোর্ড। প্রত্যেক সদস্যের সেক্রিফাইস ও কমিটমেন্টের কারণে ছবিটা এই পর্যন্ত আসছে। সিনেমাটি দেখলে সবাই হয়তো বিষয়টি বুঝতে পারবেন। আমি খুবই সৌভাগ্যবান যে, এই জার্নিতে এই মানুষগুলো আমাকে ট্রাস্ট করেছেন, এবং আমার সঙ্গী হয়েছেন।
বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা হিসেবে ৭৪তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের ‘আনসার্টেন রিগার্ড’ বিভাগে অংশ নেয় ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। এর পর প্রদর্শীত হয়েছে মেলবোর্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও। বুসান সহ ছবিটি দেখানো হয়েছে মেলবোর্ন চলচ্চিত্র উৎসব ও ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট অব লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভালে।
এদিকে আসন্ন ৯৪তম অস্কারে ‘বেস্ট ইন্টারন্যাশনাল ফিচার ফিল্ম’ বিভাগে প্রতিযোগিতার জন্য বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করে ছবির গল্প। যেখানে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন।