চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে নতুন শঙ্কা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হওয়ায় বছরের পর বছর সংকট চলছে। এই সংকট যে শুধু বাংলাদেশের, তা নয়। এটা পুরো দক্ষিণ এশিয়ার সমস্যায় পরিণত হয়েছে। সেই সমস্যার সমাধানের বদলে আরও এক শঙ্কার কথা জানা গেছে।

চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদনে জানা যায়, ‌‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ভারত থেকে কোন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইলে তাদেরকে পুশব্যাক করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্যরা তাদেরকে ভারতেই পাঠিয়ে দেবে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে ভারত সরকারের কাছে উদ্বেগ জানিয়ে আমরা তা বলেছি।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন নির্দেশনাকে আমরা স্বাগত জানাই। একইসাথে নতুন করে ভারত থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলছে। এই সংকটের শুরু থেকেই ভারত বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আসলেও কার্যত ছিল না। চীন-ভারতের উদাসীনতা, এমনকি জাতিসংঘে ভেটো দেওয়ার কারণে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। ফলশ্রুতিতে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রতীক্ষা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের আরও একটি মন্তব্যে উঠে এসেছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধের ভয়াবহ খবর। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা উদ্বেগ জনক। রোহিঙ্গারা মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। এ ছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা বেষ্টনী আরো জোরদার করা হবে যাতে প্রয়োজন ছাড়া রোহিঙ্গারা ক্যাম্পের বাইরে যেতে না পারে। যারা ক্যাম্প ছেড়ে চলে গেছে তাদেরকে ক্যাম্পে ফিরিয়ে আনা হবে।’

এই সংকটের শুরু থেকেই আমরা আশঙ্কা করে আসছিলাম যে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে তাদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বাড়বে। সেই শঙ্কাই সত্য প্রমাণিত হলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে। এজন্য খুব দ্রুত সময়ে সংকট সমাধান জরুরি। অথচ এর পরিবর্তে ভারত থেকেও বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ হচ্ছে! বন্ধুপ্রতিম ভারতের সরকার এবং সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনুপ্রবেশ বন্ধে তৎপর হবে বলে আমরা আশা করি। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে এ বিষয়ে আরও বেশি তৎপর হতে হবে।

বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও স্বার্থ রক্ষা, সর্বোপরি মানবিক এ ইস্যুতে ভারতকে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ এবং এর আগে থেকেই বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক মানুষের সাথে মানুষের। সেই সম্পর্ক এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশ-ভারতের সেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ভারতকে আরও উদ্যোগী হতে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। একইসাথে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ও সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক তৎপরতা গ্রহণ করবে বলে আমাদের আশাবাদ।