চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সড়ক পরিবহন আইন দ্রুত জারির দাবি

‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ এর অধীন বিধিমালা দ্রুত জারির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রোড সেইফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ।

শনিবার (১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নিরাপদ সড়ক চাই, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেসরকারি দশটি সংস্থা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এ দাবি জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কোয়ালিশন সদস্য সংস্থা নিরাপদ সড়ক চাই-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে সড়ক পরিবহন আইন পাস হয়। বহুল আলোচিত এ আইন পাস হওয়ার চার বছর পূর্ণ হলেও তা বাস্তবায়নে বিধিমালা তৈরি হয়নি। ফলে সড়ককে নিরাপদ করার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও আইনের বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে সড়কে প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না শৃঙ্খলা, বাড়ছে মৃত্যু। সড়ক দুর্ঘটনাজনিত মানুষের মৃত্যু, পঙ্গুত্ব ও অসুস্থতা এবং সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি লাঘবের উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ এবং এর সদস্যভুক্ত প্রায় প্রতিটি দেশের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বর্তমান সরকার তার সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানসমূহের সহায়তায় সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার বিবেচনায় এর সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সড়ক দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা বহুমাত্রিক হওয়ায় সরকারের একার পক্ষে তা নিরসন করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও কার্যকর উদ্যোগ। এরই ধারাবাহিকতায় অর্থাৎ জাতিসংঘ ঘোষিত সড়ক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট এসডিজির লক্ষ্য ৩.৬ ও ১১.২ পূরণের নিমিত্ত সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাসমূহের পাশাপাশি দেশের কিছু কার্যকর স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ও এনজিও সক্রিয়ভাবে কাজ করে আসছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন সময়ে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ প্রণয়ন। এই আইনের কিছু সরল দিক থাকলেও এর সীমাবদ্ধতা রয়েছে প্রচুর। যার মধ্যে অন্যতম হলো— আইনটিতে হেলমেট পরিধানের বাধ্যবাধকতা থাকলেও এর মানদণ্ড ও ব্যবহারবিধি আইনে অনুপস্থিত। আইনে গতিসীমা লঙ্ঘনে শাস্তির বিধান বর্ণিত থাকলেও গতিসীমা নির্ধারণ, এর বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণের নির্দেশনা ও গাইডলাইন সন্নিবেশিত হয়নি, যা বাস্তবায়ন অযোগ্য। এছাড়া যাত্রীদের সিটবেল্ট ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা ও শিশুদের ক্ষেত্রে চাইল্ড রেস্ট্রেইন্ট বা শিশুদের জন্য নিরাপদ বা সুরক্ষিত আসন ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা আইনটিতে সংযোজন করা হয়নি।

বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে চলতি বছরের শুরুতে রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ নামে যৌথ প্রচেষ্টার শুরু হয়। এর সদস্য সংস্থাগুলো হলো—নিরাপদ সড়ক চাই; ব্র্যাক; ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন; অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (বুয়েট); বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি; সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ; ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ অর্থপেডিক সোসাইটি; বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশন এবং ইম্প্রেসিভ কমিউনিকেশন লিমিটেড।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিবিউটরের কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর ড. শরিফুল আলম, কোয়ালিশনের সদস্য সংস্থার পক্ষ থেকে ব্র্যাকের রোড সেইফটি প্রোগ্রাম পরিচালক আহমেদ নাজমুল হুসেইন, বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিচার্স ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. হাদিউজ্জামান, বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া, সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) পরিচালক ড. সেলিম মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ, বিএনএনআরসির প্রধান নির্বাহী এএইচএম বজলুর রহমান, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর রেজওয়ান নবীন, ইমপ্রেসিভ কমিউনিকেশনস লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসিবুজ্জামান প্রমুখ।