টাঙ্গাইল জেলার বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপারের গোল চত্ত্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিশু ও এক নারীসহ ছয়জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তপক্ষে ৩৫ জন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তের গোলচত্ত্বর এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ জানায়, উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা একতা পরিবহনের একটি বাস ঢাকার দিকে যাচ্ছিলো। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উত্তরবঙ্গমুখি লেনে চলে যায়। অপর দিকে টাঙ্গাইল দিক থেকে আসা একটি মাইক্রোবাস ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বাসটির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে বাস ও মাইক্রোবাসের সামনের অংশ দুমড়েমুচরে যায়। ঘটনাস্থলে তিন জনের মৃত্যু হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর আরও তিন জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বাসটির সুপারভাইজারও আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও খোঁজ মেলেনি চালক আজিজ সিকদারের।
আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক।
নিহতরা হলেন মাইক্রোবাসের চালক কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কুটুম্বপুর গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে দুলাল হোসেন (৫২), মাইক্রোবাসের আরোহী বগুড়া সদরের জলসিড়ি গ্রামের হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী মালেকা বানু ওরফে রুবি (৬৫) ও তার ছেলে রিফাত আল হাসান (৩৫), মাইক্রো চালকের সহযোগি কুমিল্লার সুশীল চন্দ্র শীল (৪৫), বাসের আরোহী পাবনার বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক (সার) জহিরুল ইসলাম (৫০), নাটোর সদরের বড়াই গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে তামিম (৭)।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা বাসের যাত্রী নাটোরের নলডাঙ্গার মনির হোসেন বলেন, আমার ভাগ্নে উৎসবকে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলাম। উৎসবের ঢাকায় চাকরির ইন্টারভিউ ছিলো। বাসটি নিমিষেই এপাশ থেকে অপর পাশে উল্টে গিয়ে মাইক্রোবাসের ওপর পড়ে যায়। কখনও ভাবিনি এখান থেকে বেচেঁ ফিরতে পারবো। আল্লাহর রহমতে আমরা মামা-ভাগ্নে দুজনেই বেঁচে আছি।
পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ পুলিশের কাছে আসলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তাদের পরিবারের কেউ না আসলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত কমিটির গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা ও আহতদের চিকিৎসার সব রকমের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এ দিকে দুঘর্টনার কারণ জানতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে।