বহু প্রতীক্ষিত ‘মুজিব-একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রের প্রথম প্রদর্শনী হলো কানাডার বিশ্বখ্যাত টরন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। উৎসবে সিনেমাটির কমার্শিয়াল স্ক্রিনিংয়ের পর গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বাংলাদেশে সিনেমাটি কবে মুক্তি পাবে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে চ্যানেল আইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তথ্যমন্ত্রী জানান, ইতোমধ্যে ‘মুজিব’ এর সেন্সর হয়ে গেছে। আমরা আগামি মাস অর্থ্যাৎ অক্টোবরের যে কোনো সময় সিনেমাটি মুক্তি দেয়ার পরিকল্পনা করছি।
কানাডার স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে ‘বেললাইট বক্স সিনেমা ৭’ প্রেক্ষাগৃহে হয় ‘মুজিব’ এর উদ্বোধনী প্রদর্শনী। সিনেমার প্রথম এই শো’তে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাছান মাহমুদ। এছাড়া আরো ছিলেন কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার খলিলুর রহমান, বঙ্গবন্ধুর চরিত্রাভিনেতা আরিফিন শুভ, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার চরিত্রাভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া, ভারত থেকে আগত চিত্রনাট্যকার অতুল তিওয়ারি সহ অনেকে।
বিএফডিসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, যুগ্মসচিব কাউসার আহমেদ, উৎসব কর্মকর্তারা ও দেশি-বিদেশি দর্শকবৃন্দ প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় ভারতের শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত ‘মুজিব- একটি জাতির রূপকার’ প্রদর্শনীর আগে সিনেমার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বাঙালিদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর যে অদম্য সংগ্রাম, জাতির জন্য যে ত্যাগ, এই সিনেমার মাধ্যমে সেগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কীভাবে একটি জাতির রূপকার হলেন, এই সিনেমার মাধ্যমে তা নতুন প্রজন্ম জানবে, বিশ্ববাসী জানবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে নতুন প্রজন্ম জানে না কীভাবে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, বঙ্গবন্ধু কীভাবে ঘুমন্ত বাঙালি জাতিকে সশস্ত্র জাতিতে রূপান্তরিত করে প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছেন, নতুন প্রজন্ম সেভাবে তা জানে না।
মন্ত্রী বলেন, এমনকি ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড কীভাবে সংঘটিত হয়েছিল, সেটি যারা করেছে, তারা জানে আর দু’একজন যারা কোনো না কোনোভাবে রক্ষা পেয়েছিল, তারা সাক্ষী হয়ে আছে, অন্যরা জানে না। সেই মর্মান্তিক ঘটনাও এই সিনেমায় চিত্রায়িত করা হয়েছে, যদিও সেটি দেখা অত্যন্ত কষ্টকর। খুনীরা যে কী রকম নির্মম পাষাণ ছিল, সিনেমাতে সেটি প্রদর্শন করা হয়েছে।
পরিচালক শ্যাম বেনেগালের পক্ষে চিত্রনাট্যকার অতুল তিওয়ারি জানান, প্রাথিমকভাবে বাংলা ও হিন্দি ভাষায় ছবিটি মুক্তি পাবে এবং বিশ্বব্যাপী আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। প্রদর্শনী শেষে প্রবাসী বাঙালি এবং বিভিন্ন দেশের দর্শকরা সিনেমার নির্মাণশৈলীর প্রশংসা করেন।