এ বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ১০ জনকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ দিচ্ছে সরকার। শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
এরমধ্যে সংস্কৃতিতে গীতিকার, লেখক, চলচ্চিত্র কাহিনীকার মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান পাচ্ছেন দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক এই পুরস্কার। এদিন দুপুর আড়াইটার দিকে এই কিংবদন্তী গীতিকারের সাথে কথা হয় চ্যানেল আই অনলাইনের।
গীতিকারের মুঠোফোনটি প্রথমে রিসিভ করেন তার সহধর্মিণী। অনুভূতি প্রকাশ করে তিনি বলেন, দুপুর থেকেই একের পর এক ফোন আসছে আপনাদের ভাইয়ের কাছে। এখনও অন্য একটি ফোনে কথা বলছেন। শুভাকাঙ্ক্ষিরা ফোন করে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। এসময় তিনি বলেন, উনি কখনো পদক বা পুরস্কার আশায় কিছু লিখেননি। পুরস্কারের জন্য কখনো বিন্দুমাত্র আগ্রহও তার মধ্যে দেখিনি। তার কাজ সৃষ্টি করা, সেই শুরু থেকেই এই কাজটি অত্যন্ত একাগ্রতার সাথে করে গেছেন। হয়তো তারই প্রতিদান পেলেন আজ।
কথা বলতে বলতে এসময় তিনি ফোন ধরিয়ে দেন রফিকউজ্জামানের কাছে। অভিনন্দন জানাতেই বিনয়ের সুরে ‘ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়’ এর এই গীতিকার বলেন, কিছুক্ষণ আগে টিভিতে স্ক্রল দেখে ফোন করে একজন জানালেন আমি স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছি। এরপর অনেকেই ফোন করে শুভকামনা জানাচ্ছেন।
দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে এই গীতিকার বলেন, এখন অনুভূতি জানানো কি ঠিক হবে? আসলে আমাকে তো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কিংবা সরকার থেকে ফোন করে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।
‘সরকারি প্রজ্ঞাপনে নাম এসেছে’- এটুকু জানাতেই অসংখ্য কালজয়ী গানের এই স্রষ্টা বলেন,“ঠিকাছে, তবে এটুকু বলতে পারি, আমাকে কোনো সুপারিশ করতে হয়নি। কোনো আবেদন করতে হয়নি। আবেদন না করেও যে আমাকে এই মূল্যায়ন করা হয়েছে, তার জন্য আমি খুব খুশি। খুব আনন্দিত। সরকার দায়িত্ববোধ থেকে আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য ভেবেছেন, এজন্য আমি আনন্দিত।”
বাংলাদেশের অন্যতম গীতিকবি রফিকউজ্জামান একাধারে চলচ্চিত্রের কাহিনী-চিত্রনাট্য-সংলাপ রচয়িতা। তিনি ১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালে শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে এবং ২০০৮ সালে শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৭৩ সাল থেকে তিনি নিয়মিতভাবে চলচ্চিত্রের জন্য গান লিখছেন। প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের জন্য গান লিখেছেন তিনি। উইকিপিডিয়ার তথ্য বলছে, তার গানের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার।
অসংখ্য জনপ্রিয় গানের এই গীতিকার একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছাড়াও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) পুরস্কার, চ্যানেল আই পুরস্কার সহ বহু পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।