বয়স ৩৭ ছুঁই ছুঁই, অন্য দিকে চোট সমস্যা যেন পিছুই ছাড়ছে না। সে কারণেই কিনা ২৪ বর্ষী টেলর ফ্রিটজের সাথে সেমিতে উঠার লড়াইয়ে লড়তে হয়েছে সোয়া চার ঘণ্টা, ফল আসে টাইব্রেকের। বলছিলাম চলতি বছরে দুটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী নাদালের কথা।
সেমিতে উঠার কঠিন লড়াইয়ে প্রথম সেটেই ৩-৬ ব্যবধানে হেরে বসেন স্প্যানিশ কিংবদন্তি। এরপর দ্বিতীয় সেটে ৭-৫ ব্যবধানে জিতে ম্যাচে ফেরেন রাফা। পরের সেটে ৩-৬ ব্যবধানে জয় তুলে চমকে দেন ২৪ বর্ষী। এর পরের সেট জিতে ম্যাচ বাঁচিয়ে রাখেন নাদাল। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছেন রাফা। তুমুল লড়াইয়ে জয়টা হয়েছে তারই। ৭-৬ ব্যবধানে জিতে সেমিতে পা রাখেন তিনি।
ঘুরে দাঁড়ানোর দ্বিতীয় সেটে পেটের সমস্যায় কাতরাচ্ছিলেন নাদাল। পরে ম্যাচের মধ্যেই অবসর নেয়ার ঘোষণা দিতে নাদালকে পরামর্শ দিয়েছিলেন তার চিকিৎসকরা। সায় দেয়নি নাদাল। শেষ পর্যন্ত শেষটা রাঙিয়েছেন। ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন সেই মুহূর্তের কথা।
‘তারা আমাকে ম্যাচের মধ্যেই জানিয়েছিল আমার অবসর নেয়া প্রয়োজন। কিন্তু ম্যাচের মধ্যে অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়া আমার জন্য কঠিন ছিল। আর এটা এমন নয় যে, এমন পরামর্শ আমি নতুন পেলাম। আমার টেনিস জীবনে অনেকবারই এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। এটা এমন এক বিষয় যা আমি ঘৃণা করি। কাজেই আমি চালিয়ে যেতে চেয়েছি এবং সেটাই করেছি।’
‘সত্যি বলতে চিকিৎসা বিরতিতে খুব একটা কিছু করার ছিল না ডক্টরদের। ডক্টর আমার কাছে আসল এবং কিছু ব্যথা নাশক ঔষধ দিল, ফিজিও পেশিকে কিছুটা শিথিল রাখার চেষ্টা করলো, তবে এটা কঠিন ছিল। কোনো কিছুই চূড়ান্ত নয় যখন আপনি এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছেন। আমি কেবল নিজেকে একটি সুযোগ দিতে চেয়েছি। কেননা টুর্নামেন্টটি ছেড়ে দেওয়া আমার জন্য সহজ নয়। উইম্বলডন ছাড়া আমার জন্য সহজ নয় ব্যথা যতই তীব্র হোক না কেন।’ বলছিলেন ৩৬ বর্ষী রাফা।
চার মাসের ব্যবধানে নাদালের কাছে দ্বিতীয় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে ফ্রিটজের। বিএনপি পারিবাস ওপেনেও পাঁজরের চোট নিয়ে খেলেছিলেন নাদাল এবং হারিয়ে দিয়েছিলেন আমেরিকান তরুণকে। সেই ক্ষতে ফের আঘাত করলেন নাদাল। অস্ট্রেলিয়া ওপেন জয়ের পর রোল্যান্ড গ্যারোস জিতেছেন এখন তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে উইম্বলডন। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নিক কিরগিওসের বিপক্ষে কোর্টে নামবেন রাফা। তার আগে ফিটনেসে জোর দিতে হবে তাকে জানিয়েছেন সেটি।
‘আমি জয়-পরাজয় নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয়। তবে জিততে পছন্দ করি। লড়াই করেছি। আমি লড়াইয়ের মনোভাব নিয়ে গর্বিত এবং সেই পরিস্থিতিতে যেভাবে প্রতিযোগিতামূলক হতে পেরেছি তাতে আমি খুশি। আগামীকাল কিছু পরীক্ষা করতে যাচ্ছি। নিঃসন্দেহে, আজকের দিনটি সবচেয়ে খারাপ ছিল। ব্যথা এবং সীমাবদ্ধতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এই মুহূর্তে উইম্বলডন জেতার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল স্বাস্থ্য। দেখা যাক কিভাবে তা নিশ্চিত করা যায়।’