কাতার বিশ্বকাপে প্রতিবাদ জানানোর জন্য খেলোয়াড়দের উপর ‘অত্যধিক চাপ’ রয়েছে। ফ্রান্স অধিনায়ক হুগো লরিসের ভাষ্য এমনই। চাপ প্রয়োগে অনেক দেরি হয়ে গেছে বলেও মত বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দলনেতার।
এমনিতে শুরুর আগে থেকেই অভিবাসীদের প্রতি নেতিবাচক আচরণ, বিধিনিষেধমূলক সামাজিক আইন এবং সমকামীদের ইস্যু নিয়ে তীব্র চাপের মধ্যে পড়েছে কাতার। দেশটিতে বিশ্বকাপে অংশ নিতে চলা অনেক দলই সেসব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্রতিবাদটা বহাল থাক, সেটিও চাচ্ছে অনেক দেশই, লরিসের কথায় উঠে এলো সেটাই।
‘আপনাকে যদি চাপ প্রয়োগ করতেই হয়, সেটা ১০ বছর আগে হতে হবে। এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। বুঝতে হবে যে খেলোয়াড়দের জন্য বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ প্রতি চার বছরে একবার ঘটে। যদি প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগিয়ে সফল হতে চান, মাঠে মনোযোগ রাখতে হবে। বাকিটা রাজনীতিবিদদের ব্যাপার। আমরা ক্রীড়াবিদ।’
গত মাসে অস্ট্রেলিয়া ফুটবল দল মানবাধিকার এবং সমকামীদের বিষয়ে কাতারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কথা বলেছিল। ডেনমার্কের খেলোয়াড়রা আয়োজকদের মানবাধিকার পরিস্থিতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে পরিবার ছাড়াই বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এমাসের শুরুর দিকে অংশ নিতে চলা দেশগুলোকে ফুটবলে মনযোগী হতে এবং আয়োজক দেশকে ঘিরে রাজনীতিতে মনোনিবেশ না করার আহ্বান জানিয়েছে ফিফা। লরিস ফিফার এ কথার সঙ্গে একমত।
‘সত্যি বলতে, ফিফার মনোভাবের সঙ্গে একমত পোষণ করছি। খেলোয়াড়দের উপর খুব বেশি চাপ রয়েছে। আমরা চেইনের নিচে পড়েছি।’
অভিবাসী শ্রমিক নিপীড়নের অভিযোগ আয়োজক কাতারের বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই। অবকাঠামো নির্মাণে কয়েক হাজার শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে নানা সময় খবর এসেছে। শ্রম সুরক্ষায় বাড়তি নজর না দিয়ে উল্টো শ্রমিকদের কম পারিশ্রমিকে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ। মানবাধিকার সংস্থাগুলো নিপীড়িত শ্রমিকদের ৪৪০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছিল ফিফাকে।
অন্যদিকে কাতারে সমকামীতাকে অপরাধ হিসেবে দেখা হয়। জানানো হয়েছে, টুর্নামেন্টে সমকামীদের উপস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠে তাদের প্রতীকী রংধনু পতাকা ওড়াতে দেয়া হবে না। সুইডেন ও ডেনমার্কের সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, দেশটিতে হোটেল সুবিধা পেতেও ধকল পোহাতে হবে সমকামীদের।