ইরানের কোচ কার্লোস কুইরোজ বলেছেন, কাতার বিশ্বকাপে খেলার সময় ইরানের খেলোয়াড়রা তাদের দেশে চলা নারী অধিকার নিয়ে বিক্ষোভে যোগ দেয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবেন। কিন্তু টুর্নামেন্টের নিয়মের মধ্যেই তা করতে হবে।
গত সেপ্টেম্বরে দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলার সময় ইরানের খেলোয়াড়রা জাতীয় দলের ব্যাজ ঢেকে রেখেছিলেন। এটিকে বিক্ষোভের সমর্থনের চিহ্ন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।
কুইরোজ বলেছেন, ‘আপনি ফুটবল খেলার মাঠেও নিজেকে প্রকাশ করতে পারেন। খেলোয়াড়দের মনে শুধু একটি বিষয় আছে। সেটি হল দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার যোগ্যতা অর্জনের লড়াই করা।’
নারীদের দমন করে এমন একটি দেশের কোচের দায়িত্ব পালনে আপনি কতটা গর্বিত? এ সময় উত্তেজিত হয়ে ইরানি কোচ পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘এ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য আমাকে কত বেতন দেবেন?’
বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফা খেলোয়াড়-দল এবং সমর্থকদের প্রতিবাদ-স্লোগানে জড়িত থাকার বিরোধিতা করে। গতবছর থেকে অবশ্য প্রতিবাদের প্রতি তারা সহনশীল মনোভাব নিয়েছে।
পুলিশি হেফাজতে ২২ বর্ষী মাশা আমিনির মৃত্যুর কারণে ইরানে বিক্ষোভে গত দুমাসে ৩৪৪ জন নিহতের খবর এসেছে। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৫ হাজারের বেশি নাগরিককে।
১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পর নারীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। মাশা আমিনী হিজাব ঠিকমতো পরেননি, এমন কারণ দেখিয়ে দেশটির নৈতিকতা পুলিশ তাকে আটক করেছিল। পুলিশ হেফাজতেই তার মৃত্যু হয়। এরপর থেকে চলছে বিক্ষোভ।
কাতার মিশন নিয়ে কুইরোজের ভাষ্য, ‘ইংল্যান্ড, ওয়েলস এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে থাকায় বি-গ্রুপটি কঠিন, তবুও ইরান দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌঁছানোর লক্ষ্য স্থির করেছে। তারা শুধুমাত্র ইতিহাসের অংশ হতে চায় না, ইতিহাস তৈরি করতেও চায়।’
আসছে সোমবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে ইরান। আগের চার বিশ্বকাপেও ইরানের কোচের দায়িত্বে থাকা কুইরোজ ইংল্যান্ডকে হারানো অসম্ভব মনে করছেন না। আবার প্রতিপক্ষের প্রতি রাখছেন যথার্থ সম্মানও।