বড় দলগুলো যখন পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ ও ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ার অভিজ্ঞতার সম্মুখীন, তখন গোল উৎসবে মেতে উঠল স্পেন। কোস্টারিকার জালে ৭ গোলে দিয়ে কোনো গোল হজম না করেই বিশ্বকাপ শুরু করেছে লুইস এনরিকের দল। বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচে এটাই তাদের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড।
বুধবার আল সুমামা স্টেডিয়ামে ই-গ্রুপের ম্যাচটিতে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেয় স্পেন। পঞ্চম মিনিটে তারা গোল পেতে পারত। পেদ্রির পাসে বল নিয়ে দানি ওলমোর শটে পরাস্ত হন কোস্টারিকার গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। কিন্তু বল পোস্টের পাশ দিয়ে চলে যায়।
চার মিনিট পর আফসোসে পোড়েন মার্কো আসেনসিও। তার কিক পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। গোলের জন্য স্প্যানিয়ার্ডদের অপেক্ষা যদিও লম্বা হয়নি। ১১ মিনিটে গ্যাভির চিপ শটে বক্সের ভেতর বল পান ওলমো। গোলরক্ষক নাভাস এগিয়ে এসে বল ধরতে চেষ্টা করেন নাভাসের বাঁ-দিকে হালকা ভলিতে ওলমো লক্ষ্যভেদ করেন। তাতে বিশ্বকাপের ইতিহাসে নিজেদের ১০০তম গোলের দেখা পেয়ে যায় স্পেন।
ম্যাচের ২১ মিনিটে জর্ডি আলবার ক্রসে বল নিয়ে বাঁ-পায়ের শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মার্কো আসেনসিও। দশ মিনিট পর আলবাকে বক্সের ভেতর ফাউল করলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। ৩১ মিনিটে স্পট কিক থেকে নিশানাভেদ করেন ফেররান তরেস।
বিরতির পর তরেস আবারও গোলের দেখা পান। ৫৪ মিনিটে দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দেয়ার পর নাভাস এগিয়ে আসা মাত্র বল ঠেলে দেন জালে। স্পেনের জার্সিতে এটি তার ১৫তম গোল।
যখন তরেসের হ্যাটট্রিকে নজর সবার, তখনই তাকে তুলে নেন কোচ এনরিকে। বদলি নামান আলভারো মোরাতাকে।
খেলার ৭৫ মিনিটে কড়া মার্কিংয়ে থাকা মোরাতা প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের দর্শক বানিয়ে বক্সের ভেতর বল বাড়িয়ে দেন। বিন্দুমাত্র দেরি না করে বল ধরেই ডান পায়ের শটে জালে জড়ান গ্যাভি। স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৫-০।
এই গোলে স্পেনের হয়ে গড়েছেন রেকর্ডও। বিশ্বকাপ ইতিহাসে লা রোজাদের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গোলের কীর্তি গড়লেন ১৮ বর্ষী গ্যাভি। বসেছেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলেন পরের আসনেও। ১৭ বছরের পেলে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে ১৯৫৮ বিশ্বকাপে গোল করেছিল। তার পরেই এখন তিনি।
নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে বদলি খেলোয়াড় নিকো উইলিয়ামসের শট ঠেকিয়েছিলেন নাভাস। নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। ফিরতি বলে শট নিয়ে গোল আনেন কার্লোস সোলের।
যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ওলমোর সঙ্গে বল দেয়া-নেয়া করে বাঁ-পায়ের গড়ানো শটে কোস্টারিকার জালে শেষ পেরেকটি ঠোকেন মোরাতা।
পেরেকই বটে! ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম কোনো দল হিসেবে পুরা খেলায় অন টার্গেটে কোনো শট নিতে পারেনি কোস্টারিকা।