সকালের সূর্য দেখলে বোঝা যায় দিনটি কেমন যাবে- কথাটি বিশ্বকাপের ২২তম আসরে কতটা বাস্তবে প্রমাণিত হবে তা সময়ই বলবে। তবে রেকর্ড দিয়ে শুরু হওয়া আসরে যে একের পর এক রেকর্ডের দেখা মিলতে পারে, সেটির আলামত দিয়ে রাখল ইকুয়েডর। স্বাগতিক কাতারকে ২-০ গোলে হারিয়ে হরেক রেকর্ডের মঞ্চে তারা জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।
দুটি গোল করেছেন এনার ভ্যালেন্সিয়া। তাতে দেখা মিলেছে বেশকিছু রেকর্ডের। স্বাগতিকরা বিশ্বকাপে আগের ২১ আসরে উদ্বোধনী খেলায় কখনোই হারেনি। জিতেছে কিংবা ড্র করেছে। সেই রেকর্ড ভেঙে হারের মুখ দেখল কাতার।
রোববার রাতে আল বাইত স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে রেফারির বাঁশিতে ফুঁ দেয়ার খানিক পরই আলোচনার খোরাক হয়ে এসেছে ভিএআর। তিন মিনিটের মাথায় ভ্যালেন্সিয়া হেডে বল জালে জড়িয়ে ইকুয়েডরকে আনন্দে ভাসিয়েছিলেন। রেফারি ভিএআরের সাহায্য নিয়ে অফসাইডের সংকেত দেন। গোল হয় বাতিল।
ম্যাচের ১৬ মিনিটে ভ্যালেন্সিয়াকে আর খালি হাতে ফিরতে হয়নি। বক্সের ভেতর ক্ষিপ্র গতিতে ছুটে যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের সাদ আল সিব তাকে ফাউল করে বসেন। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পট কিকে গোলরক্ষকের ডাইভের বিপরীতে গড়ানো শটে গোল করেন ইকুয়েডর অধিনায়ক।
বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার আসরের প্রথম গোলটি পেনাল্টিতে এলো। ইকুয়েডরের এনার ভ্যালেন্সিয়া রেকর্ডের অনন্য নজিরটি গড়লেন।
খেলার ২০ মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারত। পারভিস এস্তুপিনানের পাসে বল পেয়ে হেডে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন মাইকেল এস্ত্রাদা।
পরে ৩১তম মিনিটে আবারও ভ্যালেন্সিয়া ম্যাজিক। অ্যাঞ্জেলো প্রিসিয়াদোর ক্রসে বল পেয়ে বাঁ-প্রান্তে থাকা অধিনায়ক লাফিয়ে কোনাকুনি হেডে চোখ ধাঁধানো লক্ষ্যভেদ করে আলো কাড়েন। একইসঙ্গে জোড়া গোলে ভ্যালেন্সিয়া এখন ইকুয়েডরের হয়ে ৫ গোল করে বিশ্বকাপে সর্বাধিক গোলদাতাও। অগাস্টিন ডেলগাডোর করা তিন গোলের রেকর্ড টপকে গেছেন।
বিরতির আগের যোগ করা সময়ে পঞ্চম মিনিটে হাসান আল হেইদৌসের ক্রসে হেডে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন কাতারের আলমোয়েজ আলীও।
ম্যাচের ৫৫ মিনিটে রোমারিও ইবারার বক্সের বাইরে থেকে নেয়া ডান পায়ের শট দারুণভাবে প্রতিহত করেন কাতারের গোলরক্ষক। সাত মিনিট পর আবারও হেডে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে কাতার। সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি পেদ্রো মিগুয়েল।
বাকি সময়ে আর কেউ জালের দেখা না পাওয়ায় প্রথমার্ধে পাওয়া দুই গোলেই আসে ফলাফল। ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইকুয়েডর। সেই পথে গোটা ম্যাচে রেফারিকে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়েছে। ৩০ বার ফাউলের বাঁশি বাজিয়েছেন। পকেট থেকে ছয়বার বের করেছেন হলুদ কার্ড।