ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো স্বপ্নের শিরোপার পথে এগোচ্ছেন, দুর্দান্ত ফুটবল খেলে পর্তুগাল আছে শেষ চারের দৌড়ে। আফ্রিকার ইতিহাসে চতুর্থ দেশ হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা মরক্কো প্রমাণ করে চলেছে নিজেদের। প্রথমবারের মতো শেষ চারে উঠতে ওয়ালিদ রেগ্রাগুইয়ের শিষ্যদের হারাতে হবে শিরোপার স্বপ্ন দেখা পর্তুগিজদের।
শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় আল সুমামা স্টেডিয়ামে বসবে আসরের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল। লড়বে পর্তুগাল ও মরক্কো। রাত একটায় আরেক খেলায় ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের জয়ী দলটি হবে ফাইনালে ওঠার পথে জয়ী দলটির বাধা। আগেও দুবার সেমিতে খেলা পর্তুগিজদের সামনে আরেকবার নিজেদের রেকর্ড ছোঁয়ার পথ। হাকিম জিয়েচ-আশরাফ হাকিমিদের সামনেও বড় সুযোগ।
জিতলে শেষ চারে, এমন উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ের আগে বিশ্বকাপে পারফর্ম ও ইতিহাসে অনেকটা সমানে সমান পর্তুগাল ও মরক্কো। শক্তি-সামর্থ্যও দিচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস। বর্তমানে ফিফা টেবিলের ৯ নম্বরে পর্তুগাল। বিপরীতে মরক্কো ২২তম স্থানে।
পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দুবার দেখা হয়েছে এ দুদলের। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বে ৩-১ গোলে বাজিমাত করেছিল মরক্কো। ২০১৮ সালে দারুণ এক জয়ে শোধ তুলেছিল রোনালদোর দল। ১-০ গোলের সেই জয়টিও ছিল গ্রুপপর্বে। এবার শেষ চারে ওঠার লড়াইয়ে নিজেদের পাল্লা ভারি করার লড়াই উভয়ের।
নকআউট পর্বে ইউরোপিয়ান দলের বিপক্ষে বরাবরই একটু পেছনে থাকে আফ্রিকান দলগুলো। এখন পর্যন্ত ১১ বার মুখোমুখি দেখায় আফ্রিকান দলগুলো হেরেছে ৯ বার। জয় পাওয়া দুবারের একটি আবার কাতার বিশ্বকাপেই। সেই অসাধ্য সাধনের কাজটা লুইস এনরিকের দলকে টাইব্রেকারে হারিয়ে সেরেছে মরক্কো। আগে শেষ ষোলোর ম্যাচে ২০০২ বিশ্বকাপে সুইডেনকে হারিয়ে দিয়েছিল সেনেগাল।
পর্তুগালকে হারাতে পারলে সংখ্যাটি বাড়িয়ে নেয়ার পাশাপাশি প্রথম কোনো আফ্রিকান দল হিসেবে শেষ চারে ওঠার কীর্তিও গড়বে মরক্কো। আগে শেষ আটে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ১৯৯০ সালে ক্যামেরুনের, ২০০২ সালে সেনেগাল এবং ২০১০ সালে ঘানার। নিজেদের ইতিহাসের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা ইউরোপিয়ান পর্তুগাল জয় পেলে তৃতীয়বার শেষ চারের স্বাদ পাবে।
ফের্নান্দো সান্তোসের দলও আছে দুর্দান্ত সাফল্য নিয়ে। অবশ্য বিশ্বকাপে অপরাজিত থেকে শেষ আট নিশ্চিত করেছে মরক্কো। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গ্রপপর্বে ড্র করার পর কানাডা ও বেলজিয়ামকে হারিয়ে নিশ্চিত করে শেষ ষোলো। সেখানে টাইব্রেকারে ৩-০ ব্যবধানে হারায় স্পেনকে। বিশ্বকাপে এটিই তাদের সর্বোচ্চ অপরাজিত থাকার ধারা।
সাউথ কোরিয়ার সঙ্গে হেরে গেলেও গ্রুপসেরা হয়ে শেষ ষোলোতে উঠেছিল পর্তুগাল। সেখানে সুইজারল্যান্ডকে হারিয়ে পড়েছে মরক্কোর সামনে। এখন পর্যন্ত আসরে ১২টি গোল করেছেন রোনালদো-রামোসরা। তাদের সামনে ১৯৬৬ সালে গড়া ১৭ গোলের রেকর্ড ভাঙার হাতছানি। ফের্নান্দোর ৮ শিষ্য খুঁজে নিয়েছেন জাল, এরমাঝে গনসালো রামোস পেয়েছেন কাতার বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিকের দেখা।
পর্তুগিজদের জয়ে চলতি বিশ্বকাপে অন্যতম ভূমিকা রাখছেন ব্রুনো ফের্নান্দেস। এখন পর্যন্ত ৫টি গোলে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন এ মিডফিল্ড তারকা, যা নিজ দলের হয়ে রেকর্ড। মরক্কোর হয়ে দুর্দান্ত থাকা হাকিম জিয়েচও আছেন রেকর্ডের সামনে। একটি করে গোল ও অ্যাসিস্ট করা তারকা ফরোয়ার্ড দলের নেয়া ৩০টি শটের দশটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সুযোগ তৈরিতেও পারদর্শী জিয়েচ ব্যবধান গড়ে দিতে পারেন যেকোনো সময়ে।