চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বিশ্বকাপে সমকামীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ কাতার

এবারের বিশ্বকাপের আয়োজক কাতারে সমকামীতাকে অপরাধের চোখে দেখা হয়। আগেই জানানো হয়েছে, টুর্নামেন্টে সমকামীদের উপস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠে তাদের প্রতীকী পতাকা রংধনু উড়তে দেয়া হবে না। সুইডেন ও ডেনমার্কের সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, দেশটিতে হোটেল সুবিধা পেতেও সমকামীদের ধকল পোহাতে হবে।

নতুন খবর, সমকামী যারা কাতারে বিশ্বকাপ উপভোগ করতে যাবেন, তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে দেশটির কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্বে থাকা সুপ্রিম কমিটিকে সমকামী ও তাদের সমর্থকরা কয়েকটি প্রশ্ন করেছিল। সেসব প্রশ্নের নির্দিষ্ট কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।

পত্রিকাটির যেসব প্রশ্নে কোনো উত্তর মেলেনি- সমকামীরা যৌনতার কারণে হুমকির সম্মুখীন হলে কাতারি কর্তৃপক্ষ তাদের সুরক্ষা দেবে? কাতারের পেনাল কোডের ধারাগুলোতে বলা আছে, একজন পুরুষকে যেকোনো উপায়ে যৌনতায় প্ররোচিত করা বা প্রলুব্ধ করা বেআইনি। টুর্নামেন্ট চলাকালীন আইনটি স্থগিত করা হবে কিনা?

রংধনু পতাকা বহনকারী সমর্থকদের স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে? সুপ্রিম কমিটি বিশেষভাবে সমকামীদের বিশ্বকাপ দর্শক হিসেবে স্বাগত জানাবে?

কাতারের সরকারি যোগাযোগ দপ্তরের একজন প্রতিনিধির সঙ্গে প্রথম দুটি প্রশ্নের উত্তর জানতে যোগাযোগ করেছিল পত্রিকাটি। কোনো সাড়া মেলেনি।

আয়োজকদের সাথে কথোপকথন চালাতে না পারায় সমকামী ও তাদের সমর্থক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। এলজিবিটিআইকিউ হিউম্যান রাইটস স্পোর্টস কোয়ালিশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অ্যান লিবারম্যান বলেছেন, গ্রুপটি প্রায় দুই বছর ধরে কাতারের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনায় ছিল। কিন্তু এখনো সুস্পষ্টভাবে নিরাপত্তার আশ্বাস পায়নি।

বর্তমান পরিস্থিতিতে আয়োজক দেশটির কর্তৃপক্ষ সমকামী ও তাদের সমর্থক গোষ্ঠীগুলোর বিষয়ে সরাসরি মন্তব্যে অনিচ্ছুক। ফলে সমর্থক গোষ্ঠীগুলো সমর্থকদের টুর্নামেন্ট বয়কট করার পরামর্শ দিচ্ছে।

ফিফা অবশ্য গার্ডিয়ানকে বলেছে, তারা বিশ্বাস করে যে সমর্থকদের নিরাপত্তা এবং আইনের প্রয়োগের বিষয়ে কাতার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যথেষ্ট আশ্বাস পাওয়া গেছে। যদিও নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যাপারে ফিফা কেমন আশ্বাস পেয়েছে সেটির কোনো সুনির্দিষ্ট বিবরণ দেয়নি।

সুপ্রিম কমিটি আগে বলেছিল, ‘জাতি, পটভূমি, ধর্ম, লিঙ্গ, যৌন অভিমুখীতা বা জাতীয়তা, নির্বিশেষে সবাইকে ২০২২ সালে কাতারে স্বাগত জানানো হবে। আমরা একটি অপেক্ষাকৃত রক্ষণশীল সমাজ। উদাহরণস্বরূপ, জনসাধারণকে অনুরাগ প্রদর্শন আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়। আমরা একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধায় বিশ্বাসী এবং তাই প্রত্যেককে স্বাগত জানাই। বিনিময়ে আমরা যা আশা করি তা হল, সবাই আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে সম্মান করবে।’