চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

জবাব দিয়েছি, বাংলাদেশ পারে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে যারা বাধা দিয়েছিল তাদের একটা জবাব আমরা দিয়েছি, তাদের উপযুক্ত একটা জবাব পদ্মা সেতুর মধ্য দিয়ে দিতে পারলাম যে বাংলাদেশ পারে।

শনিবার ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন শেষে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে আয়োজিত জনসভায় যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

শনিবার দুপুর ১টার আগেই তিনি সমাবেশস্থলে পৌঁছান। সভা মঞ্চে উঠে হাত নেড়ে উপস্থিত সবাইকে অভিবাদন জানান তিনি।সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার একমাত্র শক্তি আপনারা, বাংলার জনগণ। জনতার শক্তি নিয়েই কাজ করেছিলাম। আর কষ্ট করতে হবে না। এই পদ্মা পার হতে গিয়ে সন্তানহারা হতে পারবে না। ৭ মার্চের ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিল বাঙালিকে দাবায়া রাখতে পারবে না। বাঙালি কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি, পারবে না, ভবিষ্যতেও পারবে না। জীবিকার ব্যবস্থা করেছি। এখানেও বিশেষ অঞ্চল হবে।

স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা করোনা টিকার ব্যবস্থা করেছি, এখন বুস্টার ডোজ চলছে। আপনারা সবাই টিকা নিবেন, স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলবেন।

কাঁঠালবাড়ির সভাস্থলটি ১১টি পিলারের ওপর ১০টি স্প্যানবিশিষ্ট একটি প্রতীকী অস্থায়ী পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে জমকালোভাবে সাজানো হয়েছে। প্রতীকী সেতুর সামনে উদ্বোধনী মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। অস্থায়ী সেতুটি ২০০ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট চওড়া।

মঞ্চটি ১৫ ফুট লম্বা এবং ৪০ ফুট চওড়া। মঞ্চের সামনে একটি ৬০ ফুট লম্বা বিশালাকার নৌকা পানিতে ভাসছে। এ ছাড়া সেখানে বেশ কিছু ছোট নৌকাও রয়েছে। প্রায় ১৫ একর জায়গার ওপর ভেন্যু প্রস্তুত করা হয়েছে।

ভোর থেকেই দেশের দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসতে শুরু করে সভাস্থলে। খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা, বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী থেকে বাস ও লঞ্চযোগে জনসভাস্থলে আসে লোকজন।

জনসভাস্থলে উপলক্ষে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠান মঞ্চ প্রাঙ্গণে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে দেড় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্য, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট এবং এসএসএফ সদস্যরা অনুষ্ঠানস্থলে কাজ করছেন।

এর আগে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় যোগাযোগ প্রকল্প পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। সেতুর মাওয়া প্রান্তে টোল পরিশোধ শেষে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে তিনি ‘জয় বাংলা’ বলে স্লোগান দেন। পরে জাজিরা প্রান্তে পৌঁছে সেতু ও ম্যুরাল-২ এর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন।

এর আগে সকাল ১০টা ৫ মিনিটে পদ্মা সেতুর থিম সং পরিবেশনের মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এর আগে সেতু উদ্বোধন করতে হেলিকপ্টারে পদ্মার মাওয়া প্রান্তে পৌঁছান শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা।

সকাল ১০টায় সভা মঞ্চে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এর আগে সাড়ে ৯টায় তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা তার সঙ্গে ছিলেন।