গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে শাহবাগ থানায় করা মামলায় কী পদক্ষেপ নেয়া হবে, তা পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গণঅধিকার পরিষদ বলছে, সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা বিভিন্ন ভাবে দলের ভেতরের কিছু লোককে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদকে ভাঙার চেষ্টা করছে। নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে মামলার এ আবেদন একই সূত্রে গাঁথা।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন শুক্রবার ৭ জুলাই এই মামলার আবেদন করেছেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ বলেন, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলার যে আবেদনটি করা হয়েছে, সে বিষয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এছাড়া এ বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে থানা পুলিশ কথা বলবে। সে অনুযায়ী এ বিষয়ে থানা পুলিশ পদক্ষেপ নিবে।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদনে বলা হয়, নুরুল হক নুর হজ করার কথা বলে বিদেশে সফরে গিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অস্বীকৃত ইসরায়েল রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকার উৎখাতের জন্য দেশবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফের নাম করে বিদেশে গিয়ে ইহুদি চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নুরুল হক নুর প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্র, সরকার ও পবিত্র ধর্ম ইসলামের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির হীন চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।
আবেদনে আরও বলা হয়, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়ার বক্তব্যে ইসরায়েলের মোসাদের সঙ্গে নুরুল হক নুরের যোগাযোগ ও আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। সম্প্রতি ডিবিসি ও সময় টিভিতে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিদ্রোহী জঙ্গিগোষ্ঠী কুকি চিনের সঙ্গে নুরুল হক নুরের যোগাযোগ রয়েছে, যা দেশের প্রচলিত আইন পরিপন্থি এবং রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। তাই, তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১২৪(ক), ১২০(খ) ও ৫০৬ ধারায় মামলা নথিভুক্ত করতে আবেদন করা হচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ সাধারণ আল মামুন বলেন, মোসাদের সঙ্গে নুরুল হক নুরের যোগসূত্র ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া তিনি নানাভাবে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। তাই তার বিরুদ্ধে আজ আমি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন করেছি। আশা করি, মামলাটি গ্রহণ করা হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, কয়েকদিন ধরে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা বিভিন্নভাবে দলের ভেতরের কিছু লোককে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদকে ভাঙার চেষ্টা করছে। একই সময়ে সরকারও বিভিন্নভাবে প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। শাহবাগ থানায় যে মামলার আবেদন করা হয়েছে, তা চলমান ষড়যন্ত্রেরই অংশ। গণঅধিকার পরিষদের অভ্যন্তরীণ যে সংকট আর সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে মামলার এ আবেদন একই সূত্রে গাঁথা।
নুরদের কার্যালয় ছাড়ার নোটিশ
রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত প্রিতম-জামান টাওয়ারে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়ার নোটিশ দিয়েছে ভবন কর্তৃপক্ষ।শুক্রবার ৭ জুলাই ৭৩/২ পুরানা পল্টনের জামান টাওয়ারের ৬ষ্ঠ তলার এ কার্যালয় ছাড়ার নোটিশ দেন জমির মালিকের পক্ষে মো. রাশিদুল আজিম মিয়া।
কার্যালয় ছাড়ার নোটিশে বলা হয়, বর্তমানে আপনাদের দলে অন্তঃকলহ ও কাউন্সিল নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে নানা রকম দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এ ভবনের অন্যান্য শতাধিক ব্যবহারকারী এ মর্মে আতংকিত ও ভীত। তাছাড়া ভবনের সমিতির পক্ষে থেকে ও আমাদের এ ব্যাপারে সর্তক থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ বর্তমান পরিস্থিতিতে ভবনের নিরাপত্তা বিঘ্ন হতে পারে বিধায় আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে অফিস খালি করে দেওয়ার অনুরোধ রইল।
গণঅধিকার পরিষদ জানিয়েছে, ভাড়ার শর্ত অনুযায়ী কার্যালয় ছাড়তে হলে ৬ মাস আগে জানাতে হবে। তারা আমাদের এ বিষয়ে ৭ জুলাই জানিয়েছেন, তাই আমরা এখন কার্যালয় খুঁজব। তারপর ছেড়ে দেবো। সুতরাং তারা নোটিশ দিলেই কার্যালয় ছেড়ে দেওয়া হবে, বিষয়টা এমন নয়। প্রয়োজনে আমরা আইনের আশ্রয় নেব।