জালিয়াতির অভিযোগে ফিফার সাবেক প্রেসিডেন্ট সেপ ব্লাটার ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মিশেল প্লাতিনি যখন সাজা ভোগের প্রহর গুনছিলেন, তখনই পেলেন সুখবর। আদালত তাদের নির্দোষ বলে রায় দিয়েছেন।
শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের আদালতে উপস্থিত হয়ে রায় শোনার পর ব্লাটার বলেন, ‘আমি আমার জীবনের সবকিছুতে নির্দোষ নই। তবে এই ক্ষেত্রে আমি নির্দোষ।’
রায়ের পর প্লাতিনি বলেছেন, ‘আমি আমার সকল প্রিয়জনের জন্য আমার আনন্দ প্রকাশ করতে চাই। সাত বছরের মিথ্যা ও কারসাজির পর অবশেষে সঠিক বিচার হয়েছে। আমার লড়াই অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আমি প্রথম ম্যাচে জিতেছি।’
‘এক্ষেত্রে এমনকিছু অপরাধী আছে, যারা এই বিচারের সময় হাজির হয়নি। তারা আমার উপর নির্ভর করুক, আমরা আবার দেখা করব। কারণ আমি হাল ছাড়ব না এবং সত্যের সন্ধানে যাব। বিশ্বাস করুন, বিশ্ব ফুটবলের কিংবদন্তি থেকে শয়তান হয়ে যাওয়া খুব কঠিন। বিশেষ করে যখন এটি আপনার কাছে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আসে।’
২০২০ সালে সকার ওয়ার্ল্ড বডির করা এক অভিযোগের ভিত্তিতে জুরিখের আদালতে বিচার শুরু হয় ব্লাটার-প্লাতিনির।
প্রসিকিউটররা ব্লাটারের বিপক্ষে অভিযোগ এনেছিলেন, তিনি ১৭ বছর ধরে ফিফার নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং প্লাতিনিকে ২০১১ সালে ২.২ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঙ্ক দিয়ে ফিফার জন্য বেআইনি কাজ করেছিলেন।
ব্লাটার তখন বলেছিলেন, অর্থ দেয়ার বিষয়টি ছিল জেন্টলম্যান্স এগ্রিমেন্ট। ১৯৯৮ সালে প্লাতিনিকে নিজের প্রযুক্তিগত উপদেষ্টা হতে বলেছিলেন ব্লাটার।
৮৬ বর্ষী ব্লাটারের বিরুদ্ধে ফিফা ওয়ার্ল্ড ফুটবল মিউজিয়ামের অব্যবস্থাপনা নিয়েও অভিযোগ উঠেছিল। একই অভিযোগ ছিল তার সময়কার ফিফা মহাসচিব জেরোম ভালকের দিকেও। এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সুইজারল্যান্ডের আর্থিক সংবাদের একটি ওয়েবসাইট।
ফ্রান্সের সাবেক অধিনায়ক প্লাতিনির বিরুদ্ধেও আছে একাধিক অভিযোগ। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে আগে পাঁচ বছরের শাস্তি পেয়েছেন উয়েফার সাবেক সভাপতি।
গত মাসে বেলিনজোনার সুইস ফেডারেল আদালতে শাস্তি পান ৬৭ বর্ষী প্লাতিনি। দুর্নীতির অভিযোগে ফিফাকে ২.২ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঙ্ক ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রসিকিউটর থমাস হিল্ডব্র্যান্ড।
ব্লাটার ও প্লাতিনি সবসময়ই তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। ২০১৫ সালে তাদেরকে ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
২০১১ সালে প্লাতিনিকে সাবেক ফিফা সভাপতি ব্লাটারের অর্থ দেয়ার বিষয়ে তাদের ১১ দিনের বিচার কাজ সুইজারল্যান্ডের বেলিনজোনার ফেডারেল ফৌজদারি আদালতে চলছিল, যা ২২ জুন শেষ হয়।