ওয়ানডে বিশ্বকাপের গত আসরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সুপার ওভারে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছিল নিউজিল্যান্ডের। ভারত বিশ্বকাপে উদ্বোধনী ম্যাচে সেই ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে রানার্সআপ হওয়া দলটি। কনওয়ে ও রাচিনের জোড়া সেঞ্চুরিতে ফাইনালে পরাজয়ের বদলা নিল নিউজিল্যান্ড। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেটের বড় জয় দিয়েই আসর শুরু করেছে কিউইবাহিনী।
আহমেদাবাদে টসে জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটে পাঠান নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম ল্যাথাম। নির্ধারিত ওভার শেষে ৯ উইকেটে ২৮২ রান তোলে জশ বাটলারের দল। জবাবে নেমে ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্রের ২৭৩ রানের জুটিতে ৩৬.২ ওভারে ৯ উইকেট ও ৮২ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে নোঙর করে নিউজিল্যান্ড।
ইংল্যান্ডের সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে রানের খাতা না খুলেই বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন উইল ইয়াং। মাত্র ১০ রানে প্রথম উইকেট হারালেও দলকে চাপমুক্ত করেছেন ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র।
দ্রুতগতিতে রান তুলেছেন দুই কিউই ব্যাটার। ২৬.১ ওভারে ১৩টি চার ও দুই ছক্কায় ৮৩ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কনওয়ে।
সমান তালে রান তুলতে থাকা রাচিনকেও সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে অপেক্ষা করতে হয়নি বেশিক্ষণ। ৩১তম ওভারের চতুর্থ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরির দেখা পান রাচিন। ৯টি চার ও চার ছক্কায় ৮২ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন।
এরপর জয়ের জন্য খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি কিউইদের। ৩৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে জয় নিশ্চিত করেন কনওয়ে ও রাচিন। ১৯টি চার ও তিন ছক্কায় ১২১ বলে ১৫২ রান করেছেন কনওয়ে। ১১টি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ৯৬ বলে ১২৩ রানে অপরাজিত ছিলেন রাচিন।
ইংলিশদের হয়ে একমাত্র উইকেটটি নিয়েছেন স্যাম কারেন।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটে নেমে দলীয় ৪০ রানে ভাঙে ইংলিশদের ওপেনিং জুটি। হেনরির অফস্টাম্পের বাইরের বলে খেলতে গিয়ে পূর্ণ ভারসাম্য রাখতে পারেননি মালান। এ ওপেনার ২৪ বলে ২ চারে ১৪ রান করে ল্যাথামের গ্লাভসবন্দি হন।
১২.৫ ওভারে দলীয় ৬৪ রানে জনি বেয়ারস্টোকে ফেরান মিচেল স্যান্টনার। ৩৫ বলে ৩৩ রান করে ড্যারিল মিচেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এ ওপেনার। ১৭তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ৯৪ রানে তৃতীয় ব্যাটার হারায় ইংল্যান্ড। রাচিন রবীন্দ্রের বলে ডেভন কনওয়ের ক্যাচ হয়ে ফেরেন হ্যারি ব্রুক। ১৬ বলে ২৫ রান করে যান।
পাঁচে নামা মঈন আলীও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ২২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে শিকার হন গ্লেন ফিলিপসের। ১৭ বলে ১১ রানে করে বোল্ড হন ইংলিশ অলরাউন্ডার।
পরে জো রুট ও জশ বাটলার জুটিতে ৭০ রান যোগ করে ইংল্যান্ড। ৩০তম ওভারের চতুর্থ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন রুট। রুট-বাটলার জুটিতে আঘাত হানেন হেনরি। ৩৩.২ ওভারে দলীয় ১৮৮ রানে ল্যাথামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাটলার। ৪২ বলে ৪৩ রান করেন।
৩০তম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ২২১ রানে লিয়াম লিভিংস্টোনকে হেনরির ক্যাচ বানিয়ে ফেরান বোল্ট। ২২ বলে ২০ রান করেন লিয়াম। দুই ওভার পর সুইপশট খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন রুট। ফিলিপসের শিকার হওয়ার আগে ৮৬ বলে ৭৭ রান করেন।
৪৫তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ২৫০ রানে অষ্টম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। মিচেল স্যান্টনারের বলে উইল ইয়াংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ক্রিস ওকস। ১২ বলে ১১ রান করে যান তিনি। চার বল পর স্যাম কারেন ফেরেন হেনরির শিকার হয়ে। ল্যাথামের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে ১৯ বলে ১৪ রান করে যান।
এরপর আদিল রশিদ ও মার্ক উড ইনিংস শেষ করেন। আদিল অপরাজিত থাকেন ১৩ বলে ১৫ রানে, উড ১৪ বলে ১৩ রানে।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নিয়েছেন ম্যাট হেনরি। গ্লেন ফিলিপস ও মিচেল স্যান্টনার নেন দুটি করে উইকেট। রাচিন রবীন্দ্র ও ট্রেন্ট বোল্ট নেন করে উইকেট।
৯ অক্টোবর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড। পরদিন বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে লড়বে ইংল্যান্ড। দুটি ম্যাচই বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে।