দুদলের সামনে দুই সমীকরণ। সেমিতে যেতে নিউজিল্যান্ডের জয়ের বিকল্প নেই, লঙ্কানদেরও জেতা প্রয়োজন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ২০২৫ আসরে কোয়ালিফাই নিশ্চিতের জন্য। এমন সমীকরণ সামনে রেখে খেলতে নেমে অবশ্য শেষ হাসিটা নিউজিল্যান্ডের। লঙ্কানদের ৫ উইকেটে হারিয়ে সেমির পথে এগিয়ে থাকল নিউজিল্যান্ড।
বেঙ্গালোরের এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টসে জিতে লঙ্কানদের আগে ব্যাটের আমন্ত্রণ জানান কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ট্রেন্ট বোল্ট ও লোকি ফার্গুসনদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে ৪৬.৪ ওভারে ১৭১ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। জবাবে নেমে ২৩.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে তাসমান পাড়ের দলটি।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের সবকটি ম্যাচ শেষে নিউজিল্যান্ডের পয়েন্ট সংখ্যা দশ। লঙ্কানদের বিপক্ষে বড় জয়ে সেমির পথে তাদের কিছুটা এগিয়ে রাখছে রানরেট। সেমির দৌড়ে কিউইদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দী পাকিস্তান। শনিবার ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে তারা। সেমিতে যেতে হলে অবশ্য বড় ব্যবধানে ইংলিশদের হারাতে হবে পাকিস্তানের। অন্যদিকে আফগানিস্তানও আছে সেমির দৌড়ে। তবে রানরেটে পিছিয়ে থাকায় সেমি প্রায় অনিশ্চিত আফগানদের। গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ সাউথ আফ্রিকা। শুক্রবার মুখোমুখি হবে তারা।
অন্যদিকে কিউইদের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অনিশ্চিত লঙ্কানদের। টেবিলের নয়ে অবস্থান তাদের। আইসিসির ওই টুর্নামেন্টে খেলতে হলে তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের দিকে। ম্যাচে বাংলাদেশ বড় ব্যবধানে পরাজিত না হলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা হবে না লঙ্কানদের।
স্বল্প রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে উদ্বোধনী জুটিতে দুর্দান্ত শুরু পায় নিউজিল্যান্ড। দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র ৮৬ রান তোলেন। ১৩তম ওভারে কনওয়েকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন দুশমন্থ চামিরা। ৪২ বলে ৪৫ রান করেন তিনি। পরের ওভারে রাচিনকে ফেরান মাহেশ থিকসানা। ৩৪ বলে ৪২ রান করেন এই ওপেনার।
১৯তম ওভারে তৃতীয় উইকেট হারায় কিউইরা। কেন উইলিয়ামসনকে ফেরান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ১৫ বলে ১৪ রান করেন কিউই অধিনায়ক। ২১তম ওভারে চতুর্থ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। দলীয় ১৪৫ রানে রানআউট হয়ে ফিরে যান ৬ বলে ৭ রান করা মার্ক চ্যাপম্যান।
২২.৪ ওভারে কিউইদের পঞ্চম উইকেট তুলে নেন লঙ্কানরা। ড্যারিল মিচেলকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান ম্যাথুজ। ৩১ বলে ৪৩ রান করেন মিচেল।
এরপর টম লাথামকে নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন গ্লেন ফিলিপস। ১০ বলে ১৭ রানে অপরাজিত থাকে ফিলিপস, ২ বলে ২ রানে লাথাম।
লঙ্কানদের হয়ে ম্যাথুজ দুটি উইকেট নেন। এছাড়া মাহেশ থিকসানা ও দুশমন্থ চামিরা একটা করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটে নেমে কিউই বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি লঙ্কানবাহিনী। শুরুতেই পাথুম নিশাঙ্কার উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। আরেক ওপেনার কুশল পেরেরা একপ্রান্ত আগলে রাখলেও নবম ওভারে দলীয় ৭০ রানে আরও ৩ ব্যাটার হারায় দলটি। ব্যাটে আলো ছড়ানোর আগেই ফিরে যান কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আশালঙ্কা।
পরের ওভারে ফিরে যান কুশল পেরেরা। নয়টি চার ও দুটি ছক্কায় ২৮ বলে ৫১ রান করে ফাগুর্সনের শিকার হন।
৭০ রানে ৫ ব্যাটার হারানোর পর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ৩৪ রানের জুটি গড়ে শতরান পার করেন। ১৭তম ওভারে ম্যাথুজ ফিরে যান ২৭ বলে ১৬ রান করে স্যান্টনারের শিকার হয়ে। এক ওভার পরই স্যান্টনারের দ্বিতীয় শিকার হন সিলভা। ফিরে যান ২৪ বলে ১৯ রানে।
২৪তম ওভারে দলীয় ১১৩ রানে অষ্টম ব্যাটার হারায় শ্রীলঙ্কা। চামিকা করুণারত্নেকে ফেরান ফার্গুসন। ৩৩তম ওভারে দলীয় ১২৮ রানে দুশমন্থ চামিরাকে ফেরান রাচিন রবীন্দ্র।
পরে মাহেশ থিকসানার ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে দেড়শো পার করে লঙ্কান দল। ৪৭তম ওভারে দিলশান মাদুশঙ্কাকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের গুটিয়ে দেন রাচিন রবীন্দ্র। ৪৮ বলে ১৯ রান করেন মাদুশঙ্কা। ৯১ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন থিকসানা।
কিউইদের হয়ে তিনটি উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট। লোকি ফার্গুসন, রাচিন রবীন্দ্র ও মিচেল স্যান্টনার নেন দুটি করে। টিম সাউদি নেন একটি উইকেট।