
ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর্দা উঠছে বৃহস্পতিবার। ভারতের আহমেদাবাদে দুপুর আড়াইটায় ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে গড়াবে বৈশ্বিক আসর। মহারণ গড়ানোর আগেরদিন ‘ক্যাপ্টেন্স ডে’ আয়োজনে ব্যাট-বলের স্বপ্নের কথার পাশাপাশি থাকল ‘হায়দরাবাদের বিরিয়ানি’ও।
বুধবার দুপুরে সব দলের অধিনায়কদের অংশগ্রহণে ‘ক্যাপ্টেন্স ডে’ আয়োজন করেছে আইসিসি। সেখানে অধিনায়করা বিশ্বকাপ ভাবনা নিয়ে বলেছেন। স্বপ্ন ও সম্ভাবনা নিয়ে বলেছেন। ‘হায়দরাবাদের বিরিয়ানি’র প্রশংসা করেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম।
‘আমরা ভারতে পৌঁছানোর পর হায়দরাবাদে যে ধরনের অভ্যর্থনা পেয়েছি, তা আমরা আশা করিনি। মনে হচ্ছিল আমরা ভারতে ছিলাম, কিন্তু দেশে ফিরে এসেছি। পাকিস্তান থেকে ভক্তরা এলে খুব ভালো হতো। আশা করি প্রতি ম্যাচেই আমরা এই ধরনের সমর্থন পাবো। হায়দরাবাদের বিরিয়ানির কথা সবসময়ই শুনেছি। এটি আসলেই ভালো ছিল। আমি দশে আট দিবো, যদিও এটি খুব মশালাদার।’
বিশ্বকাপ ভাবনা নিয়ে পাকিস্তান অধিনায়ক বলেছেন, ‘ভারত ম্যাচ নিয়ে আমরা উত্তেজিত। সবসময়ই এটি একটি বড় ম্যাচ। তবে এর আগে আমাদের দুটি ম্যাচ আছে। আমরা জানি, আমাদের শক্তি বোলিং। গত তিন বছর ধরে একসাথে ভালো খেলছি, তাই বোলিং আমাদের মূল শক্তি।’
ক্যাপ্টেন্স মিটে আলাদাভাবে নজর কেড়েছেন সাউথ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। অনুষ্ঠান চলাকালে যেন ঘুমিয়েই পড়েছিলেন। প্রোটিয়া অধিনায়ককে অনেকক্ষণ চোখবন্ধ করে থাকতে দেখা গেছে লাইভ চলা অনুষ্ঠানটিতে। উপস্থাপকদের একজন রবি শাস্ত্রীর করা এক প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময়ও চোখ বন্ধ অবস্থায় দেখা গেছে বাভুমাকে।
নিজেদের স্বপ্ন ও সম্ভাবনা নিয়ে বাভুমা বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য লড়াইয়ে। ভারতের আসরটি নিয়ে আমরা রোমাঞ্চিত। আমাদের দলের সদস্যদের যাদের ভারতে খেলার অভিজ্ঞতা আছে, তারা যদি এটিকে দলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারে, কিংবা শক্তি ও পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে ব্যবহার করতে পারে, তাহলে সেটা একটি দল হিসেবে আমাদের জন্য অনন্য সুবিধা হবে।’
টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান জানিয়েছেন, এবার দেশবাসীর প্রত্যাশা আগের সব আসরের তুলনায় বেশি। বলেছেন, ‘আমার মনে হয় আমরা ভালোভাবেই প্রস্তুত। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে কোয়ালিফায়ার চক্রে আমরা সম্ভবত তিন বা চার নম্বর দল, পয়েন্টের দিক থেকে। দল হিসেবে আমরা ভালো করেছি। এখন বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরার সময়। আমার দল প্রস্তুত এবং আমার দেশ আশা করছে গত সব আসরের চেয়ে ভালো কিছু হবে।’
স্বাগতিক ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা অবশ্য আয়োজকের মতোই কথা বলেছেন, ‘মানুষ এই টুর্নামেন্টকে ভালোবাসতে চলেছে। স্টেডিয়ামগুলো জমজমাট হবে। ভারতীয়রা তাদের ক্রিকেটকে ভালোবাসে। এটি একটি দুর্দান্ত টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে।’
রোহিত যোগ করেন, ‘গত তিন সংস্করণে আয়োজক দলগুলোই বিশ্বকাপ জিতেছে, তা নিয়ে খুব বেশি ভাবছি না। এই বিশ্বকাপে আমরা আমাদের সবকিছু দেবো এবং টুর্নামেন্ট উপভোগ করবো।’
বেশ রোমাঞ্চিত ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার। বলেছেন, ‘টুর্নামেন্ট নিয়ে আমি খুবই রোমাঞ্চিত। আমরা নিজেদের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখি না। আমরা সবাই (অংশগ্রহণ করা প্রতিটি দল) একই নৌকায় আছি।’
গত আসরে রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেছেন, ‘২০১৯ বিশ্বকাপ আশ্চর্যজনক ছিল। কিন্তু আমরা এখানে অন্য একটি প্রতিযোগিতায় এসেছি। এটি কী নিয়ে আসে তার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। এটি অনেকটাই আলাদা হবে।’
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স শুধু ভালো করার স্বপ্নই দেখছেন। বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়া কয়েকবছর ধরে ওয়ানডে বিশ্বকাপে খুব ভালো করেছে। এবারও তাই করার আশা করছি।’
বিশ্বকাপের আগে চোটের কারণে দলের অন্যতম তারকা হাসারাঙ্গাকে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ‘ক্যাপ্টেন্স মিটে’ বিষয়টি আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছেন লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। বলেছেন, ‘আমরা লড়াই করছি। আমাদের অনেককেই পাইনি চোটের কারণে। তবে আমাদের সঙ্গে ভালো বিকল্প রয়েছে। আমাদের সবার লক্ষ্য এখন বিশ্বকাপে। আমাদের সবাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, টুর্নামেন্টে নিজেদের সেরাটা দিবো।’
বিশ্বকাপে প্রথমবার নেতৃত্ব দিতে আসা আফগানিস্তান অধিনায়ক হাশমাতুল্লাহ শাহিদী অবশ্য কিছুটা নার্ভাস। বলেছেন, সত্যি বলতে, আমি খুবই নার্ভাস, তবে আমরা ভালো দল নিয়ে এসেছি। তাই আমি রোমাঞ্চিত। প্রতিযোগিতা উপভোগ করবো। বিশ্বাস করি, আমরা স্পিনে শক্তিশালী। এমনকি গত দুবছর ধরে আমরা ভালো করছি। আমাদের ব্যাটারদেরও যথেষ্ট সামর্থ্য রয়েছে। সবমিলিয়ে আমরা ভালো করার চেষ্টা করবো।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের মতো দল টপকে বাছাইপর্ব পেরিয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে আসা নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস নিজেদের ছন্দের ধারাবাহিকতা রাখতে চান। বলেছেন, ‘খেলোয়াড়রা ভালো করেছে। যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে আমরা এখানে এসেছি, আশা করি তা ধরে রাখবো।’
বিজ্ঞাপন