শুক্রবার দেশের সর্বাধুনিক ৭ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে নির্মাতা নূরুল আলম আতিকের বহুল প্রতিক্ষীত সিনেমা ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই সিনেমাটি প্রশংসা পাচ্ছে সব শ্রেণির দর্শকের কাছ থেকে। প্রায় সবাই বলছেন, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা হিসেবে এমন ছবি বাংলায় খুব একটা হয়নি।
সেই কণ্ঠেই যেন সুর মেলালেন ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ খ্যাত নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ সিনেমাটি নিয়ে উজ্জ্বল বলেন, ‘কোন এক অদ্ভুত কারণে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র দেখতে গেলই কেমন একটা পাতানো খেলা পাতানো খেলা অনুভূতি হয়, সেই ক্ষেত্রে ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ দারুণ ব্যতিক্রম। এটি একটি সুনির্মিত চলচ্চিত্র।’
এই নির্মাতা বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘জ্যাকব দ্য লায়ার’ আমার খুব প্রিয় একটা চলচ্চিত্র। এই চলচ্চিত্রের বৈশিষ্ট্য হল -যুদ্ধের ঝনঝনানি ছাড়াই যুদ্ধের তীব্র আবহ, যা দর্শক মনে একটা তীব্র চাপ এবং আবেগ সৃষ্টিতে দারুণভাবে সফল। ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ আর ‘জ্যাকব দ্য লায়ার’ সম্পূর্ণ ভিন্ন দুইটি ছবি, একটার সাথে আরেকটার সামান্যতম মিল নাই। কিন্তু ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ও যুদ্ধের দামামা না দেখিয়েও সফলভাবে যুদ্ধের ছবি। আপনি এই একবিংশ শতকে বসেও ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ দেখতে দেখতে ৭১ -এ হারিয়ে যাবেন।’

মাসুদ হাসান উজ্জ্বল বলেন, এই ছবির বিশ্বাসযোগ্যতার অন্যতম কৃতিত্ব অভিনয় শিল্পীদের দুর্দান্ত অভিনয়। টেলিভিশন নাটকে নূরুল আলম আতিক যেমন অনন্য, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’তেও তিনি নিজের সেই মানটা ধরে রেখেছেন।
দর্শকদের প্রতি ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ দেখার আমন্ত্রণ জানিয়ে এই নির্মাতা বলেন, ‘এই ছবি হলে গিয়ে না দেখাটা খুবই হতাশাজনক। পরিচালক তো নিজের কাজটা করে দেখিয়েছেন, দর্শকের মগজেরও তো সুখাদ্যের দরকার হয়, না কী?’
রাজধানীতে স্টার সিনেপ্লেক্স এর চারটি শাখা সহ যমুনা ব্লকবাস্টার, নারায়ণগঞ্জের সিনেস্কোপ এবং খুলনার লিবার্টি হলে মুক্তি পেয়েছে ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’।
পাণ্ডুলিপি কারখানা প্রযোজিত ছবিটি ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে সরকারি অনুদান পায়। ২০১৬ সালে শুটিং শুরু হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের গল্পের এই ছবির।
এ ছবির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন লায়লা হাসান, আহমেদ রুবেল, আশনা হাবিব ভাবনা, অশোক বেপারী, আশীষ খন্দকার, জয়রাজ, শিল্পী সরকার, ইলোরা গওহর, জ্যোতিকা জ্যোতি, দিলরুবা দোয়েল, স্বাগতা, শাহজাহান সম্রাট, দীপক সুমন, খলিলুর রহমান কাদেরী, অনন্ত মুনির, সৈকত, যুবায়ের, আশেক-মাশেক, মতিউল আলম, হাসিমুনসহ কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল এবং গৌরীপুর এলাকার সাধারণ মানুষ।
ছবিটির প্রযোজক হিসেবে আছেন মাতিয়া বানু শুকু, চিত্রগ্রহণে সুমন সরকার, কাশেফ শাহবাজী, মাজাহারুল ইসলাম, সম্পাদনা সামির আহমেদ, শব্দে সুকান্ত মজুমদার, সংগীতে আছেন রাশিদ শরীফ শোয়েব, শিল্প নির্দেশনায় লিটন কর, ওয়াদুদ রেইনি, পোশাক পরিকল্পনায় শারমিন নাহার লাকী, আফরোজা, মৃন্ময়ী সরকার, রূপসজ্জায় মো. ফারুক, ফরহাদ রেজা মিলন।