দর্শকদের ‘মন ভালো করে দেওয়া’ একটি গল্প বলতে চেয়েছিলেন মিজানুর রহমান আরিয়ান। আরও চেয়েছিলেন, গল্পটি থেকে দর্শক যেন ‘ফিল গুড’ অনুভূতি পায়। ঝগড়া, বন্ধুত্ব, মিষ্টি প্রেম, বিয়ে বিচ্ছেদের এমন সাধারণ গল্প ‘উনিশ২০’র মাধ্যমে অসাধারণভাবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন আরিয়ান।
সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় দুটি চরিত্রে অভিনয় করা আরিফিন শুভ ও আফসানা রহমান বিন্দুর অভিনয় ও রসায়ন নজর কেড়েছে। এতে নতুন লুক ও চরিত্রে দেখা যায় অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ এবং ইন্তেখাব দিনারকে। আরও ছিলেন হাসান মাসুদ।
রোমান্টিক গল্প বলতে বরাবরই আরিয়ান সময়ের অন্যতম সেরা! তিনি তার ‘বড় ছেলে’, ‘ব্যাচ ২৭’, ‘বুকের বা পাশে’, ‘গজদন্তিনী’, ‘২২ শে এপ্রিল’, ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’-এর মতো জনপ্রিয় সব কনটেন্টের পর ‘উনিশ২০’ দিয়ে আবারও নামের সুবিচার করলেন।
গল্পে দেখা যায়, অপু (আরিফিন শুভ) ও শিলা (বিন্দু) একই অফিসের কলিগ। অপু বিভিন্ন ভাবে শিলার মন জয় করতে চায়। কিন্তু শিলার মন গলানো অতো সহজ নয়! তাই অপু কবিতা লিখে, বই উপহার দিয়ে, স্ট্যাম্পে বন্ধুত্বের চুক্তি লিখে একসময় শিলার মনে জায়গা করে নেয়।
‘মেঘ না চাইতেই বৃষ্টির মতো’ না চাওয়া সত্ত্বেও হুট করে একদিন পরিবারের ইচ্ছেতে তাদের বিয়ে হয়! বিয়ের পর মোটেও বদলে যায়নি অপু। হানিমুনের বদলে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া সহ উড়নচণ্ডী স্বভাবের হওয়ার শিলার সঙ্গে ধীরে ধীরে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে ঘটে বিভিন্ন ঘটনা।
আরিয়ানের নির্মাণ মুনশিয়ানা এবং অসাধারণভাবে গল্প বলার ধরনে ‘উনিশ২০’ শুরু থেকে ১৫১ মিনিট ছিল জমজমাট এবং মন ভালো হয়ে যাওয়ার মতো কনটেন্ট। পাশাপাশি এতে থাকা সোমেশ্বর অলির লেখা এবং সাজিদ সরকারের সুর সংগীতে সিঁথি ও মাহতিম সাকিবের গাওয়া পাখি পাখি গানটিও মন ছুঁয়েছে।
এই ওয়েব ফিল্মে নতুনভাবে হাজির হয়েছেন আরিফিন শুভ। এজেন্সিতে চাকরিরত অপু চরিত্রে শুভ এলোমেলো চুলে কেয়ারলেস চরিত্রে নিজেকে অতি জীবন্ত ভাবে স্ক্রিনে হাজির করেছেন। সেই সঙ্গে তার কবিতা বলা, বন্ধুত্ব নিবেদন, চাকরী বা সংসার জীবনে উদাস হাবভাব স্ক্রিনে উপযুক্ত লেগেছে।
চরকিতে উন্মুক্ত হওয়া ‘উনিশ২০’ যারা দেখছেন তারাই শুভর এ চরিত্রের প্রেমে পড়ছেন! অন্তত অন্তর্জালে জুড়ে চলা লেখালেখি সেই কথাই বলছে।
বিশেষ করে ‘ঝরনা জানে পাথর গলবে না কোনোদিন, তবু তার বুকে ঝরনার অবিরাম আঘাত’, ‘আমার অবস্থা অনেকটা চার্লি চ্যাপলিনের মতো কাঁদলেও মানুষ হাসে’, ‘জীবন ছেলে খেলা নয় (লাইফ ইজ নট অ্যা প্লেবয়)’, বিয়েতে মেয়েরা পায় ওয়েডিং রিং আর ছেলেরা পায় সাফারিং; পরিস্থিতি অনুযায়ী শুভর মুখের এসব সংলাপগুলো অসাধারণ লেগেছে।
অন্যদিকে, অভিনয় থেকে দূরে সরে যাওয়া বিন্দুর শিলা চরিত্রে কামব্যাকে মুগ্ধ দর্শক। তাদের কথা, আরিয়ান চরিত্রটির জন্য সঠিকভাবে বিন্দুকে নির্বাচন করেছেন। তার সাদামাটা উপস্থিতির এক্সপ্রেশন ও স্ত্রী হিসেবে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা এই চরিত্রটি স্ক্রিন জুড়ে মনে দাগ কাটার মতো।