স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে ‘প্রথম আলো’র প্রকাশিত সংবাদ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এছাড়াও বলা হয়েছে এটি কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন প্রচেষ্টারই অংশ।
রোববার (২ এপ্রিল) সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক এক যৌথ বিবৃতিতে এই মন্তব্য করেন।
বিবৃতি বলা হয়েছে, “সংবাদটির ফটো কার্ডে ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। আমাগো মাছ-মাংস চাইলের স্বাধীনতা লাগবো।’ উদ্ধৃত বাক্যগুলোর ব্যবহার শুধু ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নিহত ৩০ লক্ষ শহিদ এবং প্রায় দু’লক্ষ মা-বোনের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকেই খাটো করেনি, তাদের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের চরম পরাকাষ্ঠাও প্রদর্শন করেছে।
মহান স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতা শব্দের সাথে একজন ব্যক্তির ক্ষোভ মিশিয়ে প্রণীত সংবাদের প্রচার কোনোভাবেই দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার পরিচয় বহন করে না। ‘প্রথম আলো’ ১৭ মিনিট পর সংবাদটি প্রত্যাহার করে সংশোধনী প্রকাশ করেছে। কিন্তু সংবাদটি তার আগেই ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই এর স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে দিয়েছে এবং তা এখনও অপসারিত হয়নি। সংবাদের ফটো কার্ডের কথিত দিনমজুর জাকিরের বক্তব্য এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে নিহিত রয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষকে ক্ষিপ্ত করার বার্তা।
এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ১৬ জুলাই ১৯৭২ তারিখে জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রদত্ত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণটি। তিনি সেদিন বলেছিলেন, ‘সাংবাদপত্রের পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে। তবে নীতিমালা মেনে পত্রিকাগুলোকে দায়িত্বশীল হতে হবে।’
তিনি মুক্তিযুদ্ধে কতিপয় সাংবাদিকদের ভূমিকা সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘কিছু কিছু সাংবাদিক নিজেদের প্রগতিশীল বলে দাবি করতো। কিন্তু তারা স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ক্যান্টেনমেন্টে খবর সরবরাহ করতেন। আপনারা কি বলবেন যে, তাদের গায়ে হাত দিলে গণতন্ত্র এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতার ওপর আঘাত করা হবে! স্বাধীন দেশে যথেচ্ছাচার চলতে দেওয়া যেতে পারে না। স্বাধীনতা ভোগ করার অধিকার তারই আছে যে স্বাধীতার মর্যাদা রক্ষা করতে জানে।’
জাতির পিতার প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরাও বাংলাদেশে সকল প্রকার অপ-সাংবাদিকতামুক্ত, বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা প্রত্যাশা করি এবং এ ধরনের ঘৃণ্য অপতৎপরতার সাথে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”