রাজধানী ঢাকাকে নিরাপদ ও অপরাধমুক্ত করতে পুলিশ সব ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন নবনিযুক্ত ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি যাতে সন্ত্রাসীরা করতে না পারেন সেদিকে কঠোর নজরদারি থাকবে।
সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন নবনিযুক্ত ডিএমপি কমিশনার।
কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভা মিট দ্য প্রেস আয়োজন করে ডিএমপি। গত ৩০ সেপ্টেম্বর অবসরে যান খন্দকার গোলাম ফারুক। তার স্থলে ডিএমপি কমিশনারের দায়িত্ব নেন টুরিস্ট পুলিশের প্রধান হাবিবুর রহমান।
ঢাকার একটি নাগরিকও যেন পুলিশের সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় উল্লেখ করে ডিএমপির নবনিযুক্ত কমিশনার বলেন: বিধিমালা করে খুব শিগগিরই নম্বরটি চালু করা হবে। সেখানে ‘ম্যাসেজ টু কমিশনার’ সরাসরি অভিযোগ করতে পারবেন। এছাড়া ডিবিতে গিয়েও সেবা না পেলে যে কেউ ম্যাসেজের মাধ্যমে সরাসরি তাকে জানাতে পারবেন।
তিনি বলেন, কোনো অভিযোগ যেন কমিশনার পর্যন্ত না আসে, তার আগেই যেন অভিযোগ গ্রহণ, ব্যবস্থা গ্রহণ কিংবা অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়, সেজন্য থানা, এসি, এডিসি, ডিসি, জয়েন কমিশনার পর্যায়ে দক্ষ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
হাবিবুর রহমান বলেন, শহরে জনসংখ্যার ঘনত্ব ও অপরাধ অনুযায়ী ঢাকায় পুলিশের জনবল কম। তবুও ডিএমপি দক্ষ ও যোগ্যতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে চলেছে। আমি আত্মবিশ্বাসী। এই শহরকে নিরাপদ নগরীতে পরিণত করতে হলে সাংবাদিক, নগরবাসীর সহযোগিতা, বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতাও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সবাই মিলে এ নগরীকে নিরাপদ নগরী হিসেবে গড়তে চাই। নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে চাই।
তিনি বলেন, থানায় এসে যেন কেউ তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে না যান সে জন্য থানায় সব পুলিশের ট্রেনিং দেওয়া হবে। ঢাকাকে নিরাপদ ও অপরাধমুক্ত করতে পুলিশ সব ব্যবস্থা নেবে।
হাবিবুর রহমান বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র রাজধানীতে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি হয়ে থাকে। আসছে নির্বাচনে যাতে কেউ বা কোনো সন্ত্রাসীগোষ্ঠী অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি করতে না পারে। অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করতে ডিএমপির পুলিশ সদস্যদের যথেষ্ট সাহস ও শক্তি রয়েছে। দেশে আদালত, বিচারিক প্রক্রিয়া আছে। যেসব অপরাধী জেল থেকে বের হচ্ছে তাদের কঠোর মনিটরিং করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপরাধী ছোট হোক বড় হোক, কাউকে ছাড় নয়।
নবনিযুক্ত কমিশনার বলেন: ট্র্যাডিশনাল ক্রাইম থেকে ডিএমপির ক্রাইমের ধরন আলাদা। নতুন ধরনের ক্রাইমের অভিযোগ আসছে ডিএমপিতে। এর বড় কারণ প্রযুক্তি। সাইবার ক্রাইম মোকাবিলায় ডিএমপি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে। ডিএমপির দক্ষতা ও যোগ্যতা অনেক বেশি।
মার্কিন ভিসানীতি প্রসঙ্গে হাবিবুর রহমান বলেন: ভিসানীতি নিয়ে আমরা চিন্তিত না।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) মহা. আশরাফুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনার ও বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।