চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সেরা গোলদাতা ও আসরসেরা ‘ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক’ সাবিনা

ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারালেন সাবিনা-কৃষ্ণারা

বাংলাদেশের মেয়েদের জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়কত্বের আর্ম ব্যান্ডটা ছয় বছর ধরে পরে আছেন সাবিনা খাতুন। স্ট্রাইকিং পজিশনে খেলা তারকা ফুটবলার প্রতিপক্ষের জন্য ক্রমাগত হয়ে উঠেছেন এক আতঙ্কের নাম! বারবার প্রতিপক্ষ জালে ত্রাস ছড়িয়ে হয়ে উঠেছেন গোলমেশিন। অনন্য ধারাবাহিকতায় মেয়েদের সাফে বাংলাদেশের প্রথম শিরোপা জয়ের মঞ্চে হলেন সেরা গোলদাতা ও আসরসেরা খেলোয়াড়।

কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে সোমবার স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছে বাংলাদেশ। লাল-সবুজদের হয়ে দুটি গোল করেছেন কৃষ্ণারাণী সরকার, অপর গোলটি করেছেন শামসুন্নাহার জুনিয়র।

ফাইনালে গোল পাননি, একটি অ্যাসিস্ট ছিল সাবিনার। আগের ৪ ম্যাচে দুই হ্যাটট্রিকসহ ঝুলিতে জমিয়েছেন ৮ গোল। যা তাকে আসরসেরা গোলদাতার খেতাব এনে দিয়েছে, সঙ্গে আসরের সেরা খেলোয়াড়েরও।

লাল-সবুজ জার্সিতে ৪৬ আন্তর্জাতিক ম্যাচে সাবিনার গোল ৩১টি। আসরে তার নিয়মিত গোল করা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। সবার প্রশংসায় ভাসছেন ২৮ বর্ষী স্ট্রাইকার।

১৯৯৩ সালের ২৫ অক্টোবর সাতক্ষীরায় জন্ম সাবিনার। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে ফুটবলের সঙ্গে সম্পর্ক। সাতক্ষীরা জেলা ফুটবল কোচ আকবরের মাধ্যমে হাতেখড়ি। স্কুল পর্যায়ে, আন্তঃস্কুল ও আন্তঃজেলা পর্যায়ে ভালো খেলার সুবাদে ডাক পেয়ে যান জাতীয় দলে।

২০০৯ সালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ও জাতীয় দলের হয়ে সাবিনার অভিষেক। ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। দেশের সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে বসেছেন অনেক আগেই। ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার তারকা ফুটবলারের গোল করার অভ্যাসটা বেশ পুরনো।

সাতক্ষীরা জেলা দলের হয়ে সাবিনার রয়েছে ঈর্ষণীয় সাফল্য। ২১ ম্যাচ খেলে করেছেন ৭০ গোল! বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির হয়ে ৫ ম্যাচে ৬ গোল আছে।

২০১১ সালে তিনি শেখ জামালে ক্লাবে যোগ দেন। মাত্র ৫ ম্যাচ খেলে করে ফেলেন ২৫ গোল। ২০১৩ সালে নাম লেখান মোহামেডানে। সেখানে গোলক্ষুধা আরও বেড়েছে, ৫ ম্যাচে তার গোল বেড়ে দাঁড়ায় ২৮!

পরে ২০১৪-১৬ সালে বিজেএমসি দলের হয়ে রীতিমতো গোলবন্যা বইয়ে দেন। ১২ ম্যাচ খেলে করেন ৭৪ গোল! মাঝে ২০১৫ সালে সাবিনা মালদ্বীপ প্রতিরক্ষা বাহিনীতে খেলার সুযোগ পান। সেখানেও গোল করা থামেনি, ৭ ম্যাচে পান ২২ গোল।

নজরকাড়া পারফরম্যান্সে ২০১৮ সালে ভারতের আই লিগের দল সেতু এফসিতে ডাক পান সাবিনা। সেখানেও নিয়মিত গোল করে ক্যারিশমা দেখান। ৭ ম্যাচে ৬ বার নিশানাভেদ করেন। ২০২০ সালে বসুন্ধরা কিংসে যোগ দেন এ গোলমেশিন। ওই বছর তিনি ২৫ ম্যাচে ৬২ গোল করেন।

ফুটবলে দারুণ নৈপুণ্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৬ সালে সাবিনাকে অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কারে ভূষিত হন।

সবশেষ কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশকে শিরোপা উঁচিয়ে ধরায় দিলেন চৌকস নেতৃত্ব। টুর্নামেন্টজুড়ে কাড়লেন আলো। এলো মেয়েদের সাফে লাল-সবুজদের প্রথম শিরোপা।