সাতক্ষীরায় মাছ ধরা নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে ভগ্নিপতিকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে শ্যালক। শুধু তাই নয়, ভগ্নিপতিকে খুন করে বোন মজিদাকেও মারাত্মক জখম করা হয়। এ ঘটনায় প্রধান আসামিকে ধরতে না পারলেও মামলাভুক্ত আসামি শাহিন ফকির নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিযনের রঘুনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত মাজিদাকে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত শাবল ও কোদাল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতের নাম সামছুর রহমান গাজী (৫৫)। তিনি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত অবের আলীর ছেলে।
রঘুনাথপুর গ্রামের শাহীনুর রহমান জানান, মঙ্গলবার রাতে বর্ষার সময় তার ভাই মিজানুর পরিহিত জামা ও গেঞ্জি খুলে বেড়ির উপরে রেখে বাবা সামছুরের ঘেরে মাছ ধরতে যায়। কিছুক্ষণ পর পার্শ্ববর্তী কয়েকজন ঘের পাহারাদার চোর চোর বলে অপবাদ দিয়ে চিৎকার করলে মিজানুর জামা কাপড় ফেলে বাড়ি চলে আসে। ওই জামা গেঞ্জি নিয়ে পার্শ্ববর্তী ঘের মালিকরা কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভিনের কাছে বুধবার সকালে জমা দেন। চেয়ারম্যান বৃহস্পতিবার সকালে গ্রাম পুলিশ আব্দুর রহিমকে সামছুরের বাড়িতে পাঠিয়ে তার সঙ্গে মিজানুরকে দেখা করতে বলেন।
শাহীনুর আরও জানান, ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে নালিশ হওয়ায় মামা ফজর আলী ও আহাদ আলী বৃহস্পতিবার দুপুর দুটোর দিকে হাতে কোদাল ও শাবল নিয়ে তাদের বাড়িতে এসে মিজানুরকে খুজতে থাকে। তাকে না পেয়ে চিৎকার চেচামেচি শুরু করায় বাবা প্রতিবাদ করলে মামা ফজর আলী তাকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। বাবাকে রক্ষায় ছুটে গেলে মা মাজিদার ডান হাতের মাংশপেশীর মধ্যে শাবল ঢুকিয়ে দেয় ছোট মামা শাহীনুর। স্থানীয়রা মা ও বাবাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। মাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
শাহীনুর আরও জানান, নানা আরশাদ আলীর জীবদ্দশায় দুই মামা ফজর আলী ও আহাদ সব জমি লিখে নেয়। এতে পৈতৃক সম্পদ থেকে বঞ্চিত হন আমার মা মজিদা। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মামার বাড়ি যাতায়াত নেই। তাদের সঙ্গে নেই কোন সম্পর্কও। এরপরও তারা আমার বাবাকে খুন করে ফেলল। মাকেও হত্যার চেষ্টা করেছে। আমরা খুনিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসি চাই।
কৃষ্ণনগর ইউপির সাবেক সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, ফজর আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, ডকাতি, মাদকসহ এক ডজনের উপর মামলা রয়েছে। সে একজন সন্ত্রাসী।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হালিমুর রহমান জানান, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে শাহীনুর গাজী বাদী হয়ে ৬ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। বৃহস্পতিবার রাতেই শাহীন ফকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।