চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আমি বাংলাদেশের মেয়ে, বাংলা আমার পুরো সত্তা জুড়ে আছে: মিথিলা

আজ একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলাদেশের আরো বহু মানুষের মতোই এই দিনটি সত্তা জুড়ে আছে অভিনেত্রী মিথিলারও। এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন তিনি।

মাতৃভাষা বাংলাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে হিন্দুস্থান টাইমস বাংলা কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে অভিনেত্রী, লেখিকা এবং সঙ্গীতশিল্পী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা জানান, ২১ ফেব্রুয়ারি আমার নিজের ভাষার দিন, বাংলা ভাষার দিন। বাংলা ভাষার জন্য বাংলাদেশের ভাষা শহীদরা যে আত্মত্যাগ করেছেন, জীবন দিয়েছেন, সেই দিনটির গুরুত্ব আমার কাছে সবথেকে বেশি। বাংলা শুধু আমার ভাষা নয়, বাংলা আমার পরিচয়। আমি বাংলাদেশের মেয়ে, বাংলা আমার পুরো সত্তা জুড়ে আছে। একটা ভাষার নাম দিয়েই একটা দেশ তৈরি হয়েছে, আমার জাতিগত পরিচয় পুরোটাই এই বাংলাভাষাকে ঘিরে। আর যারা এই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কোনও শেষ থাকতে পারে না। সেকারণেই ২১ ফেব্রুয়ারি আমার আবেগের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত।

১৯৫২-র ভাষা আন্দোলনের কথা আমরা ছোটবেলায় বইয়ে পড়েছি। খুব ছোট থেকেই পড়ার বইয়ে বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের ভাষা আন্দোলন নিয়ে পড়তেই হয়। তাই খুব ছোট থেকেই ২১শে ফেব্রুয়ারির মাহাত্ম্য সম্পর্কে জেনেই আমরা বড় হয়েছি। এই দিনটি আমাদের বেড়ে ওঠার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যায়। শুধু ঢাকাতে নয়, বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলায় শহীদ মিনার আছে। ছোট থেকই  এই দিনে খুব ভোরে উঠে শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দেওয়া আমাদের অভ্যাস। ২১শে ফেব্রুয়ারি, এই দিনটির উদযাপন সরকারিভাবে, বিভিন্ন সংস্থার তরফে তো হয়ই। এছাড়াও লক্ষ লক্ষ মানুষ এই দিনটিতে সকালে উঠে খালি পায়ে হেঁটে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান। সেখানে বয়সের কোন ভেদাভেদ নেই। ছোট, বড় সকলেই যান। এটাই দীর্ঘদিন, বহু বছর ধরে হয়ে আসছে।

এখনকার প্রজন্মের কথা যদি বলি, তাহলে বলব বাংলাদেশে অন্তত এইদিনটিতে এখনকার প্রজন্মও একই ভাবে পালন করে থাকেন। ছোটবেলায় এই দিনটি যেভাবে পালন হত, এখনও সেটাই দেখছি। তবে হ্যাঁ, শিশুরা, তরুণ-তরুণীরা যারা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ছেন, তারা হয়তবা ভাষা আন্দোলনের কথা বইয়ে পড়ে হয়ত বড় হচ্ছে না। তবে বাবা-মায়ের মুখে শুনে বড় হচ্ছে। তারা কতটা এই আবেগের সঙ্গে নিজেকে জড়াতে পারবে, তা সত্যিই বলতে পারব না। পৃথিবী বদলে গেছে, বাংলাদেশও বদলে গেছে। তবে আমি, আমার মেয়ে বাংলা ভাষা ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের কথা বলি। আমার মনে হয় বাংলাদেশের অন্যান্য বাবা-মায়েরাও বলেন, কারণ বাংলাদেশের কাছে, বাংলা ভাষাটা সবথেকে বড় জাতিগত পরিচয়।

আমি একজন শিল্পী হিসাবে একটা ছোট্ট উদ্যোগ নিয়েছি। শিশুদের জন্য বাংলায় গল্পের বই লিখতে শুরু করেছি। সেটা ৪ থেকে ৮ বছরের শিশুদের জন্য। আমি শিশুদের নিয়েই কাজ করি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে আমার ৪টি বই প্রকাশিত হয়েছে। আর সেটা বাংলায়। কারণ, বাংলায় শিশুদের জন্য এখন আগের মতো ভালো বই পাওয়া যায় না। তাই বাংলাতেই লিখব ঠিক করি।

সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস বাংলা