ভুয়া ডেথ সার্টিফিকেট (মৃত্যু সনদ) তৈরি করে ডাক্তারের সই জাল করে নিজেই সবকিছু লিখে দিতেন চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার। অনেক প্রভাবশালী মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের কারণে তিনি ছিলেন বেপরোয়া। মিল্টন মনে করতেন তাকে কেউ কিছু করতে পারবে না।
এদিকে, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেপ্তারের পর দুই দফা রিমান্ডে তার বিরুদ্ধে আনা অধিকাংশ অভিযোগই স্বীকার করেছেন মিল্টন।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টু রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, আমরা মিল্টন সামাদ্দারকে সাত দিনের রিমান্ডে এনেছিলাম। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ মিডিয়াতে এসেছে তার অধিকাংশই আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন। আমরা তার কাছে আশ্রমে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ডেথ সার্টিফিকেট তৈরির বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম।
মিল্টন নিজেই বলেছেন যে, ভুয়া ডেথ সার্টিফিকেট (মৃত্যু সনদ) তৈরি করে ডাক্তারের সই জাল করে নিজেই সবকিছু লিখে দিতেন। তাছাড়া তার আশ্রমে কোনো ডাক্তার ছিল না। অপারেশন থিয়েটারে সে নিজেই ব্লেড ছুরি দিয়ে কাটাকাটি করতেন।
আর আশ্রমে আসা অধিকাংশ মানুষজনই প্যারালাইজড কিংবা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ার কারণে অস্বাভাবিক আচরণ করত। তখন মিল্টন তাদেরকে পিটিয়ে নিস্তেজ না হওয়া পর্যন্ত নির্যাতন করতেন।
তিনি বলেন, আমরা তার কাছে এসব নিরীহ মানুষদের পেটানোর বিষয়ে জানতে চেয়েছি। তিনি আমাদেরকে জানিয়েছেন, যখন নির্যাতন করা হতো তখন তিনি ইয়াবা ও মাদক সেবন করে নিতেন। এতে করে তখন তার কোন হিতাহিত জ্ঞান থাকতো না। এই কাজটি যে করা ঠিক হয়নি সেটিও সে আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন।
মিল্টনের এসব কর্মকাণ্ডের মূল শক্তি ছিল ভিআইপিদের সঙ্গে ওঠাবসা। তিনি মনে করতেন তাকে কেউ কিছু করতে পারবে না।
তিনটি মামলার মধ্যে দুটি মামলায় মিল্টনকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছিলো। তদন্তের জন্য তার স্ত্রীকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে জানান ডিবি প্রধান।