পাওয়ার প্লেতে ২৪ রান তুলতেই নেই সাউথ আফ্রিকার তিন টপ অর্ডার। আর্শদ্বীপ সিং-মোহাম্মদ শামির বল তখন সাইসাই করে বেরিয়ে যাচ্ছে! মাঝে ধুঁকতে থাকা প্রোটিয়াদের উপর জমছিল রানের পাহাড়। ভারতের ১৩৪ রানের লক্ষ্যে শুরুতে খাবি খেলেও পরে মার্করাম-মিলারে চড়ে পারি দিয়েছে টেম্বা বাভুমার দল।
পার্থ স্টেডিয়ামে দেড়শর নিচে রানের লক্ষ্যে খাবি খায় প্রোটিয়ারা। আর্শদ্বীপের তোপে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম ও তৃতীয় বলে ফেরেন দুই ইনফর্ম প্রোটিয়া ব্যাটার। অল্পক্ষণ পর চাপ বাড়িয়ে ফেরেন অধিনায়ক বাভুমা। দুই ফিফটিতে শেষ পর্যন্ত ২ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে স্নায়ুচাপী ম্যাচে জয় তুলে নেয় সাউথ আফ্রিকা।
ক্যাচ মিস আর বাজে ফিল্ডিংয়ের মহড়া দেওয়ার আগে ম্যাচে ভালো অবস্থানেই ছিল রোহিত শর্মার দল। ৩ রানের মাঝে কুইন্টন ডি কক ও রাইলি রুশো ফেরার পর বাভুমা ফেরেন চাপ দ্বিগুণ করে। ৫.৪ ওভারে ২৪ রানে প্রোটিয়া অধিনায়ক ফিরলে শিথীল হয়ে যায় রান তোলার গতি। তখন প্রোটিয়াদের এমন অবস্থা যেন শতরানের আগেই থেমে যাবে ইনিংস।
রানের চাকা সচল রেখে ১৫.৪ ওভারে দলীয় শতরান আনে মার্করাম-মিলার। ৭৬ রানের ম্যাচ বাঁচানো জুটিতে ফিফটি করেন মার্করাম, ৪১ বলে ইনিংস সাজান ছয় চার ও এক ছক্কায়। বাকি পথে ট্রিসটান স্টাবস ভালো সঙ্গ দিতে না পারলেও ওয়েইন পারনেলকে নিয়ে ৬ বলের ৬ রানের সমীকরণ মিলিয়ে দেন মিলার। স্নায়ুচাপী ম্যাচে প্রোটিয়াদের এনে দেন ৫ উইকেটের জয়।
৪৬ বলে ৫৯ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস সাজান কিলার খ্যাত মিলার। খেলেন চার চার ও তিন ছক্কার মার। ভারতের হয়ে দারুণ শুরু আনা আর্শদ্বীপ ৪ ওভারে ২৫ রানে ফেরান দুই প্রোটিয়া ব্যাটারকে। একটি করে উইকেট শিকার করেছেন সামি, পান্ডিয়া ও ৪ ওভারে ৪৩ রান দেওয়া অশ্বিন।
এরআগে পার্থে ওয়েইন পারনেল, কাগিসো রাবাদা, লুনগি এনগিডি ও এনরিক নর্টজে— এই চার প্রোটিয়া পেসারের তোপে পড়েন রোহিত-কোহলিরা। দলীয় পঞ্চাশের আগে হট-ফেভারিট দলটি হারায় শুরুর ৫ ব্যাটারকে। ভরসার যোগ্য প্রমাণ দিয়ে যাদব লড়ে সাউথ আফ্রিকাকে এনে দেন ১৩৪ রানের লক্ষ্য।
আগে ব্যাটিং নেয়া ভারতের হতাশার উদ্বোধন হয় চতুর্থ ওভারে। দলীয় ২৩ রানে রোহিত এনডিগিকে ক্যাচ দিলে ইনিংসে ধসের শুরু হয়। রোহিতের ১৪ বলে ১৫ রানের পর ফের নিজের নামের মান রাখতে পারেননি লোকেশ রাহুল। ওপেনিং ব্যাটার ৯ রানে ফিরেছেন এনডিগির ক্যাচ হয়ে। বিরাট কোহলিও পারেননি। ইনফর্ম ডানহাতি ফিরে যান ১১ রান করে, দলের সংগ্রহ তখন ৪১ রান।
চাপ সামলাতে আসা দীপক হুদা ফিরেছেন শূন্য রানে। ছয় নম্বরে নামা হার্দিক পান্ডিয়া ব্যর্থ হয়েছেন। দলীয় ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে বাকি পথ একাই টেনেছেন যাদব। এ ডানহাতি ফেরার আগে খেলেন ৬৮ রানের ইনিংস, ৪০ বলের ইনিংস সাজিয়েছেন ৬টি চার ও তিনটি ছক্কায়। বাকিদের আসা-যাওয়ার দিনে ৯ উইকেট হারিয়ে ভারত শেষ পর্যন্ত তুলতে পারে ১৩৩ রান।
দাপুটে পেসে ভারতকে নাকাল করার দিনে সবচেয়ে সফল ছিলেন এনগিডি। ৪ ওভারে ২৯ রান খরচায় ৪ ভারতীয় ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন তিনি। ৪ ওভারে এক মেডেন পাওয়া পারনেল ছিলেন যথেষ্ট কৃপণ, ১৫ রান খরচায় ফিরিয়েছেন দিনেশ কার্তিক, রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও ফিফটি হাঁকানো যাদবকে।