চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

তামিল টাইগার্স নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ বেঁচে আছেন!

তামিলদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে সংগ্রাম করা তামিল নেতা এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী ব্যাপক আলোচিত সশস্ত্র সংগঠন তামিল টাইগারদের প্রতিষ্ঠাতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনীর অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন বলে প্রচার করা হয়েছিল।

তার মৃত্যু ঘোষণার ১৪ বছর পর তামিলনাডুর প্রবীণ রাজনীতিবিদ পাজা নেডুমারান আজ দাবি করেছেন, তামিল নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ বেঁচে আছেন এবং সুস্থ আছেন। খুব শীঘ্রই তিনি জনসম্মুখে হাজির হবেন।

ওয়ার্ল্ড তামিল কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট মিঃ নেডুমারান ভারতের থাঞ্জাভুরে এক প্রেস কনফারেন্সে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছেন, “এলটিটিই প্রধান ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ বেঁচে আছেন এবং শীঘ্রই তিনি জনসম্মুখে  হাজির হবেন। আমরা বিশ্বের কাছে এটি ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত। প্রকাশ্যে এসে তিনি তামিল ইলমের জন্য তার পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন।”

এই ঘোষণার সময় ব্যাখ্যা করে, প্রবীণ রাজনীতিবিদ বলেন, “শ্রীলঙ্কায় জনগনের বিদ্রোহের পর রাজাপাকসে সরকারের পতন একটি অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এটি তার (প্রভাকরণের) জন্য জনসম্মুখে আসার সঠিক সময়।”

১৯৭৫ সালের ৫ মে গঠিত হয় এলটিটিই (লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম) সংক্ষেপে তামিল টাইগার্স। তামিল টাইগার্স ছিল অত্যন্ত সুসংগঠিত একটি গেরিলা সংগঠন। তাদের লক্ষ্য ছিল স্বাধীন তামিল  রাষ্ট্র গঠন করা। পৃথিবীর অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনগুলো  থেকে  তামিল টাইগার্স ছিল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তাদের ছিল নিজস্ব সরকার, ব্যাংক, সেনাবাহিনী, নৌ ও বিমানবাহিনী। শ্রীলংকার আর্মিদের মত করেই তামিল টাইগার্সদের সেনাদেরও রেঙ্ক নির্ধারিত ছিল। এই গেরিলা সংগঠনের রাজনৈতিক ও সামরিক উভয় শাখার নেতৃত্বে ছিলেন ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ।

মাহিন্দা রাজাপাকশে প্রেসিডেন্টের থাকার সময় শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনীর সাথে তামিল টাইগারদের সুদীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের শেষ পর্যায়ে ২০০৯ সালের ১৮ মার্চ শ্রীলঙ্কার মাল্লিভাইকাল নামক এক গ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযানে ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ নিহত হন বলে সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছিল।

এসময় একটি লাশের বেশ কয়েকটি ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করা হয়েছিল। তখন অনেকেই দাবি করেছিলেন এগুলো প্রভাকরণের চিকিৎসকের মৃতদেহ। অন্যরা অভিযোগ করেছিল যে এলটিটিই নেতাকে আন্তর্জাতিক কনভেনশন লঙ্ঘন করে যখন তিনি একটি চুক্তির অধীনে আত্মসমর্পণ করতে এসেছিলেন তখন তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

সেসময় প্রভাকরণের বয়স ছিল ৫৪ বছর।

পাজা নেডুমারান এলটিটিই নেতার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য  প্রকাশ করেননি।

ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ ১৯৯১ সালে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যার প্রধান অভিযুক্ত ছিলেন। শ্রীলঙ্কায় আরও কিছু হত্যাকাণ্ডের জন্যও তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল এবং এলটিটিইকে একটি নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল।

অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীকেও ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত  করা হয়।