গত দেড়-দুই বছরে বেশকিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে আলোচনায় এসেছে সাউথ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড। সেই আগুনে ঘি ঢাললেন প্রোটিয়া নারী দলের সদ্য সাবেক ব্যাটার লিজেল্লে লি। বোর্ডের হেনস্তার শিকার হয়ে অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন, বলছেন ডানহাতি তারকা ব্যাটার।
কয়েকদিন আগে হুট করে ইংল্যান্ড সফরের মাঝপথে অবসরের ঘোষণা দেন লি। তখন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি। বোমা ফাটালেন সপ্তাহ দুয়েক পরে। বাড়তি ওজনের কারণে বোর্ড কর্তৃক হেনস্তা হয়েছেন, শনিবার জানিয়েছেন লি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উড়ন্ত এক সময় পার করছিলেন লি। গত বছর পেয়েছেন আইসিসির প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার খেতাব। তবুও বোর্ডের অভিযোগ ছিল তার বাড়তি ওজন নিয়ে। এমনকি ফিটনেসের সকল শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও তাকে দল থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বোর্ডটি।
অন্যদিকে ফিটনেসের দোহাই দিয়ে লি-কে বাইরের দেশের লিগগুলোতে খেলার অনুমতিও দিচ্ছিল না প্রোটিয়া বোর্ড। বাধ্য হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন ৩০ বর্ষী তারকা।
‘তারা আমার ক্রিকেট স্কিলকে গুরুত্ব দিচ্ছিল না, তারা আমার ফিটনেসকেও গুরুত্ব দিচ্ছে না। তারা শুধু আমার ওজন নিয়ে চিন্তিত। এ কারণে আমাকে সুযোগ দেয়া হচ্ছিল না। মানসিকভাবে এটা আমাকে ভেঙে দিচ্ছিল। এটা আর মেনে নিতে পারছিলাম না। একজন নারী হিসেবে এটা শোনা করুণ ব্যাপার যে, আপনার ওজনের কারণে ক্রিকেট খেলতে পারবেন না।’
‘সবচেয়ে বড় ব্যাপার যেটা, খেলার জন্য নিজেকে শারীরিকভাবে প্রস্তুত করতে পেরেছি। নিয়মিত রানিংয়ের ট্রেনিং করেছি এবং সে পরীক্ষা ভালোভাবে উতরে গেছি। সত্যি বলতে আমি ফিট। আয়ারল্যান্ডেও আমাকে ওজনের কারণে বাদ দেয়া হয়েছিল। যখন তাদের সাথে কথা বলতে গিয়েছি, জানিয়েছে আমার ফিটনেস ব্যাটারি ডাউন। অথচ ফিটনেসের সব পরীক্ষা উতরে গিয়েছিলাম।’
‘তাদের বক্তব্য, আমার ওজন এবং গড়ন একজন খেলোয়াড়ের মতো নয়। এগুলো শুনে খুব কষ্ট পেতাম। এমনকি নিজেকে আয়নায় দেখা বন্ধ করে দিয়েছিলাম, কারণ নিজেকে আর ভালো লাগত না। যখনই ক্যাম্পে ফিরতাম, এই বিষয়গুলো আরও বেশি করে মাথায় আসত।’
জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়ায় বাইরের দেশের লিগগুলোর দিকে মন দিতে চাচ্ছিলেন লি। বোর্ডের সাথে চুক্তিতে আছে, ফিটনেস ঠিক না থাকলে বাইরের কোনো লিগে খেলার অনুমতি দেবে না বোর্ড। এ নিয়ম মানতে আপত্তি ছিল না লি’র। এক সপ্তাহ পরে অন্য ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে বোর্ড সেই নিয়ম ভেঙেছে বলেও অভিযোগ তার।
‘আমাকে অনুমতি না দেয়ার অধিকার তাদের আছে। কিন্তু আমার খারাপ লেগেছে, এক সপ্তাহ পরে আরেকজন ফিটনেস টেস্ট পার না করা সত্ত্বেও তাকে বাইরে যেতে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। কারণ তারা চান না ওই খেলোয়াড় অবসর নিক। যখন এ ব্যাপারে কথা বলতে যাই, তারা আমাকে বলতে শুরু করে আমি আর ওই খেলোয়াড়ের গুরুত্ব একরকম না।’