এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
কলকাতা থেকে: জমকালো আয়োজনে চলছে আইপিএলের ১৭তম আসর। দশ দলের আসরে লিগপর্বের খেলা প্রায় শেষের দিকে। দলগুলো অন্তত দশটি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। শুরুর দিকে খুব একটা ছন্দে না থাকলেও শেষদিকে দারুণ করছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। শেষ চারের পথেই আছে দুবারের শিরোপাজয়ী দলটি। কলকাতার হয়ে আইপিএলে অভিষেক ছিল সাকিব আল হাসানের। ব্যাটে-বলে অনন্য অবদান রেখেছিলেন কেকেআর জার্সিতে। শাহরুখ খানের দলের দুই শিরোপা জেতার পথে টাইগারদের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের অবদান অনস্বীকার্য। ২০২৩ মৌসুমে কেকেআরে খেলার কথা ছিল তার। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অনাপত্তিপত্র না থাকায় নাম তুলে নিয়েছিলেন। এবারের আসরেও নেই সাকিব। দলে না থাকলেও কেকেআর সমর্থকদের হৃদয়ে আছে মহাতারকা বনে যাওয়া সাকিবের অবদান। তারা ভোলেনি সাকিবকে। এখনও টাইগার পোস্টারবয়কে মিস করে কেকেআর সমর্থকদল।
২০১১ সালে কলকাতার হয়ে আইপিএল অভিষেক হয়েছিল সাকিবের। ৭ ম্যাচ খেলে ব্যাট হাতে আলো ছড়ানোর খুব একটা সুযোগ হয়নি। তিন ইনিংসে ব্যাটের সুযোগ পেয়ে করেছিলেন ১৩১.৮১ স্ট্রাইকরেটে ২৯ রান। বল হাতে ৭ ম্যাচে করেন ২৫.৩ ওভার। ৬.৮৬ ইকোনমিতে নেন ১১ উইকেট। সে আসরে শেষ চারে এলিমিনেটর ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কাছে হেরে ছিটকে যায় কেকেআর।
২০১২ আসরে প্রথমবার আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয় পশ্চিমবঙ্গের দলটি। শিরোপার নেপথ্যে সাকিব ছিলেন দুর্দান্ত। ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের মুখোমুখি হয়েছিল কলকাতা। এম এ চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে ফাইনাল মহারণে টসে জিতে আগে ব্যাটে নেমেছিল চেন্নাই। উদ্বোধনী জুটিতে ছিলেন মাইক হাসি ও মুরালি বিজয়। দারুণ ছন্দে ব্যাট করেছিলেন দুজনই। জুটি ভাঙতে কেকেআরকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ১১তম ওভার পর্যন্ত। ৮৭ রানে চেন্নাইয়ের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে সাকিবের দুর্দান্ত ক্যাচে।
রজত ভাটিয়ার স্লোয়ারে উড়িয়ে মারেন মুরালি বিজয়। ডিপ লেগ স্কয়ার অঞ্চলে বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নেন সাকিব। ৩২ বলে ৪২ রানে ফিরে যান মুরালি। ম্যাচে সাকিব একটি উইকেটও নেন। কেকেআর বোলারদের উপর তাণ্ডব চালানো সুরেশ রায়নাকে ফেরান সাকিব ইনিংসের শেষ বলে। ৩৭ বলে ৭৩ রান করেছিলেন রায়না। ৩ ওভারে ২৫ রান খরচ ছিল সেদিন সাকিবের বোলিং ফিগারে। ৩ উইকেটে ১৯০ রানে থামে চেন্নাই।
রানতাড়ায় নেমে কেকেআরের জয়টাও এসেছিল সাকিব ক্রিজে থাকা অবস্থায়। ৭ বলে ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন কলকাতার শিরোপা জয়ের মঞ্চে। তার আগে অবশ্য মানবিন্দর বিসলার ৪৯ বলে ৮৯ রান এবং জ্যাক ক্যালিসের ৪৯ বলে ৬৯ রানের ইনিংসে জয়ের ভিত পায় কলকাতা।
আসরে সাকিব খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন ৮ ম্যাচ। ৩০ ওভার বল করে ৬.৫০ ইকোনমিতে উইকেট নিয়েছিলেন ১২টি। ব্যাটের সুযোগ পেয়েছিলেন ৭ ইনিংসে। সুবিধা করতে পারেননি। ১২২.৯৭ স্ট্রাইক রেটে করেন ৯১ রান। সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেছিলেন ৪২ রানের।
২০১৩ আসরে আইপিএল খেলা হয়নি সাকিবের। ২০১৪তে ফেরেন কলকাতার ডেরায়। সেবারও ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত ছিলেন। কলকাতাও ঘরে তুলেছিল দ্বিতীয় শিরোপা। বেঙ্গালুরুতে ফাইনাল মহারণে সাকিব ৪ ওভারে ২৬ রান খরচায় নেন এক উইকেট। ব্যাটে নেমে ৭ বলে ১২ রান করে রানআউটে ফেরেন।
আসরে ১৩ ম্যাচে ৫০ ওভার বল করে ৬.৬৮ ইকোনমিতে ১১ উইকেট নিয়েছিলেন। ব্যাটে ১১ ইনিংসে ১৪৯.৩৪ স্ট্রাইক রেটে করেন ২২৭ রান। ছিল একটি ফিফটিও (৬০ রান)।
২০১৫-২০১৭ আসরেও কলকাতার হয়ে মাতিয়েছেন সাকিব। ২০১৫ আসরে ৪ ম্যাচে ৪ উইকেট নেন, রান করেন ৩৬। ২০১৬ আসরে ১০ ম্যাচে ৫ উইকেট নেন, রান করেন ১১৪। ২০১৭ আসরে ১ ম্যাচ খেলেছিলেন সাকিব। সেবার উইকেটের দেখা মেলেনি টাইগার অলরাউন্ডারের। ব্যাট হাতে ১ বল মোকাবেলা করে ১ রানে অপরাজিত থাকেন।
২০১৮ আসরে কলকাতা থেকে সানরাইজার্স হায়দরাবাদে পাড়ি দেন সাকিব। সে আসরে ১৭ ম্যাচে ৮ ইকোনমিতে নেন ১৪ উইকেট। ব্যাট হাতে ২১.৭২ গড়ে করেন ২৩৯ রান। ২০১৯ আসরেও হায়দরাবাদের হয়ে মাঠে নামেন সাকিব। সে আসরে ৩ ম্যাচে ২ উইকেটের পাশাপাশি ৯ রান করেন।
২০২০ আসরে আইপিএল খেলা হয়নি সাকিবের। ২০২১ সালে আবারও ফেরেন কলকাতার ডেরায়। আসরে ৮ ম্যাচে ৪ উইকেটের পাশাপাশি ৪৭ রান করেন। ২০২২ আসরে আইপিএল খেলা না হলেও ২০২৩ সালে ৩.৩ কোটিতে ফের কলকাতার ডেরায় ডাক পান সাকিব। তবে বিসিবির অনুমতি না মেলায় খেলা হয়নি।
আইপিএলে মোট ৭১ ম্যাচ খেলেছেন সাকিব। ৭৯৩ রানের পাশাপাশি উইকেট ৬৩টি। দ্যুতি ছড়ানো টাইগার অলরাউন্ডারের কথা স্মরণ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের সমর্থক দল। সেইসঙ্গে তাদের আক্ষেপও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আইপিএল খেলতে বিসিবির অনুমতি দেয়া না দেয়ার বিষয়ে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পথে প্রান্তরে ক্রিকেটপ্রেমীদের সাথে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। পশ্চিমবঙ্গবাসী বলছেন, সাকিবকে মিস করার কথা।
বনগাঁও থেকে লোকাল ট্রেনে গন্তব্য শিয়ালদহ। পেট্রোপোল বর্ডার থেকে অটো (সিএনজি) করে পৌঁছাই বনগাঁও রেলস্টেশনে। মিনিট বিশেক অপেক্ষার পর ট্রেন এসে থামে প্লাটফর্মে। সকাল আটটা ত্রিশ মিনিটে বনগাঁও ছেড়ে যায় ট্রেন। খালিই ছিল বগিগুলো। পরবর্তী স্টেশনগুলো থেকে বাড়তে থাকে ভিড়। ঠাসাঠাসি অবস্থারও তৈরি হয়। ঠাকুরনগর স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠেন দীপক দাস। গন্তব্য দমদম। সেখান থেকে মেট্রোতে করে যাবেন নিউমার্কেট। সাথে আরও কয়েকজন। দীপক এসে বসেন আমাদের পাশেই। মিনিট কয়েক পর সঙ্গীদের সঙ্গে আলাপ জোড়েন চলতি আইপিএল নিয়ে। পরিচয় দিয়ে আগ বাড়িয়ে কথা বলি দীপকদের সঙ্গে। বাংলাদেশি জানার পর ক্রিকেটের আলোচনা বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ। বিষয় একটাই, সাকিব আল হাসান।
দীপকের কণ্ঠে আক্ষেপ সাকিবের আইপিএলে না থাকায়। বলেছেন, ‘সাকিব দারুণ খেলোয়াড়, কিন্তু আইপিএলে নাই। কলকাতার হয়ে খুব ভালো খেলেছে সে। আমরা (কেকেআর) যে দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, সাকিব খুব ভালো করেছে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের হার্টে (হৃদয়ে) স্থান করে নিছে সাকিব।’
২০২৩ আসরে সাকিবের না খেলার নেপথ্যে বিসিবির অনুমতি না পাওয়ার বিষয়টিও ছিল। এবারের আসরে চোট ও রাজনৈতিক ব্যস্ততার কারণে নাম সরিয়ে নেন টাইগার অলরাউন্ডার। তবে সাকিবের আইপিএলে না থাকার জন্য বিসিবিকেই দুষছেন দীপক ও তার সঙ্গীরা। তাদের মতে, বিসিবির কারণেই সাকিব খেলতে পারছেন না!
আইপিএলের চলতি আসরে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মোস্তাফিজুর রহমান চেন্নাইয়ের ক্যাম্প ছেড়ে বিসিবির ডাকে ফিরেছেন ঢাকায়। সেখানেও আপত্তি দীপকের। বলছেন, ‘মোস্তাফিজ চেন্নাইয়ের হয়ে ভালো করছে, দেখেন তারে আবার নিয়ে যাচ্ছে। পুরো সিজন খেলতে দিচ্ছে না। সাকিবকেও ছুটি দেয়নি, অনুমতি দেয়নি বিসিবি। দেখেন তাসকিন (তাসকিন আহমেদ)-শরিফুলও (শরিফুল ইসলাম) এবার দল পেত। কিন্তু বোর্ডের কারণে তারাও নিলামে থাকেনি।’
লিটন দাস ও সৌম্য সরকারের বড় ভক্ত দীপক। তার মতে এই দুই ব্যাটারও আইপিএলে দল পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। গত আসরে কলকাতার জার্সিতে আইপিএল অভিষেক হয়েছিল লিটনের। সুযোগ মেলেনি খুব একটা। যে কয়েক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন, ব্যর্থ হয়েছেন। অন্যদিকে ধারাবাহিকতা না থাকায় সৌম্য সরকারের এখনও সেরকম সুযোগ সামনে আসেনি।
কলকাতা শহরের মার্কুয়েজ স্ট্রিটের পাশেই কলিন স্ট্রিট। এই অঞ্চলে মুসলিমদের সংখ্যা বেশি। স্থানীয়রা বলছেন, এখান মুসলিমদের অধিকাংশই বিহারি বলে খ্যাত। কলিন স্ট্রিটে একটি খাবার দোকানের পাশে দেখা মেলে কেকেআর সমর্থকগোষ্ঠী উল্লেখ করা একটি ব্যানার ঝোলানো। সেখানে বসে আড্ডা দিচ্ছেন তিন-চারজন। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হলে জানা যায়, তারা এখানকার হোটেল ও খাবারের রেস্টুরেন্টে কাজ করেন। কেকেআরকে মনপ্রাণ দিয়ে সমর্থন করেন। সে কারণে ব্যানারও বানিয়েছেন। ইডেন গার্ডেন্সে হওয়া ম্যাচগুলো সরাসরি মাঠে গিয়ে দেখেন।
সেই গ্রুপের একজনের নাম জাওয়াদ। পাশের একটি হোটেলে কাজ করেন। আলাপচারিতায় তিনি সাকিবের দেশের মানুষ বলে সম্বোধন করেন। স্মৃতিচারণ করেন কলকাতার শিরোপা জয়ের পথে সাকিবের অনন্য অবদানের কথা। বলেন, ২০১২ সালে চেন্নাইয়ে খেলা হয়েছিল। আমি ম্যাচের একদিন আগে সেখানে যাই। গ্যালারিতে বসে ফাইনাল দেখেছি। মুরালি বিজয়ের যে ক্যাচটা সাকিব ধরেছিল, আমার সামনেই ছিল। বাঁ-দিকে নাকি ডান দিকে (মূলত বাঁ-দিকে) পাখির মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে ধরেছিল। মুরালি তখন খুব মারছিল, ক্যাচটা না ধরলে রান আরও বেড়ে যেত। আর একটা উইকেটও (সুরেশ রায়না) নিয়েছিল।’
জাওয়াদ মিস করছেন সাকিবকে, তার আশা আগামী মৌসুমে কলকাতার জার্সিতে দেখা যাবে সাকিবকে। বলছেন, ‘সাকিবকে মিস করছি। গতবছর ডাক পেয়েও খেলতে পারেনি। এবার তো নামই দেয়নি। সামনের বছর আবার সাকিব খেলবে, ভালো লাগবে।’
ইডেন গার্ডেন্স ও মোহনবাগান-ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবপাড়ায় ৫২ বছর চা ফেরি করেন শ্রী প্রসাদ দাসগুপ্ত। সন্ধ্যায় ইডেনের আঙিনায় কথা হয় তার সঙ্গে। সাকিবকে ভালো করেই চেনেন। ৭৮ বর্ষী এ চা বিক্রেতা জানালেন, সাকিব থাকলে নাকি বাংলাদেশি প্রচুর দর্শক হয় স্টেডিয়ামে। এবার সাকিব নাই, তাই বাংলাদেশি দর্শকও নাই। জানালেন, সাকিবকে মিস করার কথাও। বললেন, ‘আমি বাঙালি, আমার দল বাঙালি, সাকিবও বাঙালি, সাকিবকে তো মিস করবোই।’
শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে পাহাড়িয়া এক্সপ্রেস ট্রেনের স্লিপার শ্রেণির বগিতে কথা হয় কলকাতার বাসিন্দা শংকর শাহ অভির সঙ্গে। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছেন শ্বশুরবাড়ি কাশিয়াংয়ে। ক্রিকেট-ফুটবল ও অন্যান্য খেলা নিয়া ভালোই ধারণা তার। রাতভর আলাপচারিতার এক ফাঁকে তিনিও জানালেন সাকিবকে মিস করার কথা। এমনকি কলকাতার জার্সিতে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অভিষেক হওয়া মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকেও মনে রেখেছেন তিনি।
সাকিব-মাশরাফী দুই তারকা ক্রিকেটার যে দেশের সংসদ সদস্য সেখবরও রেখেছেন অভি। বললেন, ‘মাশরাফী একবার এসেছিল, ভালো করতে পারেনি। সাকিব কিন্তু দুর্দান্ত। কলকাতা এবং হায়দরাবাদ দুদলেই ভালো করেছিল। এবার খেলতে আসেনি রাজনীতি করে বলে, সে তো এখন এমপি (সংসদ সদস্য), মাশরাফীও এমপি।’
লিটন দাসের কথাও তুলেছেন অভি। বলেন, ‘লিটন ক্ল্যাসিক্যাল শট খেলতে জানে। এখন যদিও ফর্মে নেই, তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটা সম্পদ সে।’
শেয়ার জিপে দার্জেলিং ঘুরতে গিয়ে পরিচয় হয় সুবাস প্রধানের সঙ্গে। যাদবপুর থেকে সেখানে ঘুরতে গেছেন স্ত্রীকে নিয়ে। ক্রিকেট নিয়ে আলোচনায় জানালেন সাকিবের বিষয়ে খোঁজ খবর রাখার কথাও। বললেন, ‘সাকিব তো ব্র্যান্ড, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তাকে নিয়েও ট্রল করে। ওর মতো একজন ক্রিকেটার ভারতবর্ষের জন্য গর্ব। আমাদের কলকাতার হয়ে আইপিএল খেলেছে। কলকাতার মানুষ সাকিবকে অনেক ভালোবাসে।’
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা। শহরের নামেই নামকরণ করা হয়েছে এই রাজ্যের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের। বলিউড কিংবদন্তি শাহরুখ খানের দলটির সমর্থন পুরো পশ্চিমবঙ্গ জুড়েই। সাকিব আল হাসান আইপিএল মাতিয়েছেন কলকাতার জার্সিতে। পশ্চিমবঙ্গবাসীর হৃদয়ে চির অবস্থান করে নিয়েছেন লাল-সবুজদের মহাতারকা।