
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল আশুলিয়া থানা পুলিশের বাধার মুখে পড়েছে। তবে বাধা দেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন আশুলিয়া থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সকাল ১১টায় এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সাথে কিছুক্ষণ বাকবিতন্ডা শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় মানববন্ধন করেন তারা। এসময়, সেখানে জাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা হরতাল সমর্থনে মিছিল করতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ। পরে সেখানে আমরা অবস্থান ও মানববন্ধন করি।
মানববন্ধনে শ্রমিক ফ্রন্ট সাভার-আশুলিয়ার সাধারণ সম্পাদক আহমেদ জীবন বলেন, ‘আমরা গতকাল দেখলাম একটি অগণতান্ত্রিক সরকারের নির্বাচন কমিশনার কিভাবে অবৈধভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। এই তফসিল সম্পূর্ণ অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক। গত ২০১৪ ও ২০১৮ এর নির্বাচনের মতো আবারো একটা প্রহসনের নির্বাচন করাই এই তফসিলের উদ্দেশ্য। আমরা এই নির্বাচন চাই না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এই সরকারের আধীনে কখনোই নির্বাচন সুষ্ঠ হয়নি এবং হবেও না। আমরা চাই মানুষের ভোট দেওয়ার গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য মানুষের নাগালে থাকুক।’

বিশ্ববিদ্যালয় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সংগঠক সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘গতকাল নির্বাচন কমিশন অবৈধ একতরফা তফসিল ঘোষণা করেছে যা এদেশের সাধারণ মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। সরকার গায়ের জোরে নির্বাচন করতে চাইছে। দেশে গনতান্ত্রিক মূল্যবোধ উঠিয়ে স্বৈরাতন্ত্র কায়েম করেছে এ সরকার। আজ আমাদের মিছিলের বাধা দেওয়াই প্রমাণ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সেদিন বেশি দূরে নয় এদেশের জনগণ রাস্তায় নেমে পড়বে এবং তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত না করা পর্যন্ত বাড়ি ফিরবে না।’
জাবি ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবে এই দেশে কখনোই দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সালের নির্বাচন কোনোটাই সুষ্ঠু হয়নি। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে এবারও নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এই দেশে কখনোই স্বৈরাচার শাসক টিকতে পারেনি। স্বৈরাচার আইয়ুব খান কিংবা এরশাদ কেউ টিকতে পারেনি। এই স্বৈরাচার সরকারও টিকতে পারবে না।’
৪৩ সেকেন্ডে ৫৭টি ভোট দেওয়ার ভাইরাল হওয়া ভিডিওর কথা উল্লেখ করে আলিফ মাহমুদ আরও বলেন, যে সরকারের আমলে সামান্য স্থানীয় পর্যায়ের একটা নির্বাচন’ই সুষ্ঠ হয় না। সেখানে জাতীয় নির্বাচন কখনই গণতান্ত্রিক উপায়ে সম্ভব না। তাই এই প্রহসনের তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবদায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়া হোক।
বিজ্ঞাপন
এদিকে মিছিল বাধা দেওয়ার কথা অস্বীকার করে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম কামরুজ্জামান বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের মিছিলে বাধা দেইনি। পরে তারা সেখানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
বিজ্ঞাপন