এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদ বলেছে, পারমিট ছাড়া হজে যাওয়া জায়েজ নয়, আর যে পারমিট লাভে অক্ষম সে হজ পালনে অপারগ বলে গণ্য হবে। অনুমতি বের করার বাধ্যবাধকতা এবং পবিত্র স্থানসমূহে গমনকারীদের জন্য তা বহনের অপরিহার্যতা ইসলামী শরীয়তের কাঙ্ক্ষিত স্বার্থের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ওলামা পরিষদ বলেন, শরীয়ত কল্যাণের উন্নতি ও বৃদ্ধি সাধনের জন্য এবং অকল্যাণ রোধ ও হ্রাস করার জন্য এসেছে। পরিষদ স্পষ্ট করেছে যে পারমিট গ্রহণ ছাড়া হজে যাওয়া জায়েজ নয় এবং যে এ কাজ করবে সে গুনাগার হবে।
বুধবার ১ মে সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদ কর্তৃক জারি করা এক বিবৃতিতে জানানো হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয় এবং মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীর তত্ত্বাবধান বিষয়ক সাধারণ কমিশনের প্রতিনিধিগণ কর্তৃক উপস্থাপিত হজ পারমিটের বাধ্যবাধকতা না থাকার চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি সমূহের উপর ভিত্তি করে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, হজ পারমিট লাভের বাধ্যবাধকতা বান্দাদের ইবাদত-বন্দেগী ও আচরণ-অনুষ্ঠান সম্পাদন সহজ করা ও তাদের অসুবিধা দূর করার জন্য ইসলামী শরীয়ত যে বিধান দিয়েছে তার ভিত্তিতেই গ্রহণ করা হয়েছে।
হজ পারমিট গ্রহণের বাধ্যবাধকতা এজন্যই গ্রহণ করা হয়েছে, যেন হজ যাত্রীদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে এ বিশাল জমায়েত শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে তাদের করণীয় অনুষ্ঠান ও কাজগুলো আদায় করতে সক্ষম হয়। আর এটি শরীয়তের দলিল-প্রমাণ ও বিধি-বিধান দ্বারা স্বীকৃত একটি বৈধ এবং শরীয়ত সম্মত উদ্দেশ্য। হজ পারমিট গ্রহণের বাধ্যবাধকতা এবং পবিত্র স্থানসমূহে গমন কারীদের জন্য তা বহনের অপরিহার্যতা ইসলামী শরীয়তের প্রত্যাশিত কল্যাণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
হজ আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলো অনুমোদিত সংখ্যা অনুসারেই হজ মৌসুমের জন্য এর বিভিন্ন দিক, সুরক্ষা, স্বাস্থ্য, আবাসন, খাদ্য সরবরাহ ও অন্যান্য পরিষেবাগুলোর পরিকল্পনা তৈরি করে থাকে। আর অনুমোদিত এ সংখ্যার সাথে হজযাত্রীদের সংখ্যা যত বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে, ততবেশি তা হজ আদায়কারীদের জন্য প্রদত্ত পরিষেবাগুলোর গুণমান বৃদ্ধি করবে এবং এটি রাস্তায় বিছানাপত্র বিছিয়ে অবস্থানের মত চলাচলে ও গ্রুপ ভিত্তিক কর্ম প্রক্রিয়া পরিচালনায় বাধা সৃষ্টিকারী বড় ক্ষয়ক্ষতি ও অনিষ্টতা রোধ করবে।
অনুরূপভাবে তা প্রচণ্ড ভিড় ও প্রাণহানিকর ধাক্কাধাক্কির ঝুঁকি হ্রাস করবে। সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদ আরও বলেছে যে, হজ পারমিট লাভের বাধ্যবাধকতা হলো ভালো কাজে শাসকের আনুগত্যের অংশ। হজ পারমিটের বাধ্যবাধকতা না থাকলে বড় বড় ক্ষতি ও নানাবিধ ঝুঁকির বিষয়ে পরিষদ অবহিত হয়েছে, যা হজ আদায়কারীদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টিতে প্রভাব ফেলবে।
বিবৃতিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, অনুমতিবিহীন হজের ক্ষতি শুধুমাত্র ঐ হাজির ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা নিয়মতান্ত্রিকভাবে হজ আদায়কারী অন্যান্য হজ যাত্রীদের ক্ষেত্রেও সম্প্রসারিত হয়। আর শরীয়ত স্বীকৃত বিধান হলো, ব্যাপক ভিত্তিক ক্ষতি ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ক্ষতির চেয়েও বড় পাপের কাজ।
এর উপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদ নিশ্চিত করেছে যে, পারমিট গ্রহণ ছাড়া হজে যাওয়া জায়েজ নয় এবং যে তা করবে সে গুনাগার হবে; কারণ এটি জনসাধারণের কল্যাণে গৃহীত সরকারি আদেশের লঙ্ঘন।
সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদ ঐ বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করেছে যে, আমরা সকল মুসলিমকে আল্লাহ তাআলার তাকওয়া অবলম্বনের উপদেশ দিচ্ছি এবং যারা বায়তুল্লাহর হজ আদায় করতে ইচ্ছুক তাদেরকে এ মহান এবাদতটি আদায়ের ক্ষেত্রে আল্লাহকে ভয় করার, তাদের হজকে ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে হেফাজতে রাখার এবং নিরাপদে, স্বাচ্ছন্দে ও প্রশান্তিতে এ আয়োজনটি সম্পাদনের উদ্দেশ্যে জারি করা বিধি-বিধান ও নির্দেশাবলী মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছি।