ইসরায়েলে গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় নিহতদের মৃতদেহ নিয়ে কাজ করা ইসরায়েলিরা ব্রিটিশ এমপিদের কাছে প্রমাণ তুলে ধরে জানিয়েছে, নারীরা ভয়াবহ যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে অনেক নারীর গোপনাঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, একজন ইসরায়েলি পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, তাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে ধর্ষণ এবং অন্যান্য যৌন সহিংসতাগুলোর। এবং তা যথেষ্ট পরিমাণে হয়েছিল।
ইসরায়েল পুলিশের চিফ সুপারিনটেনডেন্ট মিরিট বেন মেয়র বলেন, নির্যাতিতদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। আমরা মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত করছি।
যুক্তরাজ্যের সংসদে বুধবার ৩১ জানুয়ারি এক বৈঠকে অংশ নেওয়া অনেক এমপি এবং হাউস অফ লর্ডসের সদস্যরা ইসরায়েলিদের সাক্ষ্য শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন।
সেখানে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন সদস্য শারি মেন্ডেস জানান, মহিলাদের মৃতদেহ শনাক্ত করতে সেনা ঘাঁটিতে নিয়ে আসা হয়েছিল। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন পোশাক ছাড়া। অনেক নারীকেই তাদের গোপন স্থানে গুলি করা হয়েছে। এটি একদমই অবাঞ্ছিত। মেন্ডেস জানান, নিহতদের অনেককেই শিরচ্ছেদ করা হয়েছে বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে দেওয়া হয়েছে।
একটি ইসরায়েলি ধর্মীয় সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক সিমচা গ্রেনিম্যান জাকার বলেন, হামাসের হামলার পর তিনি অনেক লাশ উদ্ধার করেছেন। একটি বাড়িতে একজন মহিলার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার কোমরের নিচে কোন কাপড় ছিল না। তার মাথার পিছনে গুলি করা হয়েছিল এবং তার হাতে একটি গ্রেনেড ছিল। আরেকজন নারীর ব্যক্তিগত স্থানসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নখের দাগ ছিল। এটি এমন কিছু যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ করবো যেন তারা বিষয়টিকে দূরে ঠেলে না দিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
যুক্তরাজ্যের নারী বিষয়ক মন্ত্রী কেমি ব্যাডেনোচ বলেছেন, সমস্ত প্রতিবেদনের সম্পূর্ণ তদন্ত করতে হবে। যৌন সহিংসতার অবশ্যই নিন্দা জানাতে হবে। যদিও হামাস তাদের বন্দুকধারীরা হামলার সময় নারীদের যৌন নিপীড়নের কথা অস্বীকার করেছে।
গত ৭ অক্টোবর, গাজা থেকে ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীরা দক্ষিণ ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে হামলা চালায়। হামলায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ জন নিহত হন যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। এছাড়াও ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় একটি সামরিক অভিযান শুরু করে। হামলায় প্রায় ২৭ হাজার ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হন যাদের বেশিরভাগ নারী এবং শিশু।