গ্রিক পুরাণ মতে, ফিনিক্স পাখি ধ্বংসের ছাই থেকে জেগে ওঠা এক পাখি। কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর শার্দূল ঠাকুর ও রিংকু সিং যেভাবে দলকে টেনে তুললেন, তাকে ফিনিক্স পাখির সঙ্গে তুলনা করাই যায়। ষষ্ঠ উইকেটে মাত্র ৪৫ বলেই এ দুই ব্যাটার ১০৩ রানের জুটি গড়ে ম্যাচের চিত্রই পাল্টে দেন। এরপর বোলারদের দাপটে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোরের বিপক্ষে ৮১ রানের বিশাল জয় নিয়ে কলকাতা জয়ের উৎসবে মেতে ওঠে।
বৃহস্পতিবার রাতে ইডেন গার্ডেনে হওয়া আইপিএলের ম্যাচে টসে হেরে আগে ব্যাট করা কেকেআর ৭ উইকেটে ২০৪ রানের বড় স্কোর পায়। জবাবে বেঙ্গালোর ১৭.৪ ওভারে ১২৩ রানে অলআউট হয়।
ঘরের মাঠে আগে ব্যাটিংয়ে নেনে ৪৭ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে কলকাতা চাপেই পড়েছিল। ওপেনার ভেঙ্কাটেশ আয়ার ৩ রান করে ডেভিড উইলির বলে হন বোল্ড। এরপর মানদ্বীপ সিংকেও বোল্ড করে হ্যাটট্রিকের আশা জাগিয়েছিলেন ইংলিশ বোলার। অধিনায়ক নিতিশ রানার ব্যাট থেকে আসে কেবল এক রান। মিচেল ব্রেসওয়েলের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
একপ্রান্ত আগলে রাখা আরেক ওপেনার রহমতউল্লাহ গুরবাজ পান ফিফটি। রিংকুর সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে গড়েন ৪২ রানের জুটি। কর্ণ শর্মার বলে শর্ট থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিয়ে আসার আগে গুরবাজ ৪৪ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৫৭ রান।
গুরবাজের বিদায়ের ঠিক পরের বলেই বিরাট কোহলির তালুবন্দি হন রানের খাতা না খোলা আন্দ্রে রাসেল। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান কর্ণ। ৮৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কেকেআর বিপদে পড়ে।
এরপরই শার্দূল ঠাকুর ও রিংকু সিংয়ের ব্যাট যেন হয়ে ওঠে ধারালো তলোয়ার। রিংকু ৩৩ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৬ রান করে হার্শাল প্যাটেলের বলে দীনেশ কার্তিকের গ্লাভসবন্দি হলে খেলার মোড় ঘোরানো ১০৩ রানের জুটি ভাঙে। খানিক পর মোহাম্মদ সিরাজের বলে সাজঘরে ফেরার আগে ২৯ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৮ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন শার্দূল। উমেশ যাদব ২ বলে এক ছক্কায় ৬ রানের অপরাজিত থাকেন।
বেঙ্গালোরের পক্ষে উইলি ও কর্ণ দুটি উইকেট পান। একটি করে উইকেট নেন সিরাজ, ব্রেসওয়েল, হার্শাল।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাল্টা জবাবটা বেঙ্গালোর শুরুতে ভালোই দিয়েছিল। ওপেনিং জুটিতে দ্রুত উঠে যায় ৪৪ রান। কোহলি ১৮ বলে ৩ চারে ২১ রান করে সুনীল নারিনের বলে হন বোল্ড। খানিক পর ১২ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ২৩ রান করা ফাফ ডু প্লেসিসও বোল্ড হয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরেন। এরপর শুরু হয় ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল। চোখের পলকে বিনা উইকেটে ৪৪ থেকে স্কোর হয়ে যায় ৫ উইকেটে ৬১ রান।
তিনে নামা ব্রেসওয়েল ১৯ ও নয় নম্বরে ব্যাট করতে আসা উইলি ২০ রানে অপরাজিত থাকেন। শেষ ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে আসা আকাশদ্বীপ ৮ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ১৭ রানের ইনিংস খেলায় বেঙ্গালোর একশ রানের গণ্ডি পার হয়।
কলকাতার পক্ষে বরুণ চক্রবর্তী মাত্র ১৫ রান দিয়েই পান ৪ উইকেট। ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড় হিসেবে নামা সুয়াশ শর্মা ৩ উইকেট পকেটে পুরেন। নারিন দুটি ও শার্দূল নেন একটি উইকেট।