আগামী নির্বাচন হবে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন: লবিস্ট নিয়োগ করে বিবৃতি আনা দেশদ্রোহিতার শামিল।
রোববার ২৫ জুন দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধ বিষয়ে গভীরতাধর্মী সেরা সংবাদ প্রতিবেদনের জন্য ১৩ জন প্রতিবেদকদের পুরস্কৃত করার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের কমিউনিকেশনস ম্যানেজার সারোয়ার ই আলম, সিনিয়র সাংবাদিক জাহিদুর ইসলামসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা এবং জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সমষ্টির পরিচালক মীর মাসরুর জামান।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা ও লবিস্ট নিয়োগ করে বিবৃতি আনা দেশবিরোধী অপতৎপরতা। যারাই এই বিবৃতি নিয়ে কাজ করছে, তারা দেশদ্রোহিতার কাজ করছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। এটি নিয়েও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সে কারণে গত কয়েক দিনে কিছু পেশাদার ‘বিবৃতি সংগঠন’ বিবৃতি দিয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পরাজিতদের বিচার বন্ধ করার জন্যও এসব সংগঠন বিবৃতি দিয়েছিল। অথচ, ১৪-১৫ সালে যখন মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব চলছিল, তখন তারা বিবৃতি দেয়নি। বিষয়টির সঙ্গে একটি গভীর ষড়যন্ত্র যুক্ত।
তিনি বলেন, একদিকে শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের কাজ নিয়ে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে একটি গ্রুপ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় গণমাধ্যম উন্নয়ন সংগঠন সমষ্টি এ পুরস্কারের আয়োজন করে। মুদ্রণ সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইন-এ তিনটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়া জেলা পর্যায়ের একজন সাংবাদিক পুরস্কার পেয়েছেন। অতিথিরা বিজয়ীদের ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র প্রদান করেন।
সেসময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর মতো ভয়াবহ সমস্যা স্থায়িত্বশীল সমাধানের লক্ষ্যে গণমাধ্যমসহ সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করতে সরকার আন্তরিক। সাংবাদিকদের জন্য এ ধরনের জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পুরস্কার প্রদান খুবই কার্যকর একটি উদ্যোগ। এতে গভীরভাধর্মী প্রতিবেদন তৈরিতে সাংবাদিকরা আরো অনুপ্রাণিত হবেন এবং সরকারও কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারবে।
অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, গণমাধ্যমগুলো তাদের কর্মকান্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন পর্যায়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয়গুলো তুলে ধরতে পারে। প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়াগুলো পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধ বিষয়ক গভীরতাধর্মী সংবাদ নিয়মিতভাবে প্রকাশ করতে পারে। আবার সম্প্রচার মাধ্যমগুলো এ সংক্রান্ত ডকুমেন্টারি ও টিভিসি প্রচার করতে পারে। এতে একদিকে যেমন ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতা বাড়বে, তেমনি সরকারের বিভিন্ন নীতি-নির্ধারনী মহলের নজরে আসবে।
পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন আফরিন আপ্পি ( দ্য বিজনেস পোস্ট), জিনিয়া কবির সূচনা (চ্যানেল ২৪), পার্থ শঙ্কর সাহা (প্রথম আলো), মাসুদ রানা (জাগোনিউজ), সোহাগী আকতার (সময় ট্রিবিউন), ঝর্ণা মনি (ভোরের কাগজ), কাউসার সোহেলী (মাছরাঙা টিভি), নীলিমা জাহান (ডেইলি স্টার), স্বপ্না চক্রবর্তী (জনকণ্ঠ), জাহিদুর রহমান (সমকাল), সজীব আহমেদ (কালের কন্ঠ), আসিফ ইসলাম শাওন (দ্য বিজনেস পোস্ট) এবং আরেফিন তানজীব (চ্যানেল আই অনলাইন)।