বিএনপির বহিস্কৃত নেতা সাবেক সংসদ সদস্য কিশোরগঞ্জ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জন বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ বা আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী দুজনের কেউ নির্বাচনে জিতলে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। তারা কেউ জিতলে আমি ঢাকা গিয়ে সোজা জাতিসংঘের সামনে বলবো, বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, এর প্রমাণ দেখুন, আমি।’
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে পাকুন্দিয়া উপজেলার হোসেন্দীতে খেলার মাঠে আয়োজিত এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যে আখতারুজ্জামান আরও বলেন, ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের অনেক বড় বড় নেতারাও আমাদেরকে কথা দিয়েছেন, তারা আমাদের জন্য নির্বাচনে চেষ্টা করবেন। কারণ তারা পড়ছে গ্যাঁড়াকলে। গ্যাঁড়াকলটা কী, যদি নৌকা জিতে, তাইলেও নির্বাচন অবাধ হবে না, সুষ্ঠু হবে না। কারণ নৌকার ভোট কই? নৌকা যদি জোর করে ভোট দিতে যায়, জনগণ তো ঘর থেকে বের হবে না। আমি যতগুলো মানুষ এখানে এনেছি, তারা কি এতগুলো মানুষ এখানে আনতে পারে? হোসেন্দী ইউনিয়নে যদি জনগণ ভোট দিতে পারে, তারা নৌকায় ভোট দিবে না আর যাই করুক। কাজেই উনারা বলছে, আমরা আপনার সাথে আছি।
আখতারুজ্জামান রঞ্জন উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, আর যদি ঈগল ভাইও জিতে, তিনিও তো আপনাদের আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাইলে তো আওয়ামী লীগই জিতলো। তাহলে নির্বাচনটা কেমনে সুষ্ঠু হলো? অতএব বুঝতেই পারতেছেন কী হবে এখানে। এখন আমরা চাই আপনারা ভোট দিয়ে দেখেয়ে দিন বিএনপির ভোটটি কোন খানে আছে। এই দেশের সংখ্যা ঘনিষ্ঠ কারা। এই দেশে কাদের শাসন করার অধিকার আছে। আপনাদের গোস্সার ভোটটা এবার আমার ট্রাক মার্কায় দিয়ে, ট্রাকটা ভরে দেন, আমি দেখিয়ে দেই পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী বিএনপির ছাড়া কেউ নাই। এটাই আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, আমার আবেদন।
তিনি আরও বলেন, আর যদি ঘরে বসে থাকেন তাইলে কিন্তু হেরা হেরা মামুরাওই। আর হেরা কইবো বাংলাদেশেতো কোন জনগণই নাই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। দেখেন যেটা পাস করছে এটাও আমরা, যেটা ফেল করছে ওইটাও আমরা। দুইটা মিলাইয়ে-তো আমরার বিএনপি বলে কোন জিনিসেইতো বাংলাদেশে নাই। আপনি কেমনে প্রমাণ করবেন। আর যদি এখানে দুইটারে হারাইয়া পাশ করতে পারি, তোরা দুইটা মিললে-তো বিএনপি’র সমান হস নাই। দেখ প্রমাণ। এইডা লইয়া আমরা কইয়াম। অর্থাৎ আমি এমনি গেলেও কাটবাম হেমনে গেলেও কাটবাম। ফেইল করাইলেও কাটবান পাশ করাইলেও কাটবাম। কাজেই আপনারা হুঁশিয়ার।
কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুল কাহহার আকন্দ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) এর টেলিভিশন প্রতীকের প্রার্থী বিল্লাল হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আম প্রতীকের প্রার্থী আলেয়া, গণফ্রন্টের মাছ প্রতীকের প্রার্থী মীর আবু তৈয়ব মো. রেজাউল করিম। এছাড়াও দুই স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন ও ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সাবেক এমপি সোহরাব উদ্দিনসহ মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তাদের মধ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুল কাহহার আকন্দ এবং ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সোহরাব উদ্দিন ও ট্রাক প্রতীকের বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আখতারুজ্জামান রঞ্জনের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস মিলছে।