
পশ্চিমবঙ্গ সরকার দার্জিলিং পাহাড়ে তিনটি জলবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যার ফলে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তিস্তার পানি বণ্টনের চুক্তির জন্য অপেক্ষায় থাকা বাংলাদেশ আরো বেশি ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে।
সোমবার ‘দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া’ অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, পরিকল্পিত তিনটি দার্জিলিং প্রকল্পের মধ্যে দু’টি, সেচের জন্য তিস্তায় পানির পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে ডিসেম্বর-এপ্রিলের সময়ে যখন বাংলাদেশে সেচের পানির চাহিদা বেড়ে যায়।
একটি সূত্রের বরাতে টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার তিস্তা লো ড্যাম প্রজেক্ট (টিএলডিপি) ১ এবং ২-এর উপর একটি প্রকল্প প্রতিবেদন (ডিপিআর) তৈরির জন্য অনুমোদন দিয়েছে। যার উৎপাদনের সম্মিলিত ক্ষমতা থাকবে ৭১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। বালাসন এবং রংভাং নদীর উপর বালাসন হাইড্রো ইলেকট্রিক প্রজেক্ট (৩৮ মেগাওয়াট) এর ডিপিআরের জন্য অনুরূপ অনুমোদন দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে প্রকাশ, ‘উল্লেখিত প্রকল্প ছাড়াও ডিপিআরকে ১০টি ছোট জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে এই সব প্রকল্প বাস্তবসম্মত কিনা তা দেখতে হবে।’
তবে টিএলডিপি-১ এবং ২ এর উপর বেশ আলোচনা হচ্ছে। কারণ, প্রকল্পটি বড় রঙ্গিট নদী হয়ে তিস্তার সাথে মিলিত হচ্ছে, যার পানি বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়। তিস্তার পানিতে বাংলাদেশেরও অধিকার রয়েছে। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সেপ্টেম্বর ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল কিন্তু পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিরোধিতার কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়।
মমতা যুক্তি দিয়েছিলেন, তিস্তায় উভয় দেশের সেচের চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত পানির অভাব রয়েছে। গত কয়েক বছরে, তিস্তা চুক্তি শেষ করতে দেরি হওয়ায় ঢাকা বারবার দিল্লিকে তার অস্বস্তি জানিয়েছিল। কিন্তু দিল্লী ও কলকাতার সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের অধীনে দু’টি খাল নির্মাণের বেঙ্গল সেচ বিভাগের পরিকল্পনা প্রকাশ্যে আসার পর ঢাকার শঙ্কা আরো গভীর হয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি সংস্থার একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গেলে বিষয়টি দু’দেশের মধ্যে আলোচনায় আসতে পারে।