এমপিওভুক্ত সহকারী শিক্ষকদের যারা প্রথম টাইম স্কেল প্রাপ্তি থেকে (১০+৬) পরবর্তী ছয় বছর একই স্কেলে চাকরি করেছেন, নীতিমালা অনুযায়ী তারা উচ্চতর স্কেল পাচ্ছেন। অর্থাৎ তারা জাতীয় বেতন স্কেলের ৯ম গ্রেড থেকে ৮ম গ্রেডে উন্নীত হয়েছেন। বেসরকারি এমপিও শিক্ষকদের জন্য এটা নিঃসন্দেহে একটা বিরাট অর্জন।
সহকারী শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির এই সুযোগ অবশ্যই ঐতিহাসিক এবং কাঙ্ক্ষিত। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হবে। পাশাপাশি ৮ম গ্রেডে উন্নীত উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সকল শিক্ষককে অভিনন্দন জানাই।
এমনিতে বেসরকারি এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের বৈষম্যের শেষ নেই। দেশের প্রায় ৯৮ ভাগ মাধ্যমিক শিক্ষা বেসরকারি নির্ভর হওয়া সত্ত্বেও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারীদের চেয়ে যোজন যোজন দূরে। একটা সময় বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কথা হতো, তাদের ‘যোগ্যতা’ নিয়ে কানাঘুষা হতো। বর্তমানে সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এনটিআরসির তত্ত্বাবধানে একাধিক প্রক্রিয়ায় যাচাই বাছাই করে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ এ সুপারিশ মানতে বাধ্য। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের এত দিনের আলোচনা-সমালোচনা এখন অনেকটাই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে। বর্তমান প্রক্রিয়ায় অধিকতর যোগ্যরাই শিক্ষক হিশেবে নিয়োগ পাচ্ছে।
কথা হচ্ছিল, টাইমস্কেল প্রাপ্ত ৯ম গ্রেডভুক্ত শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল পেয়ে ৮ম গ্রেডে উন্নীত হওয়া প্রসঙ্গে। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকরা তাদের পদায়নের শুরু থেকে ৮ম গ্রেডে বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন এবং প্রধান শিক্ষকরা ৭ম গ্রেডে পান।
সমস্যা হলো, সহকারী শিক্ষকরা একটি টাইম স্কেল প্রাপ্তির পর দ্বিতীয় উচ্চতর স্কেল পাওয়ায় তারা এখন মর্যাদায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের সমতুল্য। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে একজন সহকারী প্রধান শিক্ষকের সাথে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকের কিছু দায়িত্বের বেড়াজাল ব্যতিত মূলত আর কোন পার্থক্য নেই। অথচ, কোন এক অজানা কারণে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। এ বিষয়টি শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নজরে আনলে তারাও লা-জবাব। অর্থাৎ এ বিষয়ে তাদেরও ‘জানাশুনা’ নেই।
প্রশ্ন হলো, একজন সহকারী শিক্ষক কিংবা কর্মচারী শর্তপূরণ করে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্য হতে পারলে প্রতিষ্ঠানের অপরাপর দুই গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী (প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক) তা থেকে বঞ্চিত হওয়ার কী কারণ থাকতে পারে, তার নিশ্চয়ই ব্যাখ্যা রয়েছে।
সেই ব্যখ্যাটাই না হয় আপাদত জানি।
.……………
হাসিম উদ্দিন আহমেদ
প্রধানশিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত)
সাখুয়া আদর্শ বিদ্যানিকেতন
ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ।