রক্ত জমাট বাঁধা, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের মত রোগের জন্য দায়ী কৃত্রিম চিনি, এমনটাই জানাচ্ছে গবেষণা।
সম্প্রতি এমন গবেষণা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আনন্দ বাজার পত্রিকা।
একটা সময়ে সাধারণ চিনির বিকল্প হিসাবে কৃত্রিম চিনি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে। পরবর্তীকালে শরীরে ক্যালোরির মাত্রা কমাতে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষরাও খাবারে এই চিনি ব্যবহার করতে শুরু করেন। তবে এই চিনির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে গবেষণা বলছে অন্যকিছু।
‘নেচার মেডিসিন’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, কৃত্রিম চিনিতে থাকা এরিথ্রিটল নামক একটি যৌগ রক্ত জমাট বাঁধা, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।

গবেষণায় আরও বলা হয়, বিগত ৩ বছরে হৃদরোগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত যতগুলি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, তার সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে এরিথ্রিটল এর যোগসূত্র রয়েছে। যদিও এই যৌগটিকে নিশ্চিত ভাবে দায়ী করার আগে বিস্তর গবেষণা প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন গবেষকরা।
এরিথ্রিটল আসলে কী?
সর্বিটল বা জ়াইলিটল এর মতো এরিথ্রিটল এক ধরণের অ্যালকোহল, যা প্রাকৃতিক ভাবে ফল এবং সবজিতে থাকে। ২০১১ সালে ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন (এনসিবিআই)এর এক সমীক্ষায় দেখা যায়, স্বাদে চিনির মতো হলেও চিনির মতো ক্যালোরি নেই এই যৌগটিতে। পুষ্টিবিদদের মতে, অতিরিক্ত ক্যালোরি ছাড়াই চিনির মতো মিষ্টত্ব দিতে পারে এই যৌগটি।
এরিথ্রিটল তবে ক্ষতিকর কেন?
প্রাকৃতিকভাবে খাদ্যতে থাকা এরিথ্রিটল স্বাস্থ্যের জন্য ভাল হলেও এই এরিথ্রিটলই যখন কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হয় তখন এর ফল হয় উল্টো। কৃত্রিম ভাবে তৈরি এই যৌগটি শরীরের বিপাকহারের গতি কমিয়ে দিতে পারে, এটি রক্তের বদলে ইউরিনের সাথে মিশতে থাকে।
কৃত্রিম চিনি তাহলে কখন খাওয়া যেতে পারে?
চিকিৎসকদের মতে, বিভিন্ন গবেষণায় হৃদ্রোগের সঙ্গে এই যৌগটির যোগসূত্র থাকলেও কৃত্রিম চিনির দীর্ঘমেয়াদি ফল কেমন হতে পারে সে বিষয়ে এখনও নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যায়নি। তাই শারীরিক অন্য কোনও জটিলতা না থাকলে, ওজন ঝরাতে অল্প কিছু দিনের জন্য কৃত্রিম চিনি খাওয়া যেতে পারে।