চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক দিনভর অবরুদ্ধ

কুমিল্লার দেবিদ্বারে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোক্তল হোসেনকে দিনভর অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এসময় উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা প্রধান শিক্ষক ও তার জামাতার ব্যবহৃত দু’টি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়াও উত্তেজিত জনতা একটি সিএনজি ও বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষের কয়েকটি দরজা ভাঙচুর চালায়।

বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উপজেলার মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ করেন তারা।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। বিক্ষোভ চলাকালে রাত ৮টার দিকে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। এসময় পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধ। এঘটনায় আহত হয়েছেন দুই পুলিশ সদস্য। আহতদের উদ্ধার করে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত পুলিশ সদস্যরা হচ্ছেন বাঙ্গরাবাজার থানার কনস্টেল জহিরুল ইসলাম ও দেবিদ্বার থানার কনস্টেবল সারোয়ার হোসেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মুক্তল হোসেনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েকজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করেন, এর আগেও মোক্তল হোসেন অপর একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক থাকাকালে ছাত্রীদের সাথে এমন অপকর্ম করেছেন। পরে তাকে ওই স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এবার দেবিদ্বারে এসে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সে এই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পায়।

এদিকে রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোশারফ হোসেন, দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডেইজি চক্রবর্তী, দেবিদ্বার-বিপাড়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো. আমিরুল্লা, দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধরসহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। এরপর তারা আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান।

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। সংঘর্ষে কয়জন আহত হয়েছে আমরা যাচাই করে দেখছি। আর যেনো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মোক্তল হোসেন বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে আছেন। ভুক্তভোগীর বাবা থানায় মামলা দিতে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।